বিশ্বখ্যাত নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তরুণ প্রজন্মকে নতুন এক বিশ্ব গড়তে সৃজনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “চাকরি মানুষের সৃজনশীলতাকে দমন করে।”
শুক্রবার (৩০ মে) জাপানের টোকিওতে অবস্থিত সোকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, বর্তমান সভ্যতার কাঠামোর মধ্যে মানুষ টিকে থাকতে পারবে না, কারণ বিশ্বজুড়ে পরিবেশ ধ্বংস অব্যাহত রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে তিনি তার বিখ্যাত ‘থ্রি জিরো থিওরি’ বা ‘তিন শূন্য তত্ত্ব’ উল্লেখ করেন— শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ।
ড. ইউনূস আরও বলেন, “বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ মানুষ শুধুই মুনাফা সর্বাধিক করার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে, যা একটি টেকসই ও মানবিক সমাজ গঠনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বিশ্বের সম্পদের সিংহভাগ এখন খুব অল্প কয়েকজনের হাতে কেন্দ্রীভূত, যাকে তিনি এক অভিশাপ হিসেবে উল্লেখ করেন। অধ্যাপক ইউনূস বেকারত্বের সমস্যা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) আগত চ্যালেঞ্জগুলোর দিকেও আলোকপাত করেন।
‘থ্রি জিরো ক্লাব’ সম্পর্কে তিনি বলেন, পাঁচজন ব্যক্তি একত্রিত হয়ে একটি থ্রি জিরো ক্লাব গঠন করতে পারে, যেখানে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে যে তারা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করবে না।
তরুণ প্রজন্মকে নতুন এক বিশ্ব গড়তে সৃজনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চাকরি মানুষের সৃজনশীলতাকে দমন করে।
মানুষের সহজাত উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘যদি তোমার মধ্যে সৃজনশীলতা না থাকে, তবে তুমি কিছুই নও…প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই সৃজনশীলতা আছে।’
তিনি উদ্যোক্তা তৈরি করতে সামাজিক ব্যবসায় ক্লাব প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘একটি নতুন পৃথিবী কল্পনা করো, কারণ কল্পনা তোমাকে নিজেকে উন্মুক্ত করার ক্ষমতা দেয়।’