মৌলভীবাজারে এক জামায়াত নেতাকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই জামায়াত নেতা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন, এবং পুলিশি তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
মৌলভীবাজার শহরের বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা ও মৌলভীবাজার ট্রাভেলসের স্বত্ত্বাধিকারী এবং যুব জামায়াতের সদর উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ মেরাজুল হক এই মর্মে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি জিডি দায়ের করেছেন।
জিডিতে অভিযুক্তরা হলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী মৎসজীবি লীগের সহ-সভাপতি বগুড়া শিবগঞ্জ থানার মাদক মামলা জি.আর ৬৯/১৮ ইং এর এজহার নামীয় আসামি স্বাধীন মিয়া (৪৮), কাগাবালা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সুফল মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩২), কাগাবালা ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের আহবায়ক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মৌলভীবাজার মডেল থানার জি.আর ২২৪/২৫ ইং এর এজহার নামীয় ৯৪নং আসামী মশাহিদ মিয়া (৪৮), (নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ) কাগাবালা ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাফওয়ান মিয়া (২৪), ছাত্রলীগ কর্মী সালমান মিয়া (২৪), রেদওয়ান মিয়া (২৫)সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন।
জিডির বিবরণে জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে জামায়াত নেতা মোহাম্মদ মেরাজুল হক কাগাবালা বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা চলাকালে মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি স্বাধীন মিয়া মাদক, চুরি ও ছিনতাই নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তখন মেরাজুল হকসহ কাগাবালা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান খলকু মিয়া, কবির উদ্দিন, ফয়েজ উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান ছালেহ আহমেদ এবং অন্যান্যরা স্বাধীন মিয়ার বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। সভায় মোহাম্মদ মেরাজুল হক মাদক ও অপরাধের বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য রাখেন। এর জের ধরে অভিযুক্ত স্বাধীন মিয়াসহ অন্যান্য অজ্ঞাত ব্যক্তি মেরাজুলের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি মীমাংসা করেন।
তবে, অভিযোগ অনুযায়ী, এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মেরাজুল হককে প্রাণে মারা এবং তার পরিবারের ক্ষতি করার জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হন। গত ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে মৌলভীবাজার শহরের গোবিন্দশ্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কাউসার মিয়া ওরফে হুমায়ূন নামক এক ব্যক্তির সাথে টাকার বিনিময়ে মেরাজুল হককে হত্যার বিষয়ে আলোচনা করেন সদর উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি স্বাধীন মিয়া ও কাগাবালা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে সিরাজুল ইসলাম। তারা কাউসার ওরফে হুমায়ূনকে মেরাজুলের বাসা ও অফিসের ঠিকানা দেন। বিষয়টি কাউসার ওরফে হুমায়ূন মো. সজল আহমেদকে জানালে, সজল আহমেদ তাৎক্ষণিকভাবে মেরাজুল হককে অবহিত করেন।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ মেরাজুল হক বলেন, অভিযুক্তরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর। তারা যেকোনো সময় আমাকে বা আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যা বা ক্ষতি করতে পারে। তাদের এই আচরণে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রশাসনের কাছে আশা করছি, তারা দ্রুত এই আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।