কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের জেরে দেশটির সঙ্গে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি বাতিল করেছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
দুই দেশের পরস্পরের সার্বভৌম ভূখণ্ডের প্রতি সম্মান করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে সিমলা চুক্তিতে। তা ছাড়া বিরোধ নিষ্পত্তিতে যুদ্ধ এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি রয়েছে তাতে।
পৃথিবীর ভূস্বর্গখ্যাত কাশ্মীর অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তান যার যার দখল অনুযায়ী সিমলা চুক্তির আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি বজায় রেখেছে তারা।
এখন পাকিস্তান সিমলা চুক্তি বাতিল করায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতির আশঙ্কা আরো জোরালো হলো। এতে করে বেড়েছে সামরিক উত্তেজনাও।
ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের কাছে পারমাণবিক বোমা রয়েছে। যদিও তারা কখনো এর প্রয়োগ করেনি। চিরবেরী দেশ দুটি কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় মাঝেমাধ্যে সংঘাতে জড়ালেও সাম্প্রতিক ইতিহাসে কারগিল যুদ্ধ ছাড়া তাদের মধ্যে বড় কোনো যুদ্ধ হয়নি।
সিমলা চুক্তির প্রধান প্রধান বিষয়
১। অপরের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি: দুই দেশ তাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি দেয়।
২। শান্তিপূর্ণ ন্যায়বিচার: চুক্তিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বা আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হবে; সশস্ত্র সংঘাতের মাধ্যমে নয়।
৩। নিয়ন্ত্রণের রেখা: এটি জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা চিহ্নিত করার জন্য একটি কাঠামো সৃষ্টি করে এবং সেই রেখা বরাবর একটি যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
৪। সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ: চুক্তিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আরো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পানি আটকে দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছে তার মন্ত্রিসভা। ফলে ভারত ও পাকিস্তান কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখে রয়েছে।