ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রোগ শুনে গুগলে সার্চ করে চিকিৎসা দেন ডাক্তার

ভটকন্ডী গ্রাম। একজন রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার ইঞ্জেকশন দেন। রোগী সুস্থ হন, কিন্তু উঠে দাঁড়াতেই মুখ থুবড়ে পড়েন, এবং সাথে সাথেই মারা যান।

মৃত রোগীর শেষ কৃত্যের সময় সবাই কাঁদছিলেন। ডাক্তারও কাঁদছিলেন। তাকে বলা হয়, ‘কেঁদো না, তুমি কাঁদছ কেন?’ ডাক্তার তখন বলেন, ‘কাঁদবো না? উনি ছিলেন আমার সবচেয়ে পুরাতন রোগী তার ওপরই আমি আমার সমস্ত এক্সপেরিমেন্ট করতাম।’
এটা এমন একটা গ্রাম যেখানে কোনো ভালো চিকিৎসক নেই।

ভটকন্ডী গ্রাম শুধু একটি গ্রাম নয়, পুরো ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিত্র এই ওয়েব সিরিজে উঠে এসেছে। যেখানে কোনো রহস্য রোমাঞ্চ নেই, আছে মানুষের জীবন যাবেন। মানুষের আঁকড়ে ধরে থাকা বিশ্বাস। সরকারি এক গ্রাম্য চিকিৎসালয় রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে মাদকসেবীরা আখড়া বসান।

দপ্তর থেকে সরকারি ওষুধ আসে, কম্পাউন্ডার সেসব বিক্রি করে ফেলেন। সেই গ্রাম্য চিকিৎসালয়ে গ্রামের মানুষ যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারেননা। ফলে হাতুড়ে ডাক্তারই ভরসা।
গ্রাম্য চিকিৎসালয় নামের যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সেখানে কোনো চিকিৎসক এসে থাকার কথা ভাবতেই পারেন না। ইন্টারনেটের যুগে সবকিছুই এগিয়ে গেলেও গ্রামের মানুষের জীবন এগোয়নি।

ফলে হাতুড়ে ডাক্তাররা সুযোগ নিয়ে নেন। এই গ্রামেও যে একজন হাতুড়ে ডাক্তার রয়েছেন। তার হাতে রোগী বাঁচুক মরুক তাতে যায় আসে না। কিন্তু তার কাছেই সবাই চিকিৎসা নিতে যায়। তিনি রোগ শুনে বুঝে উঠতে পারেননা, এই রোগের চিকিৎসা কী! রোগীর কাছে রোগ শোনেন আর তা লিখে গুগলে সার্চ দেন। গুগুল যে ফল দেয়, সেভাবেই ওষুধ লিখে দেন। ডাক্তারকে রোগী জিজ্ঞেস করেন, ‘এতে ঠিক হবে তো?’ ডাক্তার বলেন, ‘তোমাকে যে ওষুধ দিলাম তাতে যদি রোগ ভালো হয়ে যায় তাহলে বুঝবো ঠিক চিকিৎসা হয়েছে।’
ঠিক এভাবেই চলে গ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এর মাঝে একজন এমববিএস পাশ করা চিকিৎসক আসেন। কম্পাউন্ডার ক্লিনার, সহযোগি, নার্স যারা চিকিৎসা কেন্দ্রে না এসেই বেতন নেন- তারা ভেবেছিলেন ওই চিকিৎসক চলে যাবেন। কিন্তু শহর থেকে সদ্য ডিগ্রি নিয়ে আসা তরুণ চিকিৎসকের মধ্যে কাজ করে জেদ, মানুষের সেবা করার তাগিদ। তিনি শত প্রতিকূল অবস্থাতেই গ্রামে থাকবেন, মানুষের চিকিৎসা করাবেন।

কিন্তু কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষের মনে আলো প্রবেশ করানো কি এতই সোজা? কাহিনি এগিয়ে যাবে। আর ফ্রেমের পর দেখা যাবে তরুণ চিকিৎসক, কী করছেন আর কী করছেন না। কী পারছেন, কী পারছেন না। ৫ পর্বের এই সিরিজ খুবই সাদামাটা হলেও নিমিষেই দেখে শেষ করে ফেলা যায়, কোথাও বিরক্তিবোধ আসে না।

সিরিজ মুক্তির আগেই ঘটা করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ‘ফ্রম দ্য মেকার্স অফ পঞ্চায়েত’। মুক্তির আগে থেকেই ‘গ্রাম চিকিৎসালয়’ সিরিজের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল ‘পঞ্চায়েত’-এর নাম। ফলে পুরো সিরিজে পঞ্চায়েত-এর একটি আবহ পাওয়া যাবে।

বিনয় পাঠক এবং অমল পরাশরের মতো চেনা অভিনেতারা রয়েছেন এই সিরিজে বাকি অধিকাংশই অচেনা। অভিনেতা হিসাবে বিনয় যে ধরনের চরিত্রে কাজ করতে পছন্দ করেন, এই সিরিজেও তার অন্যথা হয়নি। বিনয়-ই সেই হাতুড়ে ডাক্তারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আর শহর থেকে আসা তরুণ চিকিৎসকের ভূমিকায় রয়েছেন অমল পরাশর। দীপক মিশ্রার নতুন এই সিরিজ পঞ্চায়েতের মতো মজা দিতে না পারলেও মন্দ লাগবে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

উপদেষ্টা মাহফুজকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান, বোতল নিক্ষেপ

রোগ শুনে গুগলে সার্চ করে চিকিৎসা দেন ডাক্তার

আপডেট সময় ০৬:০২:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

ভটকন্ডী গ্রাম। একজন রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার ইঞ্জেকশন দেন। রোগী সুস্থ হন, কিন্তু উঠে দাঁড়াতেই মুখ থুবড়ে পড়েন, এবং সাথে সাথেই মারা যান।

মৃত রোগীর শেষ কৃত্যের সময় সবাই কাঁদছিলেন। ডাক্তারও কাঁদছিলেন। তাকে বলা হয়, ‘কেঁদো না, তুমি কাঁদছ কেন?’ ডাক্তার তখন বলেন, ‘কাঁদবো না? উনি ছিলেন আমার সবচেয়ে পুরাতন রোগী তার ওপরই আমি আমার সমস্ত এক্সপেরিমেন্ট করতাম।’
এটা এমন একটা গ্রাম যেখানে কোনো ভালো চিকিৎসক নেই।

ভটকন্ডী গ্রাম শুধু একটি গ্রাম নয়, পুরো ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিত্র এই ওয়েব সিরিজে উঠে এসেছে। যেখানে কোনো রহস্য রোমাঞ্চ নেই, আছে মানুষের জীবন যাবেন। মানুষের আঁকড়ে ধরে থাকা বিশ্বাস। সরকারি এক গ্রাম্য চিকিৎসালয় রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে মাদকসেবীরা আখড়া বসান।

দপ্তর থেকে সরকারি ওষুধ আসে, কম্পাউন্ডার সেসব বিক্রি করে ফেলেন। সেই গ্রাম্য চিকিৎসালয়ে গ্রামের মানুষ যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারেননা। ফলে হাতুড়ে ডাক্তারই ভরসা।
গ্রাম্য চিকিৎসালয় নামের যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সেখানে কোনো চিকিৎসক এসে থাকার কথা ভাবতেই পারেন না। ইন্টারনেটের যুগে সবকিছুই এগিয়ে গেলেও গ্রামের মানুষের জীবন এগোয়নি।

ফলে হাতুড়ে ডাক্তাররা সুযোগ নিয়ে নেন। এই গ্রামেও যে একজন হাতুড়ে ডাক্তার রয়েছেন। তার হাতে রোগী বাঁচুক মরুক তাতে যায় আসে না। কিন্তু তার কাছেই সবাই চিকিৎসা নিতে যায়। তিনি রোগ শুনে বুঝে উঠতে পারেননা, এই রোগের চিকিৎসা কী! রোগীর কাছে রোগ শোনেন আর তা লিখে গুগলে সার্চ দেন। গুগুল যে ফল দেয়, সেভাবেই ওষুধ লিখে দেন। ডাক্তারকে রোগী জিজ্ঞেস করেন, ‘এতে ঠিক হবে তো?’ ডাক্তার বলেন, ‘তোমাকে যে ওষুধ দিলাম তাতে যদি রোগ ভালো হয়ে যায় তাহলে বুঝবো ঠিক চিকিৎসা হয়েছে।’
ঠিক এভাবেই চলে গ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এর মাঝে একজন এমববিএস পাশ করা চিকিৎসক আসেন। কম্পাউন্ডার ক্লিনার, সহযোগি, নার্স যারা চিকিৎসা কেন্দ্রে না এসেই বেতন নেন- তারা ভেবেছিলেন ওই চিকিৎসক চলে যাবেন। কিন্তু শহর থেকে সদ্য ডিগ্রি নিয়ে আসা তরুণ চিকিৎসকের মধ্যে কাজ করে জেদ, মানুষের সেবা করার তাগিদ। তিনি শত প্রতিকূল অবস্থাতেই গ্রামে থাকবেন, মানুষের চিকিৎসা করাবেন।

কিন্তু কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষের মনে আলো প্রবেশ করানো কি এতই সোজা? কাহিনি এগিয়ে যাবে। আর ফ্রেমের পর দেখা যাবে তরুণ চিকিৎসক, কী করছেন আর কী করছেন না। কী পারছেন, কী পারছেন না। ৫ পর্বের এই সিরিজ খুবই সাদামাটা হলেও নিমিষেই দেখে শেষ করে ফেলা যায়, কোথাও বিরক্তিবোধ আসে না।

সিরিজ মুক্তির আগেই ঘটা করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ‘ফ্রম দ্য মেকার্স অফ পঞ্চায়েত’। মুক্তির আগে থেকেই ‘গ্রাম চিকিৎসালয়’ সিরিজের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল ‘পঞ্চায়েত’-এর নাম। ফলে পুরো সিরিজে পঞ্চায়েত-এর একটি আবহ পাওয়া যাবে।

বিনয় পাঠক এবং অমল পরাশরের মতো চেনা অভিনেতারা রয়েছেন এই সিরিজে বাকি অধিকাংশই অচেনা। অভিনেতা হিসাবে বিনয় যে ধরনের চরিত্রে কাজ করতে পছন্দ করেন, এই সিরিজেও তার অন্যথা হয়নি। বিনয়-ই সেই হাতুড়ে ডাক্তারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আর শহর থেকে আসা তরুণ চিকিৎসকের ভূমিকায় রয়েছেন অমল পরাশর। দীপক মিশ্রার নতুন এই সিরিজ পঞ্চায়েতের মতো মজা দিতে না পারলেও মন্দ লাগবে না।