ঢাকা ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কোন ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না: নাহিদ ইসলাম Logo আগামী ৫ জুলাই সরকারি সফরে নবীনগরে আসছেন অর্থ উপদেষ্টা Logo জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘সৎ-যোগ্য’ লোককে ভোট দিতে বললেন ডিএমপি কর্মকর্তা Logo পাবনায় জামায়াত মনোনীত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে না?-প্রশ্ন ছাত্রশিবির সভাপতির Logo এখন থেকে পাগলা মসজিদে দান করা যাবে অনলাইনে Logo ছাত্রদল নেতার নির্দেশ: ফেক আইডি খুলে দৈনিক ১০টি করে পোস্ট দিতে হবে Logo সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি Logo নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন: জামায়াত আমির Logo লক্ষ্মীপুরে রোগীকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ডা.শিপলু সরকারের বিরুদ্ধে

ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ৫ সুপারিশ

ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ৫ সুপারিশ

ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধে পাঁচটি সুপারিশ পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পূর্বে রেকর্ডকৃত এবং অষ্টম বিশেষ ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি এ পরামর্শ দেন।

গত ৯ নভেম্বর রিয়াদে এই শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের নৃশংস ও নজিরবিহীন আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য সৌদি আরবের আমন্ত্রণে এই শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী প্রথম সুপারিশে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পরিচালিত জঘন্য একতরফা যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা জ্বলছে এবং এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই যুদ্ধ অন্যায্য এবং এটি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্মম লঙ্ঘন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েল কোনো বিরতি ছাড়াই নির্দয় তাণ্ডব চালাচ্ছে, হাসপাতাল ও বেসামরিক অবকাঠামোতে বোমাবর্ষণ করছে এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।’

প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় সুপারিশে বলেন, বিধ্বস্ত গাজার আটকে পড়া বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী উপকরণের অবিচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং নিরাপদ সরবরাহের জন্য অবিলম্বে একটি মানবিক করিডোর খোলার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, বিরামহীন ইসরায়েলি বোমা হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার এ সময়ে, মনে হচ্ছে আমরা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মৃত্যু ও ধ্বংসের দৃশ্য দেখে অচল হয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, ‘অন্তত একটি নিরাপদ মানবিক করিডোরের জন্য আমাদের দ্রুত কাজ করা দরকার। তৃতীয়ত শেখ হাসিনা বলেন, নিরপরাধ বেসামরিক মানুষ হত্যা এবং বর্বর উপায়ে এলাকাগুলো উচ্ছেদ করায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের জঘন্য কাজের শাস্তি হওয়া উচিত যাতে গাজায় যাদের বাড়িঘর রয়েছে তারা আবারও তাদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে। চতুর্থত তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘ, আরব শান্তি উদ্যোগ এবং কোয়ার্টেট রোড ম্যাপে সম্মত হওয়া সিদ্ধান্তগুলো পুনরায় দেখে নেওয়া এবং দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে যা এই অঞ্চলের জনগণের মধ্যে স্থায়ী শান্তি আনবে।’

পঞ্চম পরামর্শে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তারা আমাদের ভাই ও বোন যারা গত ৫৫ বছর ধরে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং তাদের নিজস্ব মাতৃভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সময় এসেছে যে আমরা সবাই একসাথে তাদের পাশে দাঁড়াই এবং তাদের ন্যায্য দাবিটি উপলব্ধি করতে তাদের সহায়তা করি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই যে কোনো সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হোক। সবার কাছে আমার আবেদন: যুদ্ধ বন্ধ করুন; অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। প্রতিটি দেশ তার সার্বভৌমত্ব এবং শান্তিতে বসবাসের অধিকার ফিরে পাক। এতেই নিহিত রয়েছে মানবজাতির কল্যাণ।’

প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে এবং আল-কুদস আল-শরীফকে রাজধানী করে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করে এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বৈঠকটি ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনিদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ বন্ধ করার জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। কয়েক দশক ধরে গাজাকে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, একসময় নির্যাতিত ইহুদি জনগণ এখন নির্মমভাবে তাদের ঘরবাড়ি, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও পরিবারগুলোকে ধ্বংস করছে যারা তাদের কঠিন দিনগুলোতে আশ্রয় দিয়েছিল।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কোন ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না: নাহিদ ইসলাম

ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ৫ সুপারিশ

আপডেট সময় ০২:২৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধে পাঁচটি সুপারিশ পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পূর্বে রেকর্ডকৃত এবং অষ্টম বিশেষ ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি এ পরামর্শ দেন।

গত ৯ নভেম্বর রিয়াদে এই শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের নৃশংস ও নজিরবিহীন আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য সৌদি আরবের আমন্ত্রণে এই শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী প্রথম সুপারিশে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পরিচালিত জঘন্য একতরফা যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা জ্বলছে এবং এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই যুদ্ধ অন্যায্য এবং এটি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্মম লঙ্ঘন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েল কোনো বিরতি ছাড়াই নির্দয় তাণ্ডব চালাচ্ছে, হাসপাতাল ও বেসামরিক অবকাঠামোতে বোমাবর্ষণ করছে এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।’

প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় সুপারিশে বলেন, বিধ্বস্ত গাজার আটকে পড়া বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী উপকরণের অবিচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং নিরাপদ সরবরাহের জন্য অবিলম্বে একটি মানবিক করিডোর খোলার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, বিরামহীন ইসরায়েলি বোমা হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার এ সময়ে, মনে হচ্ছে আমরা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মৃত্যু ও ধ্বংসের দৃশ্য দেখে অচল হয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, ‘অন্তত একটি নিরাপদ মানবিক করিডোরের জন্য আমাদের দ্রুত কাজ করা দরকার। তৃতীয়ত শেখ হাসিনা বলেন, নিরপরাধ বেসামরিক মানুষ হত্যা এবং বর্বর উপায়ে এলাকাগুলো উচ্ছেদ করায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের জঘন্য কাজের শাস্তি হওয়া উচিত যাতে গাজায় যাদের বাড়িঘর রয়েছে তারা আবারও তাদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে। চতুর্থত তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘ, আরব শান্তি উদ্যোগ এবং কোয়ার্টেট রোড ম্যাপে সম্মত হওয়া সিদ্ধান্তগুলো পুনরায় দেখে নেওয়া এবং দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে যা এই অঞ্চলের জনগণের মধ্যে স্থায়ী শান্তি আনবে।’

পঞ্চম পরামর্শে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তারা আমাদের ভাই ও বোন যারা গত ৫৫ বছর ধরে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং তাদের নিজস্ব মাতৃভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সময় এসেছে যে আমরা সবাই একসাথে তাদের পাশে দাঁড়াই এবং তাদের ন্যায্য দাবিটি উপলব্ধি করতে তাদের সহায়তা করি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই যে কোনো সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হোক। সবার কাছে আমার আবেদন: যুদ্ধ বন্ধ করুন; অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। প্রতিটি দেশ তার সার্বভৌমত্ব এবং শান্তিতে বসবাসের অধিকার ফিরে পাক। এতেই নিহিত রয়েছে মানবজাতির কল্যাণ।’

প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে এবং আল-কুদস আল-শরীফকে রাজধানী করে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করে এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বৈঠকটি ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনিদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ বন্ধ করার জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। কয়েক দশক ধরে গাজাকে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, একসময় নির্যাতিত ইহুদি জনগণ এখন নির্মমভাবে তাদের ঘরবাড়ি, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও পরিবারগুলোকে ধ্বংস করছে যারা তাদের কঠিন দিনগুলোতে আশ্রয় দিয়েছিল।