বাবা নামটি উচ্চারণেই যেন এক নিরাপদ আশ্রয়ের অনুভব। তিনি নীরবে সারাটি জীবন কাটিয়ে দেন আমাদের স্বপ্নগুলো বাস্তব করার জন্য। বাবা মানেই বটবৃক্ষ, যে নিজের রোদ মেনে নিয়ে আমাদের ছায়া দেন।
এই দিনে আমরা স্মরণ করি সেই মানুষটিকে—যিনি চোখের পানি লুকিয়ে হাসেন, যিনি আমাদের জীবনের প্রথম নায়ক, যিনি ঘামে ভেজা ভালোবাসায় গড়ে দেন আমাদের ভবিষ্যৎ।
বাবা কেবল পরিবারের কর্তা নন, তিনি হলেন প্রথম শিক্ষক, শেষ আশ্রয়। তার নিঃস্বার্থ দোয়া আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে শক্তি দেয়। সমাজে বাবা যেন সেই নীরব ভালোবাসার প্রতীক, যিনি চিৎকার না করেও আমাদের ভরসা ও সাহস হয়ে থাকেন। আজকের দিনে আমাদের প্রত্যয় হোক—শুধু আজ নয়, প্রতিদিন বাবার প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা প্রকাশ করব। কারণ, বাবা মানেই নির্ভরতা, নিশ্চয়তা ও নিঃস্বার্থতা।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে সনোরা স্মার্ট ডড নামে এক নারীর। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনও বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় ডড মা দিবস পালনের কথা শোনেন। মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে তিনি ভীষণ অবাক হন।
তারপর তিনি বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। মা ছিল না তার। মায়ের মৃত্যুর পর শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।
তারপর অনেক চেষ্টা করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন করতে পারেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।
বাবা আমাদের জীবনের ছায়া, আশ্রয় আর শক্তির প্রতীক। তাই বছরে একদিন নয়, প্রতিটি দিনই হোক বাবার প্রতি ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। শুভ বাবা দিবস।