তাক্বওয়াভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্রসহ সবকিছুই কল্যাণকামী ও গণমুখী হয়ে ওঠে। পাশাপাশি সমাজ থেকে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, ফিৎনা, গীবত ও জেনা-ব্যভিচারসহ যাবতীয় অপরাধ প্রবণতা দূর হয়ে একটি শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি গতকাল ২০ মার্চ রাজধানীর গুলশান ক্লাবে রিভাইভার স্পোর্টিং ক্লাবের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ক্লাবের সভাপতি ডা. মু. মঈন উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাসানুল বান্না চপলের সঞ্চালনায় ক্বারী ওয়ালী উল্যাহ খানের মহাগ্রন্থ আল কুরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া মতবিনিময় সভায় গেস্ট অব অনার ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট,জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক শেখ আসলাম,ক্লাবের উপদেষ্টা ডা. ফকরুদ্দিন মানিক, মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত, নাছির উদ্দীন, কারাতে ফেডারেশনের সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, মেজর আতিক, ড্রিম স্পোর্টস ক্লাবের সভাপতি ও রিভাইভার স্পোর্টিং ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসির উদ্দীন সজল, সহ-সভাপতি খান হাবিব মোস্তফা, জয়েন্ট সেক্রেটারি এস এম আরাফাত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারী, অর্থ সম্পাদক আবু তোরাব পান্না, আইন সম্পাদক মু. কবির হোসেন ও ক্রিড়া সম্পাদক রাসেল শেখ প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য মহিমান্বিত মাহে রমযান দান করেছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামে হাকীমে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম পালন অত্যাবশ্যকীয় করে দেওয়া হয়েছে; যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীগণের ওপর অত্যাবশ্যকীয় করে দেওয়া হয়েছিলো; যাতে তোমরা তাক্বওয়ার গুণাবলী অর্জন তথা মোত্তাকী; শুদ্ধ, ভালো, ন্যাক্কার, মার্জিত, শালীন ও মানবিক হতে পারো। এমন এক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারো যে সমাজ কাউকে অসম্মান, অপমান, প্রতারিত ও ধোঁকা দেবে না। যে সমাজের কোন মানুষকে কারো ক্ষতি করার পরিবর্তে পরস্পরের জন্য কল্যাণকামী হবে। জামায়াতে ইসলামী এমনি একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে একদফায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, আমরা দেশে এমন একটি নিবেদিত প্রাণ জনগোষ্ঠী তৈরির জন্য দীর্ঘ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যারা সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে। তারা সব সময় খারাপ কাজকে ঘৃণা করবে এবং ভালো কাজে অংশ গ্রহণ এবং ইতিবাচক কাজ করে গর্ববোধ করবেন। তারা ভালো দিয়ে মন্দকে দূরীভূত করার প্রচেষ্টা চালাবে। মানুষের মুক্তি ও কল্যাণই হবে তাদের ধ্যান, জ্ঞান ও জীবনের ব্রত। তারা দেশে একটি ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য যেকোন ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে। মূলত, মাহে রমযান আমাদের মাঝে সে বারতা নিয়েই হাজির হয়েছে। তাই রমযানের প্রকৃত শিক্ষা বাস্তবজীবনে কাজে লাগিয়ে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করা সম্ভব। তিনি তাক্বওয়াভিত্তিক সমাজ গঠনে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান।