ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা কলেজ ছাত্র অধিকার নেতা সাইদির বিরুদ্ধে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

ছবি: সংগৃহিত

 

কালবেলা পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের স্টাফ সেতুকে আটকে রেখে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা কলেজ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসনিমুল হাসান সাইদির বিরুদ্ধে। সোমবার (২৬ মে) গণমাধ্যমকে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সেতু।

জানা গেছে, সাইদি ঢাকা কলেজের (২০২২-২০২৩) সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। সেতুকে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে তাঁর বন্ধু সাকিব আল হাসানসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জন। সাকিব (২০২২-২০২৩) সেশনের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সেতু বলেন, ৭ মাস আগে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে আমাকে ঢাকা কলেজের চার-পাঁচ জন শিক্ষার্থী পরিচয়ে আটকে রেখে মারধর করে এবং আমার বিকাশ একাউন্ট থেকে ৮ হাজার টাকা তুলে নেয়। মারধর করার পর বলে ঢাকা কলেজের আশপাশে পেলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে আইডিয়াল কলেজের পাশে এক ফার্মেসি থেকে চাঁদা বাজির ঘটনা ঘটে। সেখানকার সিসিটিভির ফুটেজ বের হলে ভিডিও দেখে তাকে চেনা যায়। এরপর ঢাকা কলেজে পরিচিত ভাইদেরকে ভিডিও দেখালে তাঁরা নিশ্চিত করে এটা সাইদি। পরে সাইদির সঙ্গে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সে আমাকে শুধু দিন কাটিয়ে দেয়, টাকা ফেরত দিতে চায় না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাসনিমুল হাসান সাইদির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তবে তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগের একটি স্বীকারোক্তির রেকর্ড রয়েছে এই প্রতিবেদকের হাতে। যেখানে সাইদিকে বলতে শোনা যায়, ‘বিকাশ থেকে টাকা উত্তলন করা দুই ছেলে বাহিরের। তাঁকে আমরা এতে জড়াতে চায় না এবং আমি যে টাকা নিয়েছি সেগুলো রোববার আমার পরীক্ষা থাকায় দিতে পারছি না, সোমবার দিয়ে দিবো।’

এদিকে অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসানকে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা বলেন, এর আগেও একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সে সময় সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু পত্রিকার স্টাফকে মারধর ও টাকা নেওয়ার অভিযোগটি মাত্র শুনলাম। অভিযোগের সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নামজুল হাসান বলেন, কাউকে মারধর করা এটা ফৌজদারী অপরাধ। অভিযোগের প্রমাণ পেলে শুধু সাংগাঠনিক ব্যবস্থা না আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর ঢাকা কলেজে ঘুরতে এসে সাইদি চক্রের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন সবুজ নামে এক ব্যক্তি। সবুজ মোহাম্মদপুর যাওয়ার সময় সিটি কলেজের সামনে থেকে ঢাকা কলেজ পরিচয় দিয়ে চার-পাঁচজন তাকে আটকে রেখে ২৮০০ টাকা কেড়ে নেয়। এ সময় দৈনিক কালকেলার বিজ্ঞাপণ বিভাগের স্টাফ সেতুর সামনে পড়ে ঘটনাটি। সেতু সেখানে গেলে সবুজকে ছেড়ে দিয়ে তাকে মারধর করা হয় এবং বিকাশ থেকে ৮ হাজার টাকা উত্তলন করে নেওয়া হয়।

এছাড়াও ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত’ ধানমন্ডির ল্যাবএইড সংলগ্ন ফ্যামিলি ড্রাগ কর্নার-২ নামক দোকান থেকেও সমন্বয়কের নাম ভাঙিয়ে ১৫ হাজার টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগে নিউজ প্রকাশিত হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চৌদ্দগ্রামে খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু 

ঢাকা কলেজ ছাত্র অধিকার নেতা সাইদির বিরুদ্ধে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

আপডেট সময় ০৭:৪৯:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

 

কালবেলা পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের স্টাফ সেতুকে আটকে রেখে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা কলেজ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসনিমুল হাসান সাইদির বিরুদ্ধে। সোমবার (২৬ মে) গণমাধ্যমকে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সেতু।

জানা গেছে, সাইদি ঢাকা কলেজের (২০২২-২০২৩) সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। সেতুকে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে তাঁর বন্ধু সাকিব আল হাসানসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জন। সাকিব (২০২২-২০২৩) সেশনের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সেতু বলেন, ৭ মাস আগে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে আমাকে ঢাকা কলেজের চার-পাঁচ জন শিক্ষার্থী পরিচয়ে আটকে রেখে মারধর করে এবং আমার বিকাশ একাউন্ট থেকে ৮ হাজার টাকা তুলে নেয়। মারধর করার পর বলে ঢাকা কলেজের আশপাশে পেলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে আইডিয়াল কলেজের পাশে এক ফার্মেসি থেকে চাঁদা বাজির ঘটনা ঘটে। সেখানকার সিসিটিভির ফুটেজ বের হলে ভিডিও দেখে তাকে চেনা যায়। এরপর ঢাকা কলেজে পরিচিত ভাইদেরকে ভিডিও দেখালে তাঁরা নিশ্চিত করে এটা সাইদি। পরে সাইদির সঙ্গে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সে আমাকে শুধু দিন কাটিয়ে দেয়, টাকা ফেরত দিতে চায় না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাসনিমুল হাসান সাইদির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তবে তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগের একটি স্বীকারোক্তির রেকর্ড রয়েছে এই প্রতিবেদকের হাতে। যেখানে সাইদিকে বলতে শোনা যায়, ‘বিকাশ থেকে টাকা উত্তলন করা দুই ছেলে বাহিরের। তাঁকে আমরা এতে জড়াতে চায় না এবং আমি যে টাকা নিয়েছি সেগুলো রোববার আমার পরীক্ষা থাকায় দিতে পারছি না, সোমবার দিয়ে দিবো।’

এদিকে অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসানকে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা বলেন, এর আগেও একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সে সময় সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু পত্রিকার স্টাফকে মারধর ও টাকা নেওয়ার অভিযোগটি মাত্র শুনলাম। অভিযোগের সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নামজুল হাসান বলেন, কাউকে মারধর করা এটা ফৌজদারী অপরাধ। অভিযোগের প্রমাণ পেলে শুধু সাংগাঠনিক ব্যবস্থা না আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর ঢাকা কলেজে ঘুরতে এসে সাইদি চক্রের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন সবুজ নামে এক ব্যক্তি। সবুজ মোহাম্মদপুর যাওয়ার সময় সিটি কলেজের সামনে থেকে ঢাকা কলেজ পরিচয় দিয়ে চার-পাঁচজন তাকে আটকে রেখে ২৮০০ টাকা কেড়ে নেয়। এ সময় দৈনিক কালকেলার বিজ্ঞাপণ বিভাগের স্টাফ সেতুর সামনে পড়ে ঘটনাটি। সেতু সেখানে গেলে সবুজকে ছেড়ে দিয়ে তাকে মারধর করা হয় এবং বিকাশ থেকে ৮ হাজার টাকা উত্তলন করে নেওয়া হয়।

এছাড়াও ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত’ ধানমন্ডির ল্যাবএইড সংলগ্ন ফ্যামিলি ড্রাগ কর্নার-২ নামক দোকান থেকেও সমন্বয়কের নাম ভাঙিয়ে ১৫ হাজার টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগে নিউজ প্রকাশিত হয়।