সুন্দরগঞ্জ উপজেলার একমাত্র ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন নিজেই যেন ‘অসুস্থ’। প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ভরসাস্থল এই হাসপাতালটি চরম জনবল সংকটে ভুগছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও কর্মচারী না থাকায় প্রতিদিন সেবা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে রোগীর উপচে পড়া ভিড়। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সীমিত সংখ্যক ডাক্তারদের ওপর চাপ বাড়ছে, যার ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫০০ রোগীকে বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে সেবা দিতে হয়। কিন্তু ২৩টি মেডিকেল অফিসারের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪ জন। একজন রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং দুইজন প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত। চিকিৎসক সংকটের কারণে বহুদিন ধরে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে। নেই কোনো গাইনী চিকিৎসক, ফলে বন্ধ রয়েছে সিজারিয়ান ডেলিভারিও।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩১৬টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ১১৭টি পদ শূন্য, যা মোট জনবলের ৩৭ শতাংশ। মঞ্জুরীকৃত ৯টি মেডিকেল অফিসারের ৫টি পদ ফাঁকা। ১১টি জুনিয়র কনসালটেন্ট পদের মধ্যে ৯টিই শূন্য। ১৩টি সহকারী সার্জন পদের মধ্যে ১০টি শূন্য। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো— ১৭টি উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের সবগুলো পদই শূন্য।
ড্রাইভার না থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, যা জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের ভোগান্তি আরও বাড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম মঞ্জু, সাবেক পৌর মেয়র নুরুন্নবী প্রামানিক সাজু, এবং বিএনপির উপজেলা সদস্য সচিব মাহামুদুর হাসান প্রামানিক, গাইবান্ধা জেলা ইসলামী ছাএশিবিরের স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নুরাহি সাগর, ইসলামি ছাএশিবিরের সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মো :সোহান ইসলাম বলেন “সুন্দরগঞ্জ একটি বৃহৎ উপজেলা, যার অধীনে ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। এ বিপুল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ জরুরি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও জানান, শূন্য পদ পূরণের জন্য চাহিদাপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত জনবল নিয়োগ পেলে স্বাস্থ্যসেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।