সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার এবং আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১২মে) সকালে কলেজের প্রধান ফটকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করেন।
কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাহান সাইফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সিলেটের বিভাগীয় প্রতিনিধি সৈয়দ আকরাম আল সাহান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুহুল ইসলাম, প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ ইসমাইল, বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার, বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্লাবন আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এমসি কলেজের মতো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন বর্বরতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ধর্ষণের শিকার শুধু একজন নারীই হননি, বরং এটি সমগ্র নারীসমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কলঙ্কজনক। স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা এই ঘটনার বিচার করতে দেয়নি; বরং তারা এটি আপসে শেষ করতে চেয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর বিচার শেষ করে আসামিদের ফাঁসি দিতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।
আয়েশা আক্তার নামের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা আমরা ক্যাম্পাসে আসলে মেয়েদের বলত যে তোমাদের কোনো সমস্যা হলে আমাদের বলবা। এটা বলার পরে আবার ইনবক্সে গিয়ে সেক্সুয়াল হ্যারেজমেন্ট করত। এ ছাড়া বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে তারা জড়িত আছে। আমরা চাই অতি দ্রুত যেন তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর সব আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেপ্তার আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার বিচার, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে। এদিন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার পরবর্তী শুনানির দিন ১৩ মে নির্ধারণ করেন।