ঢাকা ০১:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত আরও ১২০ জন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও সাড়ে তিন শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীও রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছেন। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

আল জাজিরা বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা সূত্র। নিহতদের মধ্যে বহু মানুষ রয়েছেন যারা ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৫৫ হাজার।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫৭ জন ত্রাণ সংগ্রহকারী নিহত এবং ৩৬৩ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনা ঘটেছে এমন সব বিতরণকেন্দ্রে, যেগুলো পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামের একটি বিতর্কিত সংস্থা। বিতরণকেন্দ্রগুলো গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানেই বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণব্যবস্থাকে “নাটকীয় সাফল্য” বললেও বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে, কারণ এসব কেন্দ্রে উপচে পড়া মানুষের ভিড়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে এবং তা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনছে।

“মানবিক গণহত্যার কেন্দ্র” হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে রাফাহ ও নেৎসারিম করিডোরে অবস্থিত বিতরণকেন্দ্রগুলো। জিএইচএফ গত ২৭ মে থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর এসব স্থানে ত্রাণ নিতে গিয়ে ২২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে তারা নেৎসারিম করিডোর এলাকায় “সতর্কতামূলক গুলি” চালিয়েছে, আর সেটিই হয়তো বহু প্রাণহানির কারণ।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, “ইসরায়েল গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, অভুক্ত মানুষদের ওপর গুলি চালিয়ে ও খাদ্য অবরোধ দিয়ে অনাহারে মারার কৌশল নিচ্ছে।”

জাতিসংঘও এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে জানিয়েছে, তারা জিএইচএফ এর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণে অংশ নেবে না। কারণ এতে ইসরায়েলি সামরিক সহায়তাপ্রাপ্ত বেসরকারি ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে, যা মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন।

ট্যাগস :

উপকূলবাসীর স্বপ্নপূরণ, হাতিয়ায় সরকার ঘোষিত নদী বন্দর

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত আরও ১২০ জন

আপডেট সময় ০৯:০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও সাড়ে তিন শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীও রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছেন। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

আল জাজিরা বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা সূত্র। নিহতদের মধ্যে বহু মানুষ রয়েছেন যারা ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৫৫ হাজার।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫৭ জন ত্রাণ সংগ্রহকারী নিহত এবং ৩৬৩ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনা ঘটেছে এমন সব বিতরণকেন্দ্রে, যেগুলো পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামের একটি বিতর্কিত সংস্থা। বিতরণকেন্দ্রগুলো গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানেই বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণব্যবস্থাকে “নাটকীয় সাফল্য” বললেও বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে, কারণ এসব কেন্দ্রে উপচে পড়া মানুষের ভিড়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে এবং তা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনছে।

“মানবিক গণহত্যার কেন্দ্র” হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে রাফাহ ও নেৎসারিম করিডোরে অবস্থিত বিতরণকেন্দ্রগুলো। জিএইচএফ গত ২৭ মে থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর এসব স্থানে ত্রাণ নিতে গিয়ে ২২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে তারা নেৎসারিম করিডোর এলাকায় “সতর্কতামূলক গুলি” চালিয়েছে, আর সেটিই হয়তো বহু প্রাণহানির কারণ।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, “ইসরায়েল গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, অভুক্ত মানুষদের ওপর গুলি চালিয়ে ও খাদ্য অবরোধ দিয়ে অনাহারে মারার কৌশল নিচ্ছে।”

জাতিসংঘও এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে জানিয়েছে, তারা জিএইচএফ এর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণে অংশ নেবে না। কারণ এতে ইসরায়েলি সামরিক সহায়তাপ্রাপ্ত বেসরকারি ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে, যা মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন।