ঢাকা ১০:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আজ রোববার নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ ধরনের বৃহত্তম কারখানা। এটি সার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সহায়তা করবে।

পলাশ উপজেলায় জিপিইউএফএফ প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক এ কারখানার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিন দশকের পুরোনো কারখানাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুন করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন এবং প্রকল্পের শুরু থেকেই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবহন সুবিধার লক্ষ্যে ঘোড়াশাল রেলস্টেশনের সঙ্গে কারখানার সংযোগের জন্য একটি রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী সার কারখানা পরিদর্শন করেন এবং স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং জিপিইউএফএফ উদ্বোধনের দিনটিকে চিহ্নিত করে একটি বিশেষ সিলমোহরও প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

কারখানার কার্যক্রম শুরু হলে সার আমদানির ওপর নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। কারণ দেশের মোট বার্ষিক ২৬ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয় কারখানাগুলো একসঙ্গে ১৯ দশমিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন সার উৎপাদন করবে।

স্থানীয় কারখানাগুলো বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ টন উৎপাদন করছে এবং বাকি বার্ষিক চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জানায়, কারখানাটি ৩০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ১১০ একর জমিতে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির দৈনিক সার উৎপাদন হবে ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন।

মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকার ৪ হাজার ৫৮০ দশমিক ২১ কোটি টাকা দিয়েছে এবং ১০ দশমিক ৯২০ কোটি টাকা জাইকা, এইচএসবিসি ও ব্যাংক অব টোকিও মিত্সুবিশি ইউএফজে লিমিটেড থেকে ব্যবসায়িক ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছে। কারখানার দুটি বাষ্পীয় গ্যাস জেনারেটর ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এবং প্ল্যান্টটি চালানোর জন্য ২৮ মেগাওয়াট প্রয়োজন।

এটি বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লু গ্যাস থেকে পরিবেশদূষণকারী আহরণ করা হবে এবং ক্যাপচার করা কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে (প্রায় ১০ শতাংশ)। এটি দেশে অত্যাধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী ও সবুজ সার কারখানা, যা ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে দেবে এবং কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৫:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

আজ রোববার নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ ধরনের বৃহত্তম কারখানা। এটি সার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সহায়তা করবে।

পলাশ উপজেলায় জিপিইউএফএফ প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক এ কারখানার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিন দশকের পুরোনো কারখানাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুন করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন এবং প্রকল্পের শুরু থেকেই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবহন সুবিধার লক্ষ্যে ঘোড়াশাল রেলস্টেশনের সঙ্গে কারখানার সংযোগের জন্য একটি রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী সার কারখানা পরিদর্শন করেন এবং স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং জিপিইউএফএফ উদ্বোধনের দিনটিকে চিহ্নিত করে একটি বিশেষ সিলমোহরও প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

কারখানার কার্যক্রম শুরু হলে সার আমদানির ওপর নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। কারণ দেশের মোট বার্ষিক ২৬ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয় কারখানাগুলো একসঙ্গে ১৯ দশমিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন সার উৎপাদন করবে।

স্থানীয় কারখানাগুলো বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ টন উৎপাদন করছে এবং বাকি বার্ষিক চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জানায়, কারখানাটি ৩০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ১১০ একর জমিতে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির দৈনিক সার উৎপাদন হবে ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন।

মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকার ৪ হাজার ৫৮০ দশমিক ২১ কোটি টাকা দিয়েছে এবং ১০ দশমিক ৯২০ কোটি টাকা জাইকা, এইচএসবিসি ও ব্যাংক অব টোকিও মিত্সুবিশি ইউএফজে লিমিটেড থেকে ব্যবসায়িক ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছে। কারখানার দুটি বাষ্পীয় গ্যাস জেনারেটর ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এবং প্ল্যান্টটি চালানোর জন্য ২৮ মেগাওয়াট প্রয়োজন।

এটি বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লু গ্যাস থেকে পরিবেশদূষণকারী আহরণ করা হবে এবং ক্যাপচার করা কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে (প্রায় ১০ শতাংশ)। এটি দেশে অত্যাধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী ও সবুজ সার কারখানা, যা ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে দেবে এবং কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।