মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যে ২ গোলে এগিয়ে গেলো আর্জেন্টিনা। প্রথম ২৫ মিনিটে ব্রাজিলের পায়ে বল ছিলো না বললেই চলে।
খেলার ২৬ মিনিটে যখন ব্রাজিল এক গোল শোধ করে, তখন প্রথমবার টিভি পর্দায় দেখা যায় আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে। ঠিক এমন দাপট দেখিয়ে শুরু করা লিওনেল স্কালোনির দল পুরো ৯০ মিনিটই ব্রাজিলকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে ৪-১ বড় জয় পেয়েছে।
দলটির হয়ে একটি করে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ, এঞ্জো ফার্নান্দেজ, ম্যাক অ্যালিস্টার ও সিমিওনে। আর ব্রাজিলের হয়ে ব্যবধান কমানো গোল আসে কুনহার পা থেকে।
লিওনেল মেসি নেই, ছিটকে গেলেন লাউতারো মার্টিনেজ, পাওলো দিবালাও। আক্রমণভাগের সব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছাড়াই এবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতলেও আজ ব্রাজিলকে পাত্তাই দেয়নি স্কালোনির শিষ্যরা। মাঠে নামার আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার, ব্রাজিলকে এক হালি গোল দিয়ে সেটাই যেন উদযাপন করলো বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
এদিন যেন শুরু থেকেই ব্রাজিলকে গোল বন্যায় ভাসানোর উদ্দেশ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিল আর্জেন্টিনা। যার শুরু হয় ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই। ৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে হুলিয়ান আলভারেজে প্রথম লিড পায় স্কালোনিরা। যেটা বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে তৃতীয় দ্রুততম। পরের গোলটা এসেছে মাত্র ৮ মিনিট পর। এবার গোলদাতার নাম এঞ্জো ফার্নান্দেজ। তখনও ব্রাজিল বল নিয়ে মাঝমাঠও পার হতে পারেননি একবারও।
শুরুতেই দুই গোল করা আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর জন্য একটু মায়াই হলো প্রতিপক্ষের জন্য। ২৬তম মিনিটে অহেতুক বল নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন, দূরে থাকা মাথিয়াস কুনিয়া ছুটে এসে কেড়ে নেন সেটা। এরপর সোজা শটে করলেন লক্ষ্যভেদ। জাতীয় দলের হয়ে এ ফরোয়ার্ডের প্রথম গোল আর্জেন্টিনার পোস্টে ব্রাজিলের প্রথম শটও। আর্জেন্টিনার গোলপোস্টেও যে কেউ দাঁড়িয়ে আছেন সেটা বোঝা গেলো এই শটের পরই!
অবশ্য ব্রাজিলের উপলক্ষ্য এসেছে পুরো ম্যাচে ঐ একবারই। ৩৭তম মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করেন অ্যালিস্টার। ফার্নান্দেজের বাতাসে ভাসানো কম্পাসে মাপা পাস লিভারপুল মিডফিল্ডারের পায়ে এসে পড়ে, সেটা ভলিতে শেষ তুলির আচড় দেন তিনি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো প্রথমার্ধে তিন গোল হজম করল ব্রাজিল। প্রথম ২০০৫ সালের জুনে আর্জেন্টিনার মাটিতেই।
প্রথমার্ধে ৬১ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ব্রাজিলের পোস্টে চারটি শট নিয়েছে আর্জেন্টিনা। যার তিনটিই গোল হয়েছে। প্রথমার্ধেই ৩ গোল হজম করা ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে তিন পরিবর্তন নিয়ে। রদ্রিগোর জায়গায় এনদ্রিক, জোয়েলিংতনের জায়গায় হোয়াও গোমেজ ও হলুদ কার্য দেখা মুরিল্লোর জায়গায় লিও ওর্তিজ। যদিও তাতে ব্রাজিলের খেলার ধার বাড়েনি।
ম্যাচের আগে যেভাবে হুমকি দিয়েছিলেন ব্রাজিলের রাফিনহা, মাঠে তার কিছুই দেখাতে পারেননি। পুরো ম্যাচে বলতে গেলে বোতলবন্দি হয়ে ছিলেন বার্সেলোনার এই উইঙ্গার। ৭১তম মিনিটে গোলের হালি পূর্ণ করে আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের রক্ষণ ভেঙেচুরে বাঁ দিক থেকে ঢুকে পড়া তালিয়াফিকোর ক্রস বেশ কঠিন কোণ থেকে নেওয়া শটে গোল করেন বদলি হিসেবে নামা জিউলিয়ানো সিমিওনে।