ঢাকা ০৩:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি।

এসময় ড. ইউনূস বলেছেন, আমরা এমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রে একটি শান্তিপূর্ণ ও কার্যকর রূপান্তর ঘটাবে। বর্তমান অস্থির বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জনগণের ক্ষমতায়ন এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।

তিনি বলেছেন, অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসা এই সরকারের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ। এ সময়, রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, এশিয়াসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে একের পর এক সংঘাতের জন্ম হচ্ছে, যার ফলে শান্তি এখন প্রায় অধরা হয়ে পড়েছে। ইউক্রেন, গাজা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ও মানবসৃষ্ট সংকটে হাজারো মানুষ তাদের জীবন ও জীবিকা হারাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে, অথচ সেই অর্থের অভাবে কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে কিংবা ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারছে না। মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধ ইতোমধ্যে এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, আর সাম্প্রতিক ভূমিকম্প সেই সংকটকে আরও গভীর মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত করেছে।

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘটিত সীমিত যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেছেন, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য আমি উভয় দেশের নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রত্যাশা করি। এই অঞ্চলে আন্তঃনির্ভরশীলতাকে দ্বন্দ্বের উৎস নয়, বরং সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এশিয়ার দেশগুলোকে শূন্য-সমষ্টিক প্রতিযোগিতার পথ পরিহার করে, পারস্পরিক কল্যাণ ও ভাগাভাগি করা সমৃদ্ধির দিকেই অগ্রসর হতে হবে।

এ সময় এশিয়ার অস্থির বাস্তবতায় শান্তি, পারস্পরিক আস্থা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ভবিষ্যৎ কেবল জিডিপি প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে নয়, বরং মানুষের সার্বিক কল্যাণ, পারস্পরিক বিশ্বাস ও নেতৃত্বের সাহসিকতার ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচন নিয়ে বিএনপিকে কেন দোষারোপ করলেন প্রধান উপদেষ্টা তা বোধগম্য নয়: সালাহউদ্দিন আহমেদ

অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় ১১:০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

বাংলাদেশ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি।

এসময় ড. ইউনূস বলেছেন, আমরা এমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রে একটি শান্তিপূর্ণ ও কার্যকর রূপান্তর ঘটাবে। বর্তমান অস্থির বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জনগণের ক্ষমতায়ন এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।

তিনি বলেছেন, অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসা এই সরকারের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ। এ সময়, রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, এশিয়াসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে একের পর এক সংঘাতের জন্ম হচ্ছে, যার ফলে শান্তি এখন প্রায় অধরা হয়ে পড়েছে। ইউক্রেন, গাজা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ও মানবসৃষ্ট সংকটে হাজারো মানুষ তাদের জীবন ও জীবিকা হারাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে, অথচ সেই অর্থের অভাবে কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে কিংবা ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারছে না। মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধ ইতোমধ্যে এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, আর সাম্প্রতিক ভূমিকম্প সেই সংকটকে আরও গভীর মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত করেছে।

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘটিত সীমিত যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেছেন, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য আমি উভয় দেশের নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রত্যাশা করি। এই অঞ্চলে আন্তঃনির্ভরশীলতাকে দ্বন্দ্বের উৎস নয়, বরং সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এশিয়ার দেশগুলোকে শূন্য-সমষ্টিক প্রতিযোগিতার পথ পরিহার করে, পারস্পরিক কল্যাণ ও ভাগাভাগি করা সমৃদ্ধির দিকেই অগ্রসর হতে হবে।

এ সময় এশিয়ার অস্থির বাস্তবতায় শান্তি, পারস্পরিক আস্থা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ভবিষ্যৎ কেবল জিডিপি প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে নয়, বরং মানুষের সার্বিক কল্যাণ, পারস্পরিক বিশ্বাস ও নেতৃত্বের সাহসিকতার ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।