ছয় দফা দাবির প্রেক্ষিতে দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ মঙ্গলবার ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পালন করা হয়েছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’।
শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টায় তারা ইনস্টিটিউটের ভেতরে মিছিল করেন এবং ভবনের কক্ষ ও ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের তথ্য অনুযায়ী, অধ্যক্ষের কার্যালয়, প্রশাসনিক ভবন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষসহ মোট ২২টি স্থানে তালা লাগানো হয়েছে।
প্রতিটি তালা সাদা স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো, যার ওপরে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে—‘৬ দফা’। পাশাপাশি, তালার সঙ্গে একটি করে ছোট কাগজে উল্লেখ করা হয়েছে: ‘কারিগরি সেক্টরের সংস্কার কাজ চলমান। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত।’
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে পুলিশের উপস্থিতি রয়েছে, আর ভেতরে শিক্ষার্থীরা দলে দলে অবস্থান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম জানান, গত সাত মাস ধরে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ ও নমনীয় কর্মসূচি পালন করলেও ফল পাওয়া যায়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আশ্বাস ছাড়া কোনো বাস্তব পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত দেশব্যাপী ব্লকেড কর্মসূচির পর ডাকা বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীলদের অনুপস্থিতি শিক্ষার্থীদের অসন্তুষ্ট করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছয় দফা দাবির বাস্তবায়নে একটি আট সদস্যের কমিটি গঠন করলেও এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি বৈঠক হয়েছে, যার কোনো ফল শিক্ষার্থীরা দেখেননি। তাই স্পষ্ট রূপরেখা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।
ছয় দফা দাবি সংক্ষেপে – জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য নির্ধারিত ৩০% পদোন্নতি কোটা বাতিল, ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবির পরিবর্তন, সংশ্লিষ্ট মামলার ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করা, ২০২১ সালের বিতর্কিত নিয়োগ বাতিল, নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করা।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের আরেক প্রতিনিধি শাহজাদা আহমেদ জানান, তারা কোনো জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।