ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো বাংলাদেশিদেরও ফেরত পাঠানো হচ্ছে।ইতোমধ্যে নথিপত্রহীন কয়েকজন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার এ বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সভায় স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সভা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো অবৈধ বাংলাদেশিদেরও ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। এ-সংক্রান্ত একটি বার্তা ঢাকাকে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া নিজ নাগরিকদের ফেরত নেবে।

ওই কর্মকর্তা জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে অবৈধ বাংলাদেশিদের গ্রহণ করার প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের যাতে দেশে ফিরতে কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে পেরেছে। হাজারখানেক বাংলাদেশিকে নিজের দেশে গ্রহণেও কোনো সমস্যা হবে না।

কবে নাগাদ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো শুরু হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য না করলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি বলেছেন, বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে পাঠানোও হয়েছে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় যাওয়ার পর অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। মেক্সিকোসহ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের অনেক অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের নিয়েই ট্রাম্প প্রশাসনের দুশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি। তবে, আফ্রিকা ও এশীয়দেরও ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিছুদিন আগে অবৈধ ভারতীয়দের ফেরত পাঠানো হয়েছে।

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বসবাস করা এক প্রবাসী বাংলাদেশি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যেসব বাংলাদেশি আছেন; তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জ্যাকসন হাইটসসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে লোকসমাগম তেমন হচ্ছে না। তবে, যাদের বৈধ কাগজপত্র আছে, তাদের কোনো সমস্যা নেই।

ঢাকায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কয়েকদিন আগে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা ধারণা দিয়েছেন, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, সে সংখ্যা হাজারের বেশি নয়। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এক্ষেত্রে ঢাকার সহযোগিতা চেয়েছে ওয়াশিংটন। সরকারও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

বিদেশ থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার অন্যতম হলো, তারা বাংলাদেশের নাগরিক কি না, তা যাচাই করা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি মেনে চলা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচারে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, তিনি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বিদেশিদের বিতাড়নের উদ্যোগ নেবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে

আপডেট সময় ০৭:৪৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো বাংলাদেশিদেরও ফেরত পাঠানো হচ্ছে।ইতোমধ্যে নথিপত্রহীন কয়েকজন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার এ বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সভায় স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সভা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো অবৈধ বাংলাদেশিদেরও ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। এ-সংক্রান্ত একটি বার্তা ঢাকাকে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া নিজ নাগরিকদের ফেরত নেবে।

ওই কর্মকর্তা জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে অবৈধ বাংলাদেশিদের গ্রহণ করার প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের যাতে দেশে ফিরতে কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে পেরেছে। হাজারখানেক বাংলাদেশিকে নিজের দেশে গ্রহণেও কোনো সমস্যা হবে না।

কবে নাগাদ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো শুরু হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য না করলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি বলেছেন, বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে পাঠানোও হয়েছে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় যাওয়ার পর অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। মেক্সিকোসহ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের অনেক অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের নিয়েই ট্রাম্প প্রশাসনের দুশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি। তবে, আফ্রিকা ও এশীয়দেরও ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিছুদিন আগে অবৈধ ভারতীয়দের ফেরত পাঠানো হয়েছে।

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বসবাস করা এক প্রবাসী বাংলাদেশি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যেসব বাংলাদেশি আছেন; তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জ্যাকসন হাইটসসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে লোকসমাগম তেমন হচ্ছে না। তবে, যাদের বৈধ কাগজপত্র আছে, তাদের কোনো সমস্যা নেই।

ঢাকায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কয়েকদিন আগে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা ধারণা দিয়েছেন, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, সে সংখ্যা হাজারের বেশি নয়। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এক্ষেত্রে ঢাকার সহযোগিতা চেয়েছে ওয়াশিংটন। সরকারও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

বিদেশ থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার অন্যতম হলো, তারা বাংলাদেশের নাগরিক কি না, তা যাচাই করা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি মেনে চলা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচারে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, তিনি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বিদেশিদের বিতাড়নের উদ্যোগ নেবেন।