ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে’ Logo খাল খনন কর্মসূচি বিএনপির রাজনীতির অন্যতম পিলার: খসরু Logo আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে: নাহিদ ইসলাম Logo বকেয়া বিল পরিশোধে সাফল্য, পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আদানির Logo আওয়ামীলীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে নোয়াখালীতে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল Logo পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করলো ভারত Logo অন্য যাত্রীদের কষ্ট বিবেচনায় বিমানের প্রস্তাব নাকচ খালেদা জিয়ার Logo আমার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা একেবারেই ভিত্তিহীন: সজীব ওয়াজেদ Logo বিয়ে করিনি, এসব গুজব কারা ছড়ায় : জায়েদ খান Logo কুমারখালীতে নাশকতা মামলায় দুই যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

রিউমার স্ক্যানারে এপ্রিলে শনাক্ত হলো ২৯৬টি ভুল তথ্য

গত এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। বিশ্লেষণে, জাতীয়, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, আন্তর্জাতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে এইসব অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (১ মে) এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমার স্ক্যানার।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, এপ্রিল মাসে জাতীয় বিষয়ে সবচেয়ে বেশি মোট ১০১টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, যা মোট অপতথ্যের ৩৪ শতাংশ। এরপর রাজনৈতিক বিষয়ে ৯৫টি, আন্তর্জাতিক ৩৮টি, ধর্মীয় ২৭টি, প্রতারণা ১০টি, খেলাধুলা ৯টি, শিক্ষা ৭টি, এবং বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ক ৮টি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।

তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যম বিচারে দেখা যায়, ১৩৮টি ছিল শুধুই তথ্যকেন্দ্রিক, ভিডিও ভিত্তিক ছিল ১০৫টি এবং ছবিভিত্তিক ছিল ৫৩টি। সব ভুল তথ্যের মধ্যে ১৮০টি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা, ৬৬টি বিভ্রান্তিকর এবং ৪৮টি বিকৃত তথ্য। দুটি ঘটনাকে কৌতুক হিসেবে প্রচার করা হলেও তা বাস্তব দাবির আকারে ফ্যাক্টচেকের আওতায় আনা হয়।সামাজিক মাধ্যমে অপতথ্যের ছড়াছড়ি

এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ফেসবুকে মোট ২৭৬টি। ইউটিউবে ৫৪টি, ইনস্টাগ্রামে ৪৮টি, এক্স (সাবেক টুইটার) ৪৪টি, টিকটকে ২৪টি এবং থ্রেডসে অন্তত ১৩টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে অন্তত ১৪টি ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

ভারতীয় উৎস থেকে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার

রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, গত কয়েক মাসের মতো এপ্রিলেও ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে অপপ্রচারের হার ছিল উল্লেখযোগ্য। গত মাসে অন্তত চারটি ঘটনার উৎস ছিল ভারত থেকে, যার মধ্যে ছয়টি ছিল সাম্প্রদায়িক অপতথ্য, যা ছড়ানো হয়েছে ভারতীয় পরিচয়ধারী অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে।

অন্তর্বর্তী সরকার ও ড. ইউনূসকে ঘিরে অপপ্রচার

চলতি এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে সর্বোচ্চ ২৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই ছিল নেতিবাচক। সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নামেও ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যেমন- ড. আসিফ নজরুল (৩টি), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (২টি), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (২টি), আ ফ ম খালিদ হোসেন, শেখ বশিরউদ্দীন ও প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে একটি করে।

রাজনৈতিক দল ও নেতাদের বিরুদ্ধে অপতথ্য

এপ্রিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে বিএনপিকে ঘিরে। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল এবং দলের অঙ্গসংগঠনগুলোকে ঘিরেও একাধিক অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও ছয়টি, ছাত্রশিবিরকে নিয়ে ছয়টি অপতথ্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগকে নিয়ে ছয়টি তথ্য ফ্যাক্টচেকের আওতায় এলেও সেগুলোর ৭৫ শতাংশই ইতিবাচক ছিল।

রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও অন্যান্য বিষয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধেও যথাক্রমে ১৬টি ও ৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। কোটা আন্দোলন এবং ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সম্পর্কেও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে।

গাজা, কাশ্মীর ও সুন্নী মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অপতথ্য

এপ্রিলে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে অন্তত ৩৮টি, কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় ১১টি এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত সুন্নী মহাসমাবেশকে ঘিরে পাঁচটি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।

ভুয়া কনটেন্ট ও মিডিয়া কার্ড

রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ১৯টি ভুয়া কনটেন্ট এবং তিনটি ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি ২৫টি গণমাধ্যমের নাম, লোগো ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে অন্তত ৬২টি ভুয়া তথ্য প্রচার হয়েছে। যমুনা টিভির নাম ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১২টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে’

রিউমার স্ক্যানারে এপ্রিলে শনাক্ত হলো ২৯৬টি ভুল তথ্য

আপডেট সময় ০৯:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

গত এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। বিশ্লেষণে, জাতীয়, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, আন্তর্জাতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে এইসব অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (১ মে) এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমার স্ক্যানার।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, এপ্রিল মাসে জাতীয় বিষয়ে সবচেয়ে বেশি মোট ১০১টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, যা মোট অপতথ্যের ৩৪ শতাংশ। এরপর রাজনৈতিক বিষয়ে ৯৫টি, আন্তর্জাতিক ৩৮টি, ধর্মীয় ২৭টি, প্রতারণা ১০টি, খেলাধুলা ৯টি, শিক্ষা ৭টি, এবং বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ক ৮টি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।

তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যম বিচারে দেখা যায়, ১৩৮টি ছিল শুধুই তথ্যকেন্দ্রিক, ভিডিও ভিত্তিক ছিল ১০৫টি এবং ছবিভিত্তিক ছিল ৫৩টি। সব ভুল তথ্যের মধ্যে ১৮০টি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা, ৬৬টি বিভ্রান্তিকর এবং ৪৮টি বিকৃত তথ্য। দুটি ঘটনাকে কৌতুক হিসেবে প্রচার করা হলেও তা বাস্তব দাবির আকারে ফ্যাক্টচেকের আওতায় আনা হয়।সামাজিক মাধ্যমে অপতথ্যের ছড়াছড়ি

এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ফেসবুকে মোট ২৭৬টি। ইউটিউবে ৫৪টি, ইনস্টাগ্রামে ৪৮টি, এক্স (সাবেক টুইটার) ৪৪টি, টিকটকে ২৪টি এবং থ্রেডসে অন্তত ১৩টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে অন্তত ১৪টি ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

ভারতীয় উৎস থেকে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার

রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, গত কয়েক মাসের মতো এপ্রিলেও ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে অপপ্রচারের হার ছিল উল্লেখযোগ্য। গত মাসে অন্তত চারটি ঘটনার উৎস ছিল ভারত থেকে, যার মধ্যে ছয়টি ছিল সাম্প্রদায়িক অপতথ্য, যা ছড়ানো হয়েছে ভারতীয় পরিচয়ধারী অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে।

অন্তর্বর্তী সরকার ও ড. ইউনূসকে ঘিরে অপপ্রচার

চলতি এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে সর্বোচ্চ ২৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই ছিল নেতিবাচক। সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নামেও ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যেমন- ড. আসিফ নজরুল (৩টি), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (২টি), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (২টি), আ ফ ম খালিদ হোসেন, শেখ বশিরউদ্দীন ও প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে একটি করে।

রাজনৈতিক দল ও নেতাদের বিরুদ্ধে অপতথ্য

এপ্রিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে বিএনপিকে ঘিরে। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল এবং দলের অঙ্গসংগঠনগুলোকে ঘিরেও একাধিক অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও ছয়টি, ছাত্রশিবিরকে নিয়ে ছয়টি অপতথ্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগকে নিয়ে ছয়টি তথ্য ফ্যাক্টচেকের আওতায় এলেও সেগুলোর ৭৫ শতাংশই ইতিবাচক ছিল।

রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও অন্যান্য বিষয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধেও যথাক্রমে ১৬টি ও ৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। কোটা আন্দোলন এবং ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সম্পর্কেও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে।

গাজা, কাশ্মীর ও সুন্নী মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অপতথ্য

এপ্রিলে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে অন্তত ৩৮টি, কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় ১১টি এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত সুন্নী মহাসমাবেশকে ঘিরে পাঁচটি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।

ভুয়া কনটেন্ট ও মিডিয়া কার্ড

রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ১৯টি ভুয়া কনটেন্ট এবং তিনটি ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি ২৫টি গণমাধ্যমের নাম, লোগো ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে অন্তত ৬২টি ভুয়া তথ্য প্রচার হয়েছে। যমুনা টিভির নাম ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১২টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে।