ঢাকা ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

এক বছরেও শেষ হয়নি রাস্তা তৈরি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

এক বছরেও শেষ হয়নি রাস্তা তৈরি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কের সংস্কার ও আরসিসি ঢালাইের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি এক বছরেও। কালক্ষেপণ করে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তবে কাজ বন্ধ নয়, নির্মাণসামগ্রীর সংকটের কারণে কাজ শেষ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ০১ এর পূর্বপাশ থেকে শহীদ মুগ্ধ মেডিকেল সেন্টার পর্যন্ত রাস্তা (আরসিসি ঢালাই) এবং রাস্তা সংলগ্ন ড্রেন নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ পায় কেএমসি ব্রিকস নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তবে কাজ শুরু করার পর থেকে কাজে নিম্নমানের রড ব্যবহার সহ অবহেলার অভিযোগ উঠে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। সংখ্যা অনুপাতে কম সংখ্যক রড ব্যবহার করার কারণে সাময়িক সময় রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ১১’শ ফুট রাস্তাটি আরসিসি ঢালাই ও ড্রেন নির্মাণের জন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ২৩ লক্ষ ৮ হাজার টাকা। শর্তাবলীতে বলা হয়, কার্যাদেশ গ্রহণের এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে নির্মাণ কাজ। যার মেয়াদ শেষ হবে ২০ মে, ২০২৫।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাজের মেয়াদ শেষ হলেও পুরোপুরি শেষ হয়নি এখনো পুরো রাস্তা নির্মাণের কাজ। শান্তিনিকেতন মোড় থেকে মেডিকেল সেন্টার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি ঢালাই। ফেলে রাখা হয়েছে রড-সিমেন্ট। রাস্তার এই অংশে নিয়মিত হাঁটাচলা করে হাজারো শিক্ষার্থী। কিন্তু সেখানে দীর্ঘদিন ধরে রড বিছিয়ে রাখা হলেও দেওয়া হয়নি ঢালাই। যা সৃষ্টি করেছে জনদুর্ভোগের। তাছাড়া এখনো শুরু হয়নি সড়ক সংলগ্ন ড্রেন নির্মাণের কাজ। ফলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে প্রতিনিয়ত রড ও বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীতে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন তারা। কাজ বন্ধ থাকার কারণে রাস্তা দিয়ে চলতে পারছে না কোন গাড়ি, ফলে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় হেঁটেই যেতে তাদেরকে। নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী সৈয়দ হোসেন বলেন, “ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাতে বা কম আলোয় বন্ধ রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। অবিলম্বে রাস্তার নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাস্তাটির নির্মাণ কাজ কতদিনের মধ্যে শেষ হবে, সে বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে তা প্রকাশ করতে হবে। নির্মাণ কাজের গুণগত মান এবং অগ্রগতি নিয়মিত তদারকি করার ব্যবস্থা করতে হবে।”

আরেক শিক্ষার্থী আল মাহমুদ বলেন, “এই রাস্তায় অসম্পূর্ণ কাজের ফলে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে কারণ খোলা রড পড়ে থাকার শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তাছাড়া রাতের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় বৃষ্টি হলে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়াও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করার অনীহা পরীলক্ষিত হচ্ছে। আমি চাই আগামীতে এমন কোন প্রতিষ্ঠানকে যাতে কাজ না দেওয়া হয়। প্রশাসনের এ ব্যাপারে দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কেএমসি ব্রিকসের প্রতিনিধি ইমদাদুল হক ওরফে রুমেল বলেন, “রাস্তা তৈরির কাজটি আমরা গত বছর শুরু করার পর প্রথমে শিক্ষকদের আন্দোলন, পরে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং সবশেষে বন্যার কারণে প্রায় চারমাস পিছিয়ে পড়ি। যার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তবে হ্যা বিগত এক-দুই মাস আমরা বেশ কয়েকটি সমস্যার কারণে কাজ চালাতে পারেনি। তারমধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে চাহিদা মোতাবেক ভালোমানের পাথর না পাওয়া। আমাদের দেশে যে পাথরগুলো পাওয়া সেগুলো গুণগত সম্পন্ন না হওয়ায় ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। সেজন্য একটু দেরি হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্টের বিষয়টি আমরা বুঝতে পেরেছি। বিশেষ করে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীদেরও কাছে এটি দৃষ্টিকটু ভাবে ফুটে উঠেছে। আমি সেজন্য আমার প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। ইতিমধ্যে কিছু পাথর খালাস হয়েছে, আরও কিছু পাথর আসবে কয়েকদিনের মধ্যে। এই সপ্তাহেই কাজ পুনরায় শুরু হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী জামাল হোসেনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন। তিনি এসময় বলেন, “ভিসি স্যার আমাকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার জন্য অনুমতি দেয়নি। আপনি জনসংযোগ অফিসের সাথে যোগাযোগ করেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের তদারকি কমিটির সভাপতি ও নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হানিফ মুরাদ বলেন, “রাস্তার কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে ঐ ঠিকাদার কে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। সে কিছু কারণ দেখিয়ে আরও কিছুদিন সময় চেয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় আমরা তাকে সময় দিবো, কিন্তু তারপরও সে যদি কাজে অবহেলা করে এবং ঐ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে তবে তার জামানত

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের কুরআন অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

এক বছরেও শেষ হয়নি রাস্তা তৈরি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

আপডেট সময় ১০:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কের সংস্কার ও আরসিসি ঢালাইের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি এক বছরেও। কালক্ষেপণ করে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তবে কাজ বন্ধ নয়, নির্মাণসামগ্রীর সংকটের কারণে কাজ শেষ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ০১ এর পূর্বপাশ থেকে শহীদ মুগ্ধ মেডিকেল সেন্টার পর্যন্ত রাস্তা (আরসিসি ঢালাই) এবং রাস্তা সংলগ্ন ড্রেন নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ পায় কেএমসি ব্রিকস নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তবে কাজ শুরু করার পর থেকে কাজে নিম্নমানের রড ব্যবহার সহ অবহেলার অভিযোগ উঠে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। সংখ্যা অনুপাতে কম সংখ্যক রড ব্যবহার করার কারণে সাময়িক সময় রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ১১’শ ফুট রাস্তাটি আরসিসি ঢালাই ও ড্রেন নির্মাণের জন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ২৩ লক্ষ ৮ হাজার টাকা। শর্তাবলীতে বলা হয়, কার্যাদেশ গ্রহণের এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে নির্মাণ কাজ। যার মেয়াদ শেষ হবে ২০ মে, ২০২৫।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাজের মেয়াদ শেষ হলেও পুরোপুরি শেষ হয়নি এখনো পুরো রাস্তা নির্মাণের কাজ। শান্তিনিকেতন মোড় থেকে মেডিকেল সেন্টার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি ঢালাই। ফেলে রাখা হয়েছে রড-সিমেন্ট। রাস্তার এই অংশে নিয়মিত হাঁটাচলা করে হাজারো শিক্ষার্থী। কিন্তু সেখানে দীর্ঘদিন ধরে রড বিছিয়ে রাখা হলেও দেওয়া হয়নি ঢালাই। যা সৃষ্টি করেছে জনদুর্ভোগের। তাছাড়া এখনো শুরু হয়নি সড়ক সংলগ্ন ড্রেন নির্মাণের কাজ। ফলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে প্রতিনিয়ত রড ও বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীতে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন তারা। কাজ বন্ধ থাকার কারণে রাস্তা দিয়ে চলতে পারছে না কোন গাড়ি, ফলে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় হেঁটেই যেতে তাদেরকে। নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী সৈয়দ হোসেন বলেন, “ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাতে বা কম আলোয় বন্ধ রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। অবিলম্বে রাস্তার নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাস্তাটির নির্মাণ কাজ কতদিনের মধ্যে শেষ হবে, সে বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে তা প্রকাশ করতে হবে। নির্মাণ কাজের গুণগত মান এবং অগ্রগতি নিয়মিত তদারকি করার ব্যবস্থা করতে হবে।”

আরেক শিক্ষার্থী আল মাহমুদ বলেন, “এই রাস্তায় অসম্পূর্ণ কাজের ফলে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে কারণ খোলা রড পড়ে থাকার শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তাছাড়া রাতের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় বৃষ্টি হলে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়াও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করার অনীহা পরীলক্ষিত হচ্ছে। আমি চাই আগামীতে এমন কোন প্রতিষ্ঠানকে যাতে কাজ না দেওয়া হয়। প্রশাসনের এ ব্যাপারে দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কেএমসি ব্রিকসের প্রতিনিধি ইমদাদুল হক ওরফে রুমেল বলেন, “রাস্তা তৈরির কাজটি আমরা গত বছর শুরু করার পর প্রথমে শিক্ষকদের আন্দোলন, পরে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং সবশেষে বন্যার কারণে প্রায় চারমাস পিছিয়ে পড়ি। যার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তবে হ্যা বিগত এক-দুই মাস আমরা বেশ কয়েকটি সমস্যার কারণে কাজ চালাতে পারেনি। তারমধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে চাহিদা মোতাবেক ভালোমানের পাথর না পাওয়া। আমাদের দেশে যে পাথরগুলো পাওয়া সেগুলো গুণগত সম্পন্ন না হওয়ায় ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। সেজন্য একটু দেরি হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্টের বিষয়টি আমরা বুঝতে পেরেছি। বিশেষ করে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীদেরও কাছে এটি দৃষ্টিকটু ভাবে ফুটে উঠেছে। আমি সেজন্য আমার প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। ইতিমধ্যে কিছু পাথর খালাস হয়েছে, আরও কিছু পাথর আসবে কয়েকদিনের মধ্যে। এই সপ্তাহেই কাজ পুনরায় শুরু হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী জামাল হোসেনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন। তিনি এসময় বলেন, “ভিসি স্যার আমাকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার জন্য অনুমতি দেয়নি। আপনি জনসংযোগ অফিসের সাথে যোগাযোগ করেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের তদারকি কমিটির সভাপতি ও নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হানিফ মুরাদ বলেন, “রাস্তার কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে ঐ ঠিকাদার কে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। সে কিছু কারণ দেখিয়ে আরও কিছুদিন সময় চেয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় আমরা তাকে সময় দিবো, কিন্তু তারপরও সে যদি কাজে অবহেলা করে এবং ঐ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে তবে তার জামানত