ঠাকুরগাঁওয়ে ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজছাত্র মিলন হোসেনকে (২৩) অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে ফিরে পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার।
গত রবিবার রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী ওই চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেয় মিলনের বাবা পানজাব আলী।
মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী এবং ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মিলনের বাবা পানজাব আলী বলেন, ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছেলে মিলনকে অপহরণ করা হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মিলন। ওই দিন রাত ১টায় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা।
তিনি জানান, প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের জন্য ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা।
পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। এরপর ১০, তিন দিন পর ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সর্বশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হলে মিলনকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানায় চক্রটি।
মিলনের বাবা আরো জানান, সর্বশেষ গতকাল ৯ মার্চ রাতে টাকা নিয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ১০ টার ট্রেনে উঠতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া নামক স্থানে চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে চক্রটি। মিলনের জন্য দুই সেট গায়ের পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ১০ মিনিট পরে টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারীরা।
এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক স্টেশনে গিয়ে সম্পূর্ণ স্টেশন তন্নতন্ন করে খোঁজাখুঁজি করা হয়।
রাত ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ছেলে মিলনকে পাওয়া যায়নি, জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুর রহমান জানান, অপহরণের ঘটনাটি ঘটার পরদিন মৌখিকভাবে পুলিশকে জানায় মিলনের পরিবার। তখন থেকেই চক্রটিকে ধরার জন্য কাজ করছিল পুলিশ। গত ৫ মার্চ সদর থানায় মিলনের বাবা পানজাব আলী একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পর থেকে পুলিশের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেননি পানজাব আলী।
তিনি জানান, তদন্তকাজে মিলনের পরিবারের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। অপহরণকারীদের সঙ্গে ২৫ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টিও গোপন রেখেছিলেন মিলনের বাবা। চক্রটিকে ধরতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে পুলিশ।