নাটোরের লালপুরে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সুজাত (৩৫) নামে এক বিএনপিকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এঘটনায় আরো পাঁচজন আহত হয়েছে।
ঘটনার পর ওই এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফুর ছেলে মেহেদী হাসান মুনসহ নয়জনকে পুলিশ আটক করেছে।
গতকাল সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টায় দিকে লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিতে আহত সুজাত জানান, তাকে নান্নু নামে একজন গুলি করেছে। ফরহাদ হোসেন নান্নু উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার রামকৃষ্ণপুর মন্ডল পাড়া গ্রামের মৃত আমির হোসেন টেগুর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি ও স্থানীয় মুসল্লীদের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ঘটনায় এক পর্যায়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক পলাশ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন নান্নুর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও গুলি ছুড়লে সুজাত নামের এক বিএনপিকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় সাব্বির (২৪), মহসিন মন্ডল (৩২), জিয়া (৪৫)সহ পাঁচজন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক উপস্থিত লালপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ মুসল্লীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম লুলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, বিএনপি নেতা এ টি এম জাহিদুল আলম ডলার ও জিয়াউর, আলাউদ্দিন।
তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিকল্পিতভাবে ঈদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তারা।
লালপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক কালু বলেন, রামকৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে পলাশ চেয়ারম্যান নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলিবর্ষণ করতে করতে রামকৃষ্ণপুর মোড়ে প্রবেশ করে। এসময় সুজাত নামের এক বিএনপিকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক বলেন, এঘটনায় নয়জনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।