২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে নিহতদের মধ্যে ৯৩ জনের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তালিকাটি প্রাথমিক খসড়া এবং এ সংখ্যা যাচাই-বাছাইয়ের পর আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার (৪ মে) হেফাজতের জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বশীল মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী এই তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে প্রকাশিত নিহত শহীদের তালিকায় রয়েছে মুন্সীগঞ্জের ৩জনের নাম।
তারা হলেন, শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর এলাকার মৃত কাজী আজিজুল হকের ছেলে কাজী মোঃ রফিকুল হক(৪৩), সিরজাদিখান উপেজলার খাসমহল বালুচর এলাকার মোহাম্মদ মীরের ছেলে দ্বীন ইসলাম মীর(৩৮) ও একই উপজেলার সাপেরচর এলাকার কারী নেয়ামতউল্লাহর ছেলে মাওলানা যুবায়ের। ৯৩জনের তালিকায় তাদের নাম পর্যাক্রমে ৮, ১১ ও ৭৩নংয়ে দেখা গেছে।
নিহতদের মধ্যে রফিকুল হক ও দ্বীন ইসলাম মীর ঘটনার দিন গুলিবৃদ্ধ হয়ে মারা যায় বলে উল্লেখ্য করা হয়েছ। প্রকাশিত তালিকার তথ্যমতে, পরদিন ৬মে দ্বীন ইসলামের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাওয়া যায়। যুবায়েরর সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া না গেলেও রফিকুলকে মাতুয়াইল কবরস্থান ও দ্বীন ইসলামকে ভাসানচর দাফন করা হয়েছে।
তালিকাকার বিষয়েছ আজহারী জানান, এটি একটি প্রাথমিক খসড়া তালিকা এবং যাচাই-বাছাই শেষে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তালিকা চূড়ান্ত করতে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ব্লগারদের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননা ও নারীনীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হাজার হাজার কওমি আলেম শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মুসলমান মহাসমাবেশে অংশ নেন। সেদিন রাত গভীর হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে সরিয়ে দেয় তাদের। অভিযানে ব্যাপক গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়া হয়। হেফাজতে ইসলামের দাবি, ওইদিন অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে তারা কোনো তালিকা পেশ করতে পারেনি। এটা নিয়ে হেফাজতের ভেতরেও অনেকের ক্ষোভ ছিল। মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ ঘটনার পরপর হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে ৬১ জন নিহতের তথ্য জানিয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছিল শাপলা চত্বরের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। অবশেষে এবার এর মধ্যে ৯৩ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, নিহতদের অধিকাংশই যুবক ছিলেন। তথ্যগুলো আমাকে নিশ্চিত করেছে আরাফাত রায়হান সাকিব।