ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কাউনিয়ায় জামায়াতের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল Logo ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিলে গণতন্ত্রের কবর রচনা হবে: তারেক রহমান Logo জামায়াত আমিরের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক Logo ২৮৬ দিন পর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরলেন সুনিতারা Logo ভারত ইসরায়েলের ‘সাউথ এশিয়ান ভার্সন’: সাদিক কায়েম Logo পহেলা বৈশাখে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক শোভাযাত্রা’ করবে সরকার Logo ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের উপর ইসরাঈল গণহত্যা চালাচ্ছে -সাইফুল আলম খান মিলন Logo বাফুফেতে সিন্ডিকেটের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবে সরকার Logo ‘আইনজীবীদেকে পলিটিক্যালি মোটিভেটেড না হয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে’ Logo কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, এসআই প্রত্যাহার

২৮৬ দিন পর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরলেন সুনিতারা

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) ৯ মাসের বেশি সময় পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন নাসার নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। আজ বুধবার ভোররাত ৩টা ৫৭ মিনিটে (আইএসটি) ফ্লোরিডার উপকূলে প্রায় ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষে স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন মহাকাশযানটি তাঁদের নিয়ে অবতরণ করে। এই যাত্রায় মহাকাশযানে আরও ছিলেন আমেরিকান নভোচারী নিক হেগ ও রাশিয়ান কসমোনট আলেকসান্দ্র গর্বুনভ।

গত বছরের জুন মাসে সুনিতা ও বুচ আইএসএসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। এটি ছিল বোয়িং স্টারলাইনারের প্রথম ক্রু ফ্লাইটের পরীক্ষামূলক যাত্রা। তবে বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানের গোলযোগ এবং বিভিন্ন জটিলতার কারণে তাঁদের আট দিনের জায়গায় ৯ মাসের বেশি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আটকে থাকতে হয়। পরে সেটি খালি অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরে আসে। এই দীর্ঘদিন মহাকাশে কাটানো কোনো পরিকল্পিত বিষয় ছিল না। ফলে পুরো সময় মহাকাশচারীদের ভয়াবহ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

মহাকাশে আটকে থাকা এ দুই মহাকাশচারীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে নাসা ও স্পেসএক্স আইএসএসে একটি ক্রু-১০ মিশন চালু করে। ১৪ মার্চ স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযানটি ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি মহাকাশকেন্দ্র থেকে যাত্রা শুরু করে নতুন চার নভোচারী নিয়ে। তাঁরা হলেন নাসার নিকোল আয়ার্স ও আন্নে ম্যাকক্লেইন, রাশিয়ার রসকসমসের কিরিল পেস্কোভ এবং জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জেএএক্সএ) তাকুয়া অনিশি। ১৬ মার্চ তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে পৌঁছান। নভোচারী অদলবদলের মাধ্যমে ক্রু-১০-এর ওই ফ্লাইটে করে ১৮ মার্চ ফেরার যাত্রা শুরু করেন সুনিতা ও বুচ।

এই পুরো সময় তাঁদের যাত্রার ওপর নজর রাখছিলেন নাসা ও স্পেসএক্সের বিজ্ঞানীরা। মহাকাশযানটি যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছিল, তখন বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণের কারণে যানের তাপমাত্রা অত্যন্ত বেড়ে যায়। কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নও হয়ে যায়, তবে পরে পুনরায় সংযোগ স্থাপিত হয়।

ফ্লোরিডার উপকূলে আটলান্টিক মহাসাগরের কাছে অবতরণের সময়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক কিলোমিটার ওপরে মহাকাশযানের প্যারাস্যুট খোলে এবং এটি ধীরে ধীরে নিরাপদে সমুদ্রে নেমে আসে।

তাঁদের আনার জন্য পৌঁছে গিয়েছিল মার্কিন নৌ সেনাবাহিনী।

এরপরে মডিউলসহ সুনিতাদের জাহাজের কাছে নিয়ে আসে নৌবাহিনী। মহাকাশচারীদের হাইড্রোলিক পদ্ধতিতে তোলা হয় জাহাজে। সেখানে ড্রাগন ক্যাপসুলের দরজা খোলার পরে প্রথমে বেরিয়ে আসেন নিক হগ। তার প্রায় ৫ মিনিট পরে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা ৫২ মিনিটে বেরিয়ে আসেন সুনিতা উইলিয়ামস।

সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর ২৮৬ দিন ধরে মহাকাশে থেকে পৃথিবীকে ৪ হাজার ৫৭৭ বার প্রদক্ষিণ করেছেন এবং মোট ১ হাজার ৯৫২ লাখ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন।

মহাকাশে ফিরে আসার পরেও এখনই নিজেদের পরিবারদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য রাখা হবে একটি বিশেষ জায়গায়, যেখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। শুধু এই পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই তাঁরা পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাউনিয়ায় জামায়াতের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

২৮৬ দিন পর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরলেন সুনিতারা

আপডেট সময় ১১:২৪:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) ৯ মাসের বেশি সময় পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন নাসার নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। আজ বুধবার ভোররাত ৩টা ৫৭ মিনিটে (আইএসটি) ফ্লোরিডার উপকূলে প্রায় ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষে স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন মহাকাশযানটি তাঁদের নিয়ে অবতরণ করে। এই যাত্রায় মহাকাশযানে আরও ছিলেন আমেরিকান নভোচারী নিক হেগ ও রাশিয়ান কসমোনট আলেকসান্দ্র গর্বুনভ।

গত বছরের জুন মাসে সুনিতা ও বুচ আইএসএসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। এটি ছিল বোয়িং স্টারলাইনারের প্রথম ক্রু ফ্লাইটের পরীক্ষামূলক যাত্রা। তবে বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানের গোলযোগ এবং বিভিন্ন জটিলতার কারণে তাঁদের আট দিনের জায়গায় ৯ মাসের বেশি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আটকে থাকতে হয়। পরে সেটি খালি অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরে আসে। এই দীর্ঘদিন মহাকাশে কাটানো কোনো পরিকল্পিত বিষয় ছিল না। ফলে পুরো সময় মহাকাশচারীদের ভয়াবহ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

মহাকাশে আটকে থাকা এ দুই মহাকাশচারীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে নাসা ও স্পেসএক্স আইএসএসে একটি ক্রু-১০ মিশন চালু করে। ১৪ মার্চ স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযানটি ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি মহাকাশকেন্দ্র থেকে যাত্রা শুরু করে নতুন চার নভোচারী নিয়ে। তাঁরা হলেন নাসার নিকোল আয়ার্স ও আন্নে ম্যাকক্লেইন, রাশিয়ার রসকসমসের কিরিল পেস্কোভ এবং জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জেএএক্সএ) তাকুয়া অনিশি। ১৬ মার্চ তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে পৌঁছান। নভোচারী অদলবদলের মাধ্যমে ক্রু-১০-এর ওই ফ্লাইটে করে ১৮ মার্চ ফেরার যাত্রা শুরু করেন সুনিতা ও বুচ।

এই পুরো সময় তাঁদের যাত্রার ওপর নজর রাখছিলেন নাসা ও স্পেসএক্সের বিজ্ঞানীরা। মহাকাশযানটি যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছিল, তখন বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণের কারণে যানের তাপমাত্রা অত্যন্ত বেড়ে যায়। কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নও হয়ে যায়, তবে পরে পুনরায় সংযোগ স্থাপিত হয়।

ফ্লোরিডার উপকূলে আটলান্টিক মহাসাগরের কাছে অবতরণের সময়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক কিলোমিটার ওপরে মহাকাশযানের প্যারাস্যুট খোলে এবং এটি ধীরে ধীরে নিরাপদে সমুদ্রে নেমে আসে।

তাঁদের আনার জন্য পৌঁছে গিয়েছিল মার্কিন নৌ সেনাবাহিনী।

এরপরে মডিউলসহ সুনিতাদের জাহাজের কাছে নিয়ে আসে নৌবাহিনী। মহাকাশচারীদের হাইড্রোলিক পদ্ধতিতে তোলা হয় জাহাজে। সেখানে ড্রাগন ক্যাপসুলের দরজা খোলার পরে প্রথমে বেরিয়ে আসেন নিক হগ। তার প্রায় ৫ মিনিট পরে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা ৫২ মিনিটে বেরিয়ে আসেন সুনিতা উইলিয়ামস।

সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর ২৮৬ দিন ধরে মহাকাশে থেকে পৃথিবীকে ৪ হাজার ৫৭৭ বার প্রদক্ষিণ করেছেন এবং মোট ১ হাজার ৯৫২ লাখ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন।

মহাকাশে ফিরে আসার পরেও এখনই নিজেদের পরিবারদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য রাখা হবে একটি বিশেষ জায়গায়, যেখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। শুধু এই পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই তাঁরা পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাবেন।