ঢাকা ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে ফিলিস্তিনিদের হত্যা, তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে ফিলিস্তিনিদের হত্যা, তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অসহায় ফিলিস্তিনিদের হত্যার ঘটনায় স্বাধীনভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এর আগে রোববার (১ জুন) এই হত্যাকাণ্ড চালায় হানাদার ইসরায়েলি বাহিনী।

মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত রাফা কেন্দ্র থেকে খাবারের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালানো হয়। রেড ক্রস জানিয়েছে, এ ঘটনায় ১৭৯ জন হতাহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১ জন মারা গেছেন। হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থার তথ্যমতে নিহতের সংখ্যা ৩১।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলের কাছাকাছি বা ভেতরে বেসামরিক নাগরিকদের উপর গুলি চালানোর ঘটনা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে যে এই ধরণের প্রতিবেদন মিথ্যা। জিএইচএফ জানিয়েছে যে প্রতিবেদনগুলো “সম্পূর্ণ বানোয়াট” এবং তাদের স্থাপনায় বা তার কাছাকাছি কোনও হামলার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।

সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেন,”রোববার গাজায় সাহায্য চাইতে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিহত ও আহত হওয়ার খবরে আমি মর্মাহত। আমি এই ঘটনার তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি এবং দোষীদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

মহাসচিবের করা মন্তব্যকে “অপমানজনক” হিসেবে আখ্যায়িত করে এক্সে করা এক পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে হামাসের কথা উল্লেখ না করার জন্য তার সমালোচনাও করেছে দেশটি।

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস বলছে, রাফায় রেড ক্রস ফিল্ড হাসপাতালে সেই সময়ে ১৭৯ জন “ব্যাপক হতাহত” হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন এবং ২১ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। সব রোগী জানিয়েছেন যে তারা সাহায্য বিতরণ স্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন।

মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে যে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে তাদের দলগুলোও গুরুতর আহত ব্যক্তিদেরও চিকিৎসা করেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা আরও জানিয়েছে যে রোগীদের “ইসরায়েলি ড্রোন, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক এবং সৈন্যরা চারদিক থেকে গুলি চালিয়েছে”। এসময় তাদের এক কর্মীর ভাই “বিতরণ কেন্দ্র থেকে সাহায্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করার সময় নিহত হয়েছেন”।

রাফার একজন সাংবাদিক বিবিসিকে জানিয়েছেন, জিএইচএফের সাইটের কাছে রাফার আল-আলম গোলচত্বরের কাছে ফিলিস্তিনিরা জড়ো হয়েছিল, তখন ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো এগিয়ে এসে গুলি চালায়। রোববার সকালে অনলাইনে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে যে ফিলিস্তিনিরা বালুর মধ্যে একটি খোলা জায়গায় লুকিয়ে আছে এবং স্বয়ংক্রিয় গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে, বিবিসি অবস্থানটি যাচাই করতে পারেনি কারণ সেখানে পর্যাপ্ত চিহ্ন দৃশ্যমান ছিল না।

ট্যাগস :

ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে ফিলিস্তিনিদের হত্যা, তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

আপডেট সময় ১২:০৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অসহায় ফিলিস্তিনিদের হত্যার ঘটনায় স্বাধীনভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এর আগে রোববার (১ জুন) এই হত্যাকাণ্ড চালায় হানাদার ইসরায়েলি বাহিনী।

মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত রাফা কেন্দ্র থেকে খাবারের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালানো হয়। রেড ক্রস জানিয়েছে, এ ঘটনায় ১৭৯ জন হতাহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১ জন মারা গেছেন। হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থার তথ্যমতে নিহতের সংখ্যা ৩১।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলের কাছাকাছি বা ভেতরে বেসামরিক নাগরিকদের উপর গুলি চালানোর ঘটনা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে যে এই ধরণের প্রতিবেদন মিথ্যা। জিএইচএফ জানিয়েছে যে প্রতিবেদনগুলো “সম্পূর্ণ বানোয়াট” এবং তাদের স্থাপনায় বা তার কাছাকাছি কোনও হামলার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।

সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেন,”রোববার গাজায় সাহায্য চাইতে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিহত ও আহত হওয়ার খবরে আমি মর্মাহত। আমি এই ঘটনার তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি এবং দোষীদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

মহাসচিবের করা মন্তব্যকে “অপমানজনক” হিসেবে আখ্যায়িত করে এক্সে করা এক পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে হামাসের কথা উল্লেখ না করার জন্য তার সমালোচনাও করেছে দেশটি।

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস বলছে, রাফায় রেড ক্রস ফিল্ড হাসপাতালে সেই সময়ে ১৭৯ জন “ব্যাপক হতাহত” হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন এবং ২১ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। সব রোগী জানিয়েছেন যে তারা সাহায্য বিতরণ স্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন।

মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে যে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে তাদের দলগুলোও গুরুতর আহত ব্যক্তিদেরও চিকিৎসা করেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা আরও জানিয়েছে যে রোগীদের “ইসরায়েলি ড্রোন, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক এবং সৈন্যরা চারদিক থেকে গুলি চালিয়েছে”। এসময় তাদের এক কর্মীর ভাই “বিতরণ কেন্দ্র থেকে সাহায্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করার সময় নিহত হয়েছেন”।

রাফার একজন সাংবাদিক বিবিসিকে জানিয়েছেন, জিএইচএফের সাইটের কাছে রাফার আল-আলম গোলচত্বরের কাছে ফিলিস্তিনিরা জড়ো হয়েছিল, তখন ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো এগিয়ে এসে গুলি চালায়। রোববার সকালে অনলাইনে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে যে ফিলিস্তিনিরা বালুর মধ্যে একটি খোলা জায়গায় লুকিয়ে আছে এবং স্বয়ংক্রিয় গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে, বিবিসি অবস্থানটি যাচাই করতে পারেনি কারণ সেখানে পর্যাপ্ত চিহ্ন দৃশ্যমান ছিল না।