ঢাকা ০৮:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা সাইয়েদ Logo ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি দিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় Logo সাম্য হত্যার প্রতিবাদে এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo হরিরামপুরে ইছামতি নদীর বুকে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোয় জনজীবনে দুর্ভোগ Logo রোগ শুনে গুগলে সার্চ করে চিকিৎসা দেন ডাক্তার Logo সাম্য হত্যার প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ Logo সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন বিজিবি সদস্য Logo জুনের মধ্যে দেশে ঋণ সহায়তা আসছে সাড়ে ৩ বিলিয়ন Logo হাইকোর্টে জামিন পেলেন জোবাইদা রহমান Logo ঢাবি ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

মুরাদনগরে মব লিঞ্চিং: যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩

মুরাদনগরে মব লিঞ্চিং: যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩

কুমিল্লার মুরাদনগরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে  চোর আখ্যা দিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে এলাকাবাসী।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত কালারাইয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে মোস্তফা (৪৩),  সেলিম (২৮) ও নজরুল ইসলামের ছেলে রাব্বি আহমেদ (২১) কে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে বাঙ্গরা থানা পুলিশ। নিহত  সাদ্দাম হোসেন (৩২) শ্রীকাইল ইউনিয়নের ইউনিয়নের রোয়াচালা গ্রামের ইরন মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, গত শুক্রবার ( ৯ মে) রাতে কালারাইয়া লাডুম শাহ মাজারের খাদেম  কাউছার মোল্লা সাদ্দাম হোসেনকে ফোনে  বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়।  সেখানে  কাউছার মোল্লার নেতৃত্বে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত বুধবার বিকেলে রোয়াচালা গ্রামের  কয়েক শ’ গ্রামবাসী শ্রীকাইল – নবীপুর সড়কের ধনপতিখোলায়  মানববন্ধন করেন। রোয়াচালা গ্রামবাসীসহ আশে পাশের গ্রামের নানা শ্রেণী-পেশার লোকজন উক্ত  মানববন্ধনে অংশ নেন ।

মানববন্ধনে গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা  বলেন,” খাদেম  কাউছার মোল্লা রোয়াচালা গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দামকে  রাতে ফোন করে ডেকে নেন পরে চোর বলে মব সৃষ্টি করে গাছের বেঁধে কালারাইয়া গ্রামের সেলিম,  মোস্তফা, রাব্বিসহ  আরও কয়েকজন মিলে সাদ্দামকে  পিটিয়ে হত্যা করে।

মানববন্ধনে নিহতের পিতা-মাতা ও স্ত্রী সন্তানেরা দাবি করেন সাদ্দামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরে চোর বলে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে দেয়। নিহতের  শিশুপুত্র সাব্বির (১০)  ও মেয়ে তমা (৮) পিতৃহত্যার  বিচার দাবি করে। তারা বলেন, আমার ” আব্বুকে ফিরিয়ে দেন। না হলে  যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি দেন। ”

স্হানীয়রা বলেন, কাউছার মোল্লা  লাডুম শাহ মাজারের খাদেম।  মাজারটি কালারাইয়া গ্রামের নিরিবিলি পরিবেশে বাউন্ডারি বেষ্টিত হওয়ায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন কাউছার মোল্লা  মাজারে নানা অপকর্ম করে আসছেন। তাঁরা দাবি করেন এ হত্যাকান্ড  কাউছার মোল্লার কারণে ঘটেছে ।

মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়,  সাদ্দাম হোসেন  চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের মসলা দোকানে শ্রমিকের কাজ করতো, তার স্ত্রী মিনু আক্তার  গার্মেন্টস কর্মী।  নিহত সাদ্দাম দুই শিশু সন্তানের জনক।

চট্টগ্রাম থেকে মা-বাবাকে দেখতে ছোট মেয়ে তৈয়বা আক্তার তমাকে  (৮) নিয়ে ৩ মে  গ্রামের  বাড়ি রোয়াচালা  আসেন। ৯ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে রোয়াচালা বাজারের উদ্দেশ্য বেরিয়ে যান। রাতে ঘরে না ফেরায় পরদিন সকালে  জানতে পারেন পাশের গ্রাম কালারাইয়া সেলিম  মিয়ার বাড়িতে গাছের সাথে  বেঁধে চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে  রাতভর নির্যাতন করে সাদ্দামকে হত্যা করা হয়েছে ।

এঘটনায় নিহতের পিতা  ইরন মিয়া বাদী হয়ে ৩ জনকে নামীয়  আরও অজ্ঞাতসহ আসামী করে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এবিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, সাদ্দাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৩ জনকে আটক করে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে। আসামী রাব্বি কোর্টে ১৬৪ ধায়ায় জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার মূল কারণ উদ্ঘাটন করতে তদন্ত চলছে ।

জনপ্রিয় সংবাদ

সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা সাইয়েদ

মুরাদনগরে মব লিঞ্চিং: যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩

আপডেট সময় ০২:০৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

কুমিল্লার মুরাদনগরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে  চোর আখ্যা দিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে এলাকাবাসী।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত কালারাইয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে মোস্তফা (৪৩),  সেলিম (২৮) ও নজরুল ইসলামের ছেলে রাব্বি আহমেদ (২১) কে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে বাঙ্গরা থানা পুলিশ। নিহত  সাদ্দাম হোসেন (৩২) শ্রীকাইল ইউনিয়নের ইউনিয়নের রোয়াচালা গ্রামের ইরন মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, গত শুক্রবার ( ৯ মে) রাতে কালারাইয়া লাডুম শাহ মাজারের খাদেম  কাউছার মোল্লা সাদ্দাম হোসেনকে ফোনে  বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়।  সেখানে  কাউছার মোল্লার নেতৃত্বে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত বুধবার বিকেলে রোয়াচালা গ্রামের  কয়েক শ’ গ্রামবাসী শ্রীকাইল – নবীপুর সড়কের ধনপতিখোলায়  মানববন্ধন করেন। রোয়াচালা গ্রামবাসীসহ আশে পাশের গ্রামের নানা শ্রেণী-পেশার লোকজন উক্ত  মানববন্ধনে অংশ নেন ।

মানববন্ধনে গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা  বলেন,” খাদেম  কাউছার মোল্লা রোয়াচালা গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দামকে  রাতে ফোন করে ডেকে নেন পরে চোর বলে মব সৃষ্টি করে গাছের বেঁধে কালারাইয়া গ্রামের সেলিম,  মোস্তফা, রাব্বিসহ  আরও কয়েকজন মিলে সাদ্দামকে  পিটিয়ে হত্যা করে।

মানববন্ধনে নিহতের পিতা-মাতা ও স্ত্রী সন্তানেরা দাবি করেন সাদ্দামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরে চোর বলে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে দেয়। নিহতের  শিশুপুত্র সাব্বির (১০)  ও মেয়ে তমা (৮) পিতৃহত্যার  বিচার দাবি করে। তারা বলেন, আমার ” আব্বুকে ফিরিয়ে দেন। না হলে  যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি দেন। ”

স্হানীয়রা বলেন, কাউছার মোল্লা  লাডুম শাহ মাজারের খাদেম।  মাজারটি কালারাইয়া গ্রামের নিরিবিলি পরিবেশে বাউন্ডারি বেষ্টিত হওয়ায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন কাউছার মোল্লা  মাজারে নানা অপকর্ম করে আসছেন। তাঁরা দাবি করেন এ হত্যাকান্ড  কাউছার মোল্লার কারণে ঘটেছে ।

মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়,  সাদ্দাম হোসেন  চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের মসলা দোকানে শ্রমিকের কাজ করতো, তার স্ত্রী মিনু আক্তার  গার্মেন্টস কর্মী।  নিহত সাদ্দাম দুই শিশু সন্তানের জনক।

চট্টগ্রাম থেকে মা-বাবাকে দেখতে ছোট মেয়ে তৈয়বা আক্তার তমাকে  (৮) নিয়ে ৩ মে  গ্রামের  বাড়ি রোয়াচালা  আসেন। ৯ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে রোয়াচালা বাজারের উদ্দেশ্য বেরিয়ে যান। রাতে ঘরে না ফেরায় পরদিন সকালে  জানতে পারেন পাশের গ্রাম কালারাইয়া সেলিম  মিয়ার বাড়িতে গাছের সাথে  বেঁধে চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে  রাতভর নির্যাতন করে সাদ্দামকে হত্যা করা হয়েছে ।

এঘটনায় নিহতের পিতা  ইরন মিয়া বাদী হয়ে ৩ জনকে নামীয়  আরও অজ্ঞাতসহ আসামী করে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এবিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, সাদ্দাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৩ জনকে আটক করে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে। আসামী রাব্বি কোর্টে ১৬৪ ধায়ায় জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার মূল কারণ উদ্ঘাটন করতে তদন্ত চলছে ।