ছোট বোনকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষা। ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার পর ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এ আদেশ দেন। এর আগে, শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া গ্রামে বর্ষার ওপর এ হামলা হয়। অভিযোগ রয়েছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ষা থানায় অভিযোগ জমা দিয়ে বের হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেকেন গাজীর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি তার ওপর চড়াও হয়। রাস্তায় ফেলে মারধর করে এবং চুল ধরে টেনে হিঁচড়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে বর্ষা ফেসবুক লাইভে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘটনার বিবরণ দিলে মুহূর্তেই বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করে। তবে এই সময় পুলিশের ওপরও হামলা হয়, যাতে কনস্টেবল-ড্রাইভার হান্নু শরীফ আহত হন।
এ ঘটনার পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভাবুকদিয়া বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। এতে ফরিদপুর-বরিশাল আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম বলেন, ‘প্রশাসনিক কারণে ওসি সফর আলীকে ফরিদপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। শনিবার পুলিশ সুপার এই নির্দেশ দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, মো. সফর আলী ২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নগরকান্দা থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন। দায়িত্বকালেই কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় পর্যায়ে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল, যা বর্ষার ওপর হামলার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে।