মানিলন্ডারিং আইনে মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের সশ্রম, ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর ও জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এ রায় দেন।
উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন পেয়েছেন পাপিয়া। অসুস্থতার কারণে আজ আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া সময় চেয়ে আবেদন করেন। তবে আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করেন। অপর চার আসামির মধ্যে জুবায়ের শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। তিন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেকবই, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় অর্থপাচার মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করে। ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অর্থপাচার মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। ২০২২ সালের ২১ আগস্ট পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচারে আদালত ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেলে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন পাপিয়া। এরপর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।