ঢাকা ০৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ছাত্রশিবির ফেনী শহর কর্তৃক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন ফেনী শহর কর্তৃক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন Logo ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৭ জন ভাইকে ফিরিয়ে দিতে হবে- জাহিদুল ইসলাম Logo সমু চৌধুরীকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে: পুলিশ Logo এ টি এম আজহারুলকে রংপুর-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা Logo নাটোরে ছাত্রদলের কমিটিতে একাধিক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী Logo মে মাসে ৫৯৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬১৪ Logo ভারতে ২৪২ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত Logo লক্ষ্মীপুরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে ছাত্রশিবির Logo সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এক রাতে ৭০ জনকে পুশইন করালো বিএসএফ Logo বাঁশখালী পৌরসভা জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

‘সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই’

‘সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আজকের এই আয়োজনটা আসলে একটা ভিন্ন মোড়কে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম বাংলাদেশের প্রধান চার ধর্মের লোক আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এটি একটি ফুলের বাগান। আমরা সকলেই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি; জন্মসূত্রে আমরা সকলেই প্রিয় দেশের নন্দিত ও মর্যাদাবান নাগরিক। আমাদের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মুসলমান এই চার ধর্মের অনুসারী মিলেই আমাদের এই বাংলাদেশ। সকল ধর্মের মানুষ নিয়ে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদের কোনো দেয়াল থাকবে না।

জামায়াত আমির আরও বলেন, আপনারা অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেছেন যে, ‘৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে নিয়ে আপনারা কখনই বসেননি; আমরাও যাইনি। আমরা সব সময় আওয়ামী লীগে ভোট দেই- এই ধারণা থেকে আমাদেরকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।’ এই অভিযোগের সূত্র ধরে জামায়াত আমির বলেন, শুধু আপনারা নন, ৫ আগস্টের আগে তো আমার মা-ও আমাকে পায়নি, আমার বাবাও আমাকে পায়নি, আমার স্ত্রী-সন্তানরাও আমাকে পায়নি। এটা শুধু আমার কথা বলছি না, আমাদের কথা বলছি। ৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে দেওয়া হয়নি। আমি চোর-ডাকাত নই, দখলদার নই, চাঁদাবাজ নই, খুনি কিংবা সন্ত্রাসীও নই। তা সত্ত্বেও আমাকে কেন কয়েকবার জেলে রাখা হলো? এটা শুধু আমার ব্যাপারে না এই ধরনের ঘটনা লক্ষ লক্ষ রয়েছে। আমাদেরকে সমাজের মানুষের সুখ-দুঃখ, ব্যথা, বেদনার অংশীদার হতে দেওয়া হয়নি। তারপরও যেখানে খবর পেয়েছি সারা বাংলাদেশে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বরগুনায় পঞ্চম শ্রেণির একটি মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেছিলেন। লম্পটরা মামলা করার কারণে তার বাপকেও খুন করল। তিনি সনাতন ধর্মের অতি সাধারণ এজন মানুষ; মুরগী বিক্রির দোকানে চাকরি করতেন। এই দিয়ে তার ছোট্ট সংসারটি চলত। তিনটা মেয়ের মধ্যে নির্যাতিত মেয়েটি বড়। কোলের শিশুটির বয়স মাত্র আড়াই মাস। আমি সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের পাশে কারা কারা দাঁড়িয়েছেন? তারা বললেন, ডিসি সাহেব একজনের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। জিজ্ঞেস করলাম, আর কিছু কী তারা বলেছে? জবাব পেলাম, মামলাটা তারা দেখবেন। জিজ্ঞেস করলাম, এখন আপনারা চলবেন কিভাবে? তিনি বললেন, পরিবারের একমাত্র অভিভাবক মারা গেছেন; এই পরিবারে এখন আর কোনো পুরুষ সদস্য নাই। পরিবারটিতে এখন বিধবা স্ত্রী, আর তিনটা এতিম মেয়ে। মহিলাটি তখন কেঁদে কেঁদে প্রায় বেহুশ হওয়ার উপক্রম। সে হাউ মাউ করে বলল যে, আমরা এখন বাঁচব কী করে? কি খাব? কারা আমাদেরকে খাবার দেবে? আমাদের সংসারের একমাত্র বাতি সে তো নিভেই গেল। আমি তখন আড়াই মাসের বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলামঃ এই বাচ্চাটির দায়-দায়িত্ব আল্লাহর উপর ভরসা করে আমরা নিলাম। আজ পর্যন্ত আমাদের সংগঠন আল্লাহর অপার মেহেরবানিতে প্রতি মাসে এই অসহায় পরিবারটির আর্থিক ভরণ-পোষণ দিয়ে যাচ্ছে।’

বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে ৯ মে সোমবার বিকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকল ধর্মাবলম্বীদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত এসব কথা বলেন।

বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আমির এমাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল বাছিতের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, মৌলভীবাজার-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, ঢাকার পল্টন থানা আমির শাহিন আহমদ খান। উপজেলা নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ সুমন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল মুহাইমিন, মো. কামাল উদ্দিন প্রমুখ।

ছাত্রশিবির ফেনী শহর কর্তৃক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন ফেনী শহর কর্তৃক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন

‘সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই’

আপডেট সময় ১২:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আজকের এই আয়োজনটা আসলে একটা ভিন্ন মোড়কে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম বাংলাদেশের প্রধান চার ধর্মের লোক আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এটি একটি ফুলের বাগান। আমরা সকলেই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি; জন্মসূত্রে আমরা সকলেই প্রিয় দেশের নন্দিত ও মর্যাদাবান নাগরিক। আমাদের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মুসলমান এই চার ধর্মের অনুসারী মিলেই আমাদের এই বাংলাদেশ। সকল ধর্মের মানুষ নিয়ে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদের কোনো দেয়াল থাকবে না।

জামায়াত আমির আরও বলেন, আপনারা অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেছেন যে, ‘৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে নিয়ে আপনারা কখনই বসেননি; আমরাও যাইনি। আমরা সব সময় আওয়ামী লীগে ভোট দেই- এই ধারণা থেকে আমাদেরকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।’ এই অভিযোগের সূত্র ধরে জামায়াত আমির বলেন, শুধু আপনারা নন, ৫ আগস্টের আগে তো আমার মা-ও আমাকে পায়নি, আমার বাবাও আমাকে পায়নি, আমার স্ত্রী-সন্তানরাও আমাকে পায়নি। এটা শুধু আমার কথা বলছি না, আমাদের কথা বলছি। ৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে দেওয়া হয়নি। আমি চোর-ডাকাত নই, দখলদার নই, চাঁদাবাজ নই, খুনি কিংবা সন্ত্রাসীও নই। তা সত্ত্বেও আমাকে কেন কয়েকবার জেলে রাখা হলো? এটা শুধু আমার ব্যাপারে না এই ধরনের ঘটনা লক্ষ লক্ষ রয়েছে। আমাদেরকে সমাজের মানুষের সুখ-দুঃখ, ব্যথা, বেদনার অংশীদার হতে দেওয়া হয়নি। তারপরও যেখানে খবর পেয়েছি সারা বাংলাদেশে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বরগুনায় পঞ্চম শ্রেণির একটি মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেছিলেন। লম্পটরা মামলা করার কারণে তার বাপকেও খুন করল। তিনি সনাতন ধর্মের অতি সাধারণ এজন মানুষ; মুরগী বিক্রির দোকানে চাকরি করতেন। এই দিয়ে তার ছোট্ট সংসারটি চলত। তিনটা মেয়ের মধ্যে নির্যাতিত মেয়েটি বড়। কোলের শিশুটির বয়স মাত্র আড়াই মাস। আমি সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের পাশে কারা কারা দাঁড়িয়েছেন? তারা বললেন, ডিসি সাহেব একজনের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। জিজ্ঞেস করলাম, আর কিছু কী তারা বলেছে? জবাব পেলাম, মামলাটা তারা দেখবেন। জিজ্ঞেস করলাম, এখন আপনারা চলবেন কিভাবে? তিনি বললেন, পরিবারের একমাত্র অভিভাবক মারা গেছেন; এই পরিবারে এখন আর কোনো পুরুষ সদস্য নাই। পরিবারটিতে এখন বিধবা স্ত্রী, আর তিনটা এতিম মেয়ে। মহিলাটি তখন কেঁদে কেঁদে প্রায় বেহুশ হওয়ার উপক্রম। সে হাউ মাউ করে বলল যে, আমরা এখন বাঁচব কী করে? কি খাব? কারা আমাদেরকে খাবার দেবে? আমাদের সংসারের একমাত্র বাতি সে তো নিভেই গেল। আমি তখন আড়াই মাসের বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলামঃ এই বাচ্চাটির দায়-দায়িত্ব আল্লাহর উপর ভরসা করে আমরা নিলাম। আজ পর্যন্ত আমাদের সংগঠন আল্লাহর অপার মেহেরবানিতে প্রতি মাসে এই অসহায় পরিবারটির আর্থিক ভরণ-পোষণ দিয়ে যাচ্ছে।’

বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে ৯ মে সোমবার বিকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকল ধর্মাবলম্বীদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত এসব কথা বলেন।

বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আমির এমাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল বাছিতের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, মৌলভীবাজার-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, ঢাকার পল্টন থানা আমির শাহিন আহমদ খান। উপজেলা নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ সুমন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল মুহাইমিন, মো. কামাল উদ্দিন প্রমুখ।