রাজধানীতে বাড়তে শুরু করেছে মশার উপদ্রব। দিনে কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শুরু হয়ে মশার এই অসহনীয় উপদ্রব। যা অব্যাহত থাকে সারা রাত। মশা নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বস্তুত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে রাজধানীবাসীর অভিযোগ। মাঝেমধ্যে ওষুধ ছিটালেও তা কাজে আসছে না।
রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার চিত্র এমনই। এর মধ্যে মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, আদাবর রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর, মাণ্ডা, মুগদাপাড়া, খিলগাঁও, পুরান ঢাকার কিছু এলাকার পরিস্থিতি বেশি খারাপ।
গবেষণায় দেখা গেছে, গত চার মাসে ঘনত্ব বেড়েছে কিউলেক্স মশার। জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক প্রাপ্তবয়স্ক মশা ফাঁদে ধরা পড়েছে, যা অক্টোবর ও নভেম্বরে ছিল দুইশর কম। মশার ঘনত্ব বেশি পাওয়া গেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উত্তরা, দক্ষিণখান ও মিরপুর এলাকায়।
নগরবাসীর অভিযোগ, মশা নিধনে দৃশ্যমান যে কার্যক্রম তা এখন আর দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে ফগার মেশিনের ধোঁয়া দিতে দেখা গেলেও মশার উপদ্রব কমছে না। সিটি করপোরেশনের লোকজন আদৌ ওষুধ স্প্রে করে নাকি শুধু ধোঁয়া দিয়েই দায় সারছে এটা বোধগম্য হচ্ছে না। কেননা মশার যে উৎপাত সেটা গত কয়েক মাসে বেড়েছে। এতে দিন-রাত বাসাবাড়িতে মশায় কামড়ায়। সারারাত মশারি ব্যবহার করার পরেও কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশকনিধন কার্যক্রমের জন্য তারা ব্যয় করেছে প্রায় ৮৭ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১১১ কোটি টাকা। তবে এত বিশাল বাজেটের মশক নিধনের মহড়াতেও নাগরিকদের মধ্যে স্বস্তির বার্তা নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ চিত্র অব্যাহত থাকলে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত মশার উপদ্রব চরমে পৌঁছাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, গত বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে দুই সিটিতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ২২ বছরের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ে। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে মশার উপদ্রব বেড়েছে। তাই অতি জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।