ঢাকা ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবিপ্রবি তে উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি: পাকা রাস্তার দাবিতে এলাকাবাসীর আকুতি Logo আমীরে জামায়াত কে ফোন করেন প্রধান উপদেষ্টা, দিয়েছেন আশ্বাস: নায়েবে আমীর তাহের Logo মিথ‍্যা, চরম মিথ্যা ও জঘন্য মিথ্যা : তাজনুভা জাবীন Logo অভিমান ভুলে ঐকমত্য কমিশনের সভায় জামায়াত Logo নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান, প্রমাণ মিলেছে অনিয়মের Logo এই ধরনের মূর্খ উপদেষ্টা দেশের ইতিহাসে কেউ কোনোদিন দেখেনি : ইশরাক Logo গিলক্রিস্টকে ছাড়িয়ে মুশফিকের বিশ্বরেকর্ড Logo ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে হিজবুল্লাহর ভূমিকা কী Logo ঐকমত্য কমিশনের সাথে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী

গাজায় স্কুলে হামলা করেছে ইসরায়েল,সাংবাদিকসহ নিহত ১৯

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। হামলার শিকার স্কুলটি একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং এখানে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।

নিহতদের মধ্যে দুজন রেড ক্রস কর্মী এবং এক সাংবাদিকও রয়েছেন। সোমবার (২৬ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমধ্যম আল জাজিরা।

আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী আবারও গাজা ভূখণ্ডে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। সেখানকার একটি স্কুলে বোমা বর্ষণে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুজন রেড ক্রস কর্মী, এক সাংবাদিক এবং একাধিক শিশু।

নিহতদের মধ্যে মাত্র ১১ বছর বয়সী গাজার কনিষ্ঠতম সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিন হাম্মাদও রয়েছেন।

এদিকে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের ২০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি সম্মেলন বসেছে। সেখানে স্পেন আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা।

পৃথক প্রতিবেদনে আল জাজিরা বলছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১২ জনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি হাজার হাজার শিশু চরম অপুষ্টির শিকার হয়ে মৃত্যু ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।

এর আগে রোববার গাজায় মোহাম্মদ ইয়াসিন নামে চার বছর বয়সী এক শিশু না খেতে পেয়ে মারা যায়। গাজায় সম্প্রতি অনাহারে মারা যাওয়া অসংখ্য শিশুর মধ্যে সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করল এই শিশুটি।

এদিকে বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে মাত্র এক সপ্তাহেই প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬০০ জন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবুতে হামলায় এক মা ও তার সন্তানরা নিহত হয়েছেন।

এছাড়া খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুহেইলায় আরেক শিশুর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা; ওই শিশুর পরিবারকে লক্ষ্য করে চালানো হয় ড্রোন হামলা। উত্তর গাজার জাবালিয়ায় আরেকটি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন দুই নারী ও এক শিশু। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এছাড়া আলাদা হামলায় নিহত হয়েছে ইয়াকিন হাম্মাদ। তিনি ১১ বছর বয়সেই গাজার জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তারকা ছিলেন। একইসঙ্গে নিহত হয়েছেন ডাক্তার আলা আমির আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই। একমাত্র জীবিত সন্তান ১১ বছর বয়সী আদম এখনও আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

প্রায় তিন মাস ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করেছে, অল্প সময়ের মধ্যেই হাজার হাজার শিশু অনাহারে মারা যেতে পারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের ১৯ মাসের হামলায় এখন পর্যন্ত যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩১ শতাংশই শিশু। উল্লেখ্য, এ হিসাব শুধু শনাক্তকৃত মৃতদের নিয়ে; বহু মৃত্যুর তথ্য এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল বারবার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এর ফলে শিশুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে, শিশু মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে

পাবিপ্রবি তে উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

গাজায় স্কুলে হামলা করেছে ইসরায়েল,সাংবাদিকসহ নিহত ১৯

আপডেট সময় ০৮:০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। হামলার শিকার স্কুলটি একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং এখানে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।

নিহতদের মধ্যে দুজন রেড ক্রস কর্মী এবং এক সাংবাদিকও রয়েছেন। সোমবার (২৬ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমধ্যম আল জাজিরা।

আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী আবারও গাজা ভূখণ্ডে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। সেখানকার একটি স্কুলে বোমা বর্ষণে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুজন রেড ক্রস কর্মী, এক সাংবাদিক এবং একাধিক শিশু।

নিহতদের মধ্যে মাত্র ১১ বছর বয়সী গাজার কনিষ্ঠতম সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিন হাম্মাদও রয়েছেন।

এদিকে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের ২০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি সম্মেলন বসেছে। সেখানে স্পেন আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা।

পৃথক প্রতিবেদনে আল জাজিরা বলছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১২ জনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি হাজার হাজার শিশু চরম অপুষ্টির শিকার হয়ে মৃত্যু ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।

এর আগে রোববার গাজায় মোহাম্মদ ইয়াসিন নামে চার বছর বয়সী এক শিশু না খেতে পেয়ে মারা যায়। গাজায় সম্প্রতি অনাহারে মারা যাওয়া অসংখ্য শিশুর মধ্যে সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করল এই শিশুটি।

এদিকে বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে মাত্র এক সপ্তাহেই প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬০০ জন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবুতে হামলায় এক মা ও তার সন্তানরা নিহত হয়েছেন।

এছাড়া খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুহেইলায় আরেক শিশুর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা; ওই শিশুর পরিবারকে লক্ষ্য করে চালানো হয় ড্রোন হামলা। উত্তর গাজার জাবালিয়ায় আরেকটি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন দুই নারী ও এক শিশু। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এছাড়া আলাদা হামলায় নিহত হয়েছে ইয়াকিন হাম্মাদ। তিনি ১১ বছর বয়সেই গাজার জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তারকা ছিলেন। একইসঙ্গে নিহত হয়েছেন ডাক্তার আলা আমির আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই। একমাত্র জীবিত সন্তান ১১ বছর বয়সী আদম এখনও আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

প্রায় তিন মাস ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করেছে, অল্প সময়ের মধ্যেই হাজার হাজার শিশু অনাহারে মারা যেতে পারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের ১৯ মাসের হামলায় এখন পর্যন্ত যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩১ শতাংশই শিশু। উল্লেখ্য, এ হিসাব শুধু শনাক্তকৃত মৃতদের নিয়ে; বহু মৃত্যুর তথ্য এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল বারবার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এর ফলে শিশুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে, শিশু মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে