ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ১৮ জনের মৃত্যু Logo চীনে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে যা বলেছিলেন ড. ইউনূস? যেজন্য হতভম্ব ভারত Logo জামায়াতের ঈদ উপলক্ষে প্রীতি ভোজের ঘটনায় বিএনপি – যুবলীগের হামলা Logo শহীদ নাসিব হাসান রিহান-এর পরিবারের সদস্যদের সাথে আমীরে জামায়াতের ঈদ কুশল বিনিময় Logo ড. ইউনূসকে শেহবাজের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ Logo মিয়ানমারে ভূমিকম্প: ২ হাজার ছাড়াল নিহতের সংখ্যা Logo গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: খালেদা জিয়া Logo ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের পদত্যাগ Logo ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’স্লোগান, বিএনপির সাথে সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ ১ Logo আইপিএলসহ টিভিতে যা দেকবেন আজ

পদ নিয়ে ইবি ভিসির কার্যালয়ে হট্টগোল, সংবাদ সংগ্রহে বাধা ছাত্রদলের

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে তুমুল হট্টোগোলের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার নেপথ্যে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ বলে জানা গেছে। এদিকে হট্টগোলের সময় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে গেলে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বাধা দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্র জানায়, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ বিএনপিপন্থী এক কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষকদের মধ্যে থেকে রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। এই নিয়েই মূলত হট্টগোলের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্যের সভাকক্ষে প্রকৌশলী এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালকের (পিডি) সাথে সভায় বসেছিল উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। সভা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক পদ থেকে ফ্যাসিস্টের দোসরদের অপসারণের দাবিতে বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করে।

পরে দুপুর পৌঁনে ১ টার দিকে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এয়াকুল আলী কার্যালয় থেকে নিচে নেমে আসেন। পরে তিনিসহ জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুনের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যলয়ে ঢোকেন।

এসময় রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দিয়ে তাদের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এসময় সাংবাদিকরা সেখানে প্রবেশ করলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সদস্য নুর উদ্দিন, রাফিজ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম, আলিনুর রহমান, উল্লাস মাহমুদ ও সাবিক জোয়ার্দারসহ অন্যান্য কর্মীরা তাদের বের করে দেন।

এক পর্যায়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর বডির মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এসময় কক্ষের মধ্যে উচ্চবাচ্য শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলেও ছাত্রদল কর্মীরা তাদেরকে বাধা দেয়। পরে তাদেরকে উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।

হট্টগোলের এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানকে ‘জামায়াত’ বলে আখ্যা দিলে দুজনের মধ্যে উচ্চবাচ্য সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ প্রক্টরের। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কার্যালয় ত্যাগ করেন শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, আগে দেখতাম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ পদ ভাগাভাগি নিয়ে হট্টগোল, প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করতো। এখন ছাত্রদল একই পথে হাঁটছে। এরকম অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি নতুন বাংলাদেশে মোটেই কাম্য নয়। আজকের এই ঘটনা চরম লজ্জাজনক। আমরা ঘটনায় জড়িত দোষীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছি। এরমধ্যে বিচার না করলে শিক্ষার্থীরা অন্য ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, পিকুলকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য প্রো-ভিসি, আহ্বায়ক শাহেদ, সদস্য সচিব মিথুন তাদের ব্যক্তিস্বার্থে পিকুলকে রেজিস্ট্রার বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা চাই জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের যোগ্য একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার বানানো হোক। আর সাংবাদিকদের সাথে নিজ দলের কর্মীদের চেয়েও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের এমন আচরণের দায় ছাত্রদল নেবে না।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “উপাচার্য কার্যালয়ে এক জুনিয়র শিক্ষক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। উপাচার্য এর বিচার না করলে আমি বিষয়টি অন্যভাবে দেখবো।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “উপাচার্যের কার্যালয়ে এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। যেহেতু শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে সেহেতু আমরা উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেব। এ বিষয় নিয়ে কোনো তদন্ত কমিটির দরকার নেই।”

জনপ্রিয় সংবাদ

গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ১৮ জনের মৃত্যু

পদ নিয়ে ইবি ভিসির কার্যালয়ে হট্টগোল, সংবাদ সংগ্রহে বাধা ছাত্রদলের

আপডেট সময় ১১:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে তুমুল হট্টোগোলের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার নেপথ্যে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ বলে জানা গেছে। এদিকে হট্টগোলের সময় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে গেলে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বাধা দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্র জানায়, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ বিএনপিপন্থী এক কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষকদের মধ্যে থেকে রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। এই নিয়েই মূলত হট্টগোলের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্যের সভাকক্ষে প্রকৌশলী এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালকের (পিডি) সাথে সভায় বসেছিল উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। সভা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক পদ থেকে ফ্যাসিস্টের দোসরদের অপসারণের দাবিতে বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করে।

পরে দুপুর পৌঁনে ১ টার দিকে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এয়াকুল আলী কার্যালয় থেকে নিচে নেমে আসেন। পরে তিনিসহ জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুনের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যলয়ে ঢোকেন।

এসময় রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দিয়ে তাদের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এসময় সাংবাদিকরা সেখানে প্রবেশ করলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সদস্য নুর উদ্দিন, রাফিজ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম, আলিনুর রহমান, উল্লাস মাহমুদ ও সাবিক জোয়ার্দারসহ অন্যান্য কর্মীরা তাদের বের করে দেন।

এক পর্যায়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর বডির মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এসময় কক্ষের মধ্যে উচ্চবাচ্য শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলেও ছাত্রদল কর্মীরা তাদেরকে বাধা দেয়। পরে তাদেরকে উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।

হট্টগোলের এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানকে ‘জামায়াত’ বলে আখ্যা দিলে দুজনের মধ্যে উচ্চবাচ্য সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ প্রক্টরের। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কার্যালয় ত্যাগ করেন শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, আগে দেখতাম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ পদ ভাগাভাগি নিয়ে হট্টগোল, প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করতো। এখন ছাত্রদল একই পথে হাঁটছে। এরকম অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি নতুন বাংলাদেশে মোটেই কাম্য নয়। আজকের এই ঘটনা চরম লজ্জাজনক। আমরা ঘটনায় জড়িত দোষীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছি। এরমধ্যে বিচার না করলে শিক্ষার্থীরা অন্য ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, পিকুলকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য প্রো-ভিসি, আহ্বায়ক শাহেদ, সদস্য সচিব মিথুন তাদের ব্যক্তিস্বার্থে পিকুলকে রেজিস্ট্রার বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা চাই জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের যোগ্য একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার বানানো হোক। আর সাংবাদিকদের সাথে নিজ দলের কর্মীদের চেয়েও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের এমন আচরণের দায় ছাত্রদল নেবে না।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “উপাচার্য কার্যালয়ে এক জুনিয়র শিক্ষক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। উপাচার্য এর বিচার না করলে আমি বিষয়টি অন্যভাবে দেখবো।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “উপাচার্যের কার্যালয়ে এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। যেহেতু শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে সেহেতু আমরা উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেব। এ বিষয় নিয়ে কোনো তদন্ত কমিটির দরকার নেই।”