মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ । আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করে রায় দিতে যাচ্ছেন আদালত। এ আদালতের বিচারক এম জাহিদ হাসান ১২ কর্মদিবস শুনানি শেষে এ আদেশের দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
সরকারের বিশেষ গুরুত্ব বিবেচনায় এ মামলায় মাত্র ১২ কর্মদিবসে সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বাদী ও আইনজীবীরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
বাদীপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সামাজি বলেন, এই ট্রাইবুনালে আমি ‘ল’ পয়েন্টসের উপরে আর্গুমেন্ট করেছি। সোমবার পর্যন্ত এই মামলায় পাবলিক প্রসিকিউটরসহ অন্যান্য আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষে আর্গুমেন্ট কন্ট্রোল করেছেন। সাবমিশনে আমি বলেছি, এই মামলায় প্রসিকিউশন কেইসের বর্ণনা ও অভিযোগ অনুযায়ী সকল আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হিটু শেখের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, মেডিকেল সাক্ষ্য, পারিপার্শ্বিক স্বাক্ষ্যসহ যা কিছু সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলিকে পর্যালোচনা ও সাম্প্রতিককালে উচ্চ আদালতের যে নজির ও অবজারভেশনগুলি রয়েছে সে অনুযায়ী মূল অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা দাবি করেছি। একইসঙ্গে অন্যান্য আসামিদেরও মামলার ধারা অনুযায়ী আইনানুগ শাস্তি আমরা দাবি করেছি। আমরা বিশ্বাস করি এই মামলায় প্রসিকিউশন ন্যায় বিচার পাবে। কারণ আপনারা জানেন এই মামলাটিকে সরকার গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে ট্রিট করেছেন।
মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের স্পেশাল পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলায় দ্রুত ও সকল ধরনের আইনগত পদ্ধতি মেনে সকল আসামি ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে সপ্তাহের প্রতি কর্মদিবসে সাক্ষ্যসহ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্যেক সাক্ষীকে জেরা করছেন আসামিপক্ষে লিগ্যাল এইড নিয়োজিত আইনজীবী।
গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন রাত ১০টার দিকে জেলার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে মামলার ৪ আসামিকেই অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহত শিশুর বোনজামাই সজিব শেখ ও তার ভাই রাতুল শেখকে খুন ও জখমের ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগমকে তথ্য গোপনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ শনিবার মাগুরা সদরের নান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যায় ভুক্তভোগী ওই শিশু। ৫ মার্চ বুধবার রাতে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ ওই শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার চেষ্টা করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ওই শিশু মারা যায়।
এ ঘটনায় ৮ মার্চ নিহত শিশুর মা বাদী হয়ে ৪ জনের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। ঘটনাটি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ও আলোচনার সৃষ্টি হয়।