বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই—আপনারা ভারতের আধিপত্যবাদের টুঁটি চেপে ধরুন। তাদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। বাংলাদেশের মানুষ অনেক কিছু সহ্য করতে পারে, কিন্তু ভারত তোষণ আর সহ্য করতে পারবে না।”
বুধবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে এক গণমিছিল বের করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
মিছিল থেকে সম্প্রতি ভারতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘ওয়াকফ সংশোধনী বিল-২০২৫’ বাতিলের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ভারতে মুসলিমদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ড ও ধর্মীয় বৈষম্যের প্রতিবাদ জানান বক্তারা।
মিছিলটি শান্তিনগর মোড়ে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। সেখান থেকে দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বারিধারায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে।
গণমিছিল শুরুর আগে সমাবেশে মামুনুল হক বলেন, সারা পৃথিবীতে আজ দুটি জনপদ সবচেয়ে বেশি সমালোচিত। একটি গাজা ভুখণ্ড, যেখানে বর্বর ইসরায়েলের গণহত্যা চলছে। আরেকটি হলো ৪০ কোটি মুসলমানের দেশ ভারত। সেখানে নরেন্দ্র মোদি সরকার ভারতকে মুসলিমশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারতের প্রায় ৯ লাখ একর ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে মোদি বাহিনীর। ওয়াকফ সংশোধনীর নামে মুসলমানদের ভারত থেকে তাড়ানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আমরা এই চরম বিতর্কিত বিল বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। ভারতের মুসলমানরা যেকোনো কর্মসূচি গ্রহণ করলে বাংলাদেশের মুসলমানরা তাদের সমর্থন করবে। ভারতের মুসলমানদের প্রতিটি জুলুমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুসলমানরা বলিষ্ঠ ভূমিকায় থাকবে।
প্রয়োজনে পুরো উপমহাদেশের মুসলমানদের নিয়ে উগ্র-হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে উপমহাদেশীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে। স্মারকলীপিতে উল্লেখ করা ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল করা, ভারতের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মসজিদ, মাদরাসা ও ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা বিধান, মুসলিমবিরোধী হিংসা, হত্যা এবং বৈষম্যমূলক আইন বাতিল, ভারতের মুসলমানদের ওপর পরিচালিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর আন্তর্জাতিক তদন্ত নিশ্চিত করা।