ঢাকা ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন Logo তারেক রহমানের কাছে সন্ত্রাসবাদ-চাঁদাবাজের ঠাই নেই: বিএনপি নেতা মধু Logo কমলগঞ্জে নিজ ঘর থেকে সাবেক ছাত্রদল নেতার গলা কাটা লাশ উদ্ধার Logo হাসিনা বারোটা বাজিয়েছে, এ সরকার চব্বিশটা বাজায়ে দিসে: মির্জা আব্বাস Logo প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে টাইফয়েডের টিকা পাবে ৫ কোটি শিশু Logo কুষ্টিয়ায় জামায়াতের রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo ডাকাতির চেষ্টায় গণপিটুনির শিকার সেই বিএনপি নেতা বহিষ্কার Logo জবির আইইআর-এ র‌্যাগিং, ১০ দিনেও উদ্যোগহীন পরিচালক; আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগীরা Logo ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন : সিইসি Logo নাটোরে মিনি স্টেডিয়াম উদ্বোধন করলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

৩৬ জুলাই ছিল সবার, যা কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়-ছাত্রশিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা যখন সন্ত্রাসী বাহিনীর আক্রমণে রক্তাক্ত, তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনেরা রাজপথে নেমে এসেছিলেন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনদের বুকে যখন গুলি ছোড়া হয়েছে, তখন স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক ও মাদ্রাসার ভাই-বোনেরা নেমে এসে রাজপথ দখলে নিয়েছেন। কোমলমতি তাজা প্রাণগুলো যখন একের পর এক ঝরে পড়ছে, আপামর জনতা ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের পাশে। আমাদের শহিদেরা আজও সাক্ষ্য দেয়, এ আন্দোলন নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর আন্দোলন ছিল না। দলমত নির্বিশেষে এ আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার আন্দোলন।

তিনি বলেন,আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন আমাদের শিক্ষকবৃন্দ। ভাইদের ওপর হওয়া নির্যাতন দেখে যেমন বোনেরা বসে থাকতে পারেননি, আবার বোনদের রাজপথে লাঞ্ছিত হতে দেখে ভাইয়েরাও হয়েছেন চরম বিক্ষুব্ধ। জাতির বিবেক আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগণ শাহাদাতের তামান্না নিয়ে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন; জীবন বাজি রেখে সংবাদ পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বব্যাপী; অনেকে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজ্ঞ আইনজীবীগণ। রাজপথে লড়াই ও আন্দোলনকারীদের আইনি সহায়তা দিয়ে তারা বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছেন। গাড়িচালক ভাইদের কথা কি আমরা ভুলে যাব? যারা কি না গুলিবিদ্ধ আহত জুলাই যোদ্ধাদের হাসপাতালে নিতে জীবন বাজি রেখেছেন। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আন্দোলনের পক্ষে রেখেছিলেন অভাবনীয় ভূমিকা। এভাবেই দেশে-বিদেশে মুক্তিকামী সকল পেশার মানুষ নিজ জায়গা থেকে অবদান রেখেছেন।

শিক্ষার্থীদের হাত ধরে আন্দোলন শুরু হলেও এই বিপ্লব কোনো বয়সের ফ্রেমে বাঁধা থাকেনি। সাত মাসের শিশু থেকে নব্বই বছরের বৃদ্ধ— সবাই জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা।

আপামর ছাত্র-জনতার সিদ্ধান্তই ছিল এই বিপ্লবের সিদ্ধান্ত। প্রত্যেক যোদ্ধার শাহাদাতের তামান্না ছিল এ বিপ্লবের শক্তির উৎস। শাহাদাতের তামান্নার সাথে বিজয়ের স্বপ্ন ছিল এই বিপ্লবের পরবর্তী কর্মসূচি। আর যুদ্ধের ময়দানে খাবার মুখে তুলে দেওয়া মায়েরা ছিলেন আমাদের শক্তি। আর হাত ধরে রাখা বাবারা ছিলেন আমাদের প্রেরণা।

সেদিন আমরা কারও ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, পেশা, বংশমর্যাদা কিংবা বয়সের দিকে না তাকিয়ে এক কাতারে লড়াই করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটাই— ফ্যাসিবাদমুক্ত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। আমাদের এ যাত্রা অনন্তকালের। যখনই ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে, আমরা প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে যাব।

৩৬ জুলাই ছিল এ জাতির ঐক্যের প্রতীক। কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর শিশুসুলভ পদক্ষেপে জুলাই ঐক্য বিনষ্ট হতে পারে না। আমরা তা হতে দেব না। জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখতে জুলাইয়ের দিনগুলি নিয়ে আপনার স্মৃতি লিখুন। জুলাইকে সতেজ ও সজীব করে তুলুন। জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী করুন।

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন

৩৬ জুলাই ছিল সবার, যা কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়-ছাত্রশিবির সভাপতি

আপডেট সময় ০৩:৩৯:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা যখন সন্ত্রাসী বাহিনীর আক্রমণে রক্তাক্ত, তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনেরা রাজপথে নেমে এসেছিলেন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনদের বুকে যখন গুলি ছোড়া হয়েছে, তখন স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক ও মাদ্রাসার ভাই-বোনেরা নেমে এসে রাজপথ দখলে নিয়েছেন। কোমলমতি তাজা প্রাণগুলো যখন একের পর এক ঝরে পড়ছে, আপামর জনতা ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের পাশে। আমাদের শহিদেরা আজও সাক্ষ্য দেয়, এ আন্দোলন নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর আন্দোলন ছিল না। দলমত নির্বিশেষে এ আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার আন্দোলন।

তিনি বলেন,আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন আমাদের শিক্ষকবৃন্দ। ভাইদের ওপর হওয়া নির্যাতন দেখে যেমন বোনেরা বসে থাকতে পারেননি, আবার বোনদের রাজপথে লাঞ্ছিত হতে দেখে ভাইয়েরাও হয়েছেন চরম বিক্ষুব্ধ। জাতির বিবেক আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগণ শাহাদাতের তামান্না নিয়ে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন; জীবন বাজি রেখে সংবাদ পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বব্যাপী; অনেকে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজ্ঞ আইনজীবীগণ। রাজপথে লড়াই ও আন্দোলনকারীদের আইনি সহায়তা দিয়ে তারা বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছেন। গাড়িচালক ভাইদের কথা কি আমরা ভুলে যাব? যারা কি না গুলিবিদ্ধ আহত জুলাই যোদ্ধাদের হাসপাতালে নিতে জীবন বাজি রেখেছেন। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আন্দোলনের পক্ষে রেখেছিলেন অভাবনীয় ভূমিকা। এভাবেই দেশে-বিদেশে মুক্তিকামী সকল পেশার মানুষ নিজ জায়গা থেকে অবদান রেখেছেন।

শিক্ষার্থীদের হাত ধরে আন্দোলন শুরু হলেও এই বিপ্লব কোনো বয়সের ফ্রেমে বাঁধা থাকেনি। সাত মাসের শিশু থেকে নব্বই বছরের বৃদ্ধ— সবাই জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা।

আপামর ছাত্র-জনতার সিদ্ধান্তই ছিল এই বিপ্লবের সিদ্ধান্ত। প্রত্যেক যোদ্ধার শাহাদাতের তামান্না ছিল এ বিপ্লবের শক্তির উৎস। শাহাদাতের তামান্নার সাথে বিজয়ের স্বপ্ন ছিল এই বিপ্লবের পরবর্তী কর্মসূচি। আর যুদ্ধের ময়দানে খাবার মুখে তুলে দেওয়া মায়েরা ছিলেন আমাদের শক্তি। আর হাত ধরে রাখা বাবারা ছিলেন আমাদের প্রেরণা।

সেদিন আমরা কারও ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, পেশা, বংশমর্যাদা কিংবা বয়সের দিকে না তাকিয়ে এক কাতারে লড়াই করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটাই— ফ্যাসিবাদমুক্ত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। আমাদের এ যাত্রা অনন্তকালের। যখনই ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে, আমরা প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে যাব।

৩৬ জুলাই ছিল এ জাতির ঐক্যের প্রতীক। কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর শিশুসুলভ পদক্ষেপে জুলাই ঐক্য বিনষ্ট হতে পারে না। আমরা তা হতে দেব না। জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখতে জুলাইয়ের দিনগুলি নিয়ে আপনার স্মৃতি লিখুন। জুলাইকে সতেজ ও সজীব করে তুলুন। জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী করুন।