ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়

কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে একটা কথা প্রচলিত আছে যে সব দলের কাছে হারলেও দুই দলের লড়াইয়ে কখনোই পরাজিত দলে থাকা যাবে না। যেভাবে হোক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে। কেননা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ শুধুই একটি ক্রিকেট ম্যাচ নয়! এমন ম্যাচকেই ছন্দে ফেরার মঞ্চ বানালেন বিরাট কোহলি। সীমিত সংস্করণের ক্রিকেটে ছন্দে যে ছিলেন না তেমনটা অবশ্য নয়।

তবে তার মতো কিংবদন্তি ব্যাটারের কাছে যা দেখতে অভ্যস্ত দর্শক-সমর্থকরা তা এতদিন কোহলির ব্যাটিংয়ে ছিল না। আজ দুবাইয়ে দর্শক-সমর্থকদের নয়ন জুড়ানো সেই ইনিংসই উপহার দিয়েছেন। যা দেখে যারপরনাই খুশি হয়েছেন দুবাইয়ের গ্যালারিতে উপস্থিত ভারতীয় সমর্থকরা।
কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতেই আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত।

৪৫ বল হাতে রেখে পাওয়া সহজ জয়ে অবশ্য ফিফটি করে অবদান রেখেছেন শ্রেয়াস আইয়ারও। সঙ্গে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শুবমান গিলের অবদানও কম নয় কিন্তু। কোহলির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন তো তিনি। ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়ার ম্যাচে আউট হওয়ার আগে খেলেছেন ৭ চারে ৪৬ রানের ইনিংস।
গিলের ইনিংসটা আজও বড় হতে পারত। তবে আবরার আহমেদের ম্যাজিক্যাল এক লেগস্পিনে ‘জীবন’ দিতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় ওপেনার। গিলকে আউট করে পাকিস্তানের লেগস্পিনার উদযাপনটাও করলেন দেখার মতোই। চোখের ঈশারায় ভারতীয় ব্যাটারকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান তিনি। তবে ম্যাচ শেষে কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে এখন নিজেরাই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পথে।

আগামীকাল বাংলাদেশকে যদি নিউজিল্যান্ড হারিয়ে দেয় তাহলে ঘরের টুর্নামেন্ট দর্শক হয়েই দেখতে হবে স্বাগতিক পাকিস্তানকে। অন্যদিকে সেমিফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে ভারতের।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ আত্মবিশ্বাসী এক কোহলিকেই দেখা গেছে ২২ গজে। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছাড়াও যে সিঙ্গেল আর ডাবলসেও দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকানো যায় তা দেখিয়েছেন কোহলি। দলের জয়ের যখন ২ রান প্রয়োজন কোহলির সেঞ্চুরি করতে ৪ রান দরকার। খুশদিল শাহকে চার মেরে এক ঠিলে দুই কাজ সারেন তিনি। কাঁটায় কাঁটায় ১০০ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ চারে। ৫১তম সেঞ্চুরিতে হাঁকাননি কোনো ছক্কা। সর্বশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন তিনি।

প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তানকে পেলেই অবশ্য জ্বলে ওঠে কোহলি ব্যাটার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ইনিংসটি তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষেই, ২০১১ বিশ্বকাপে মিরপুরে। পরে পাকিস্তানের বিপক্ষে আরো দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলেছেন তিনি। তার মধ্যে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংসকে তো ক্যারিয়ারেরই সেরা ইনিংস বলা হয়।

দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পথে একটা রেকর্ডও গড়েছেন কোহলি। ওয়ানডেতে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে ১৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটার। তার ওপরে আছেন শুধু কুমার সাঙ্গাকারা (১৪২৩৪) ও শচীন টেন্ডুলকার (১৮৪২৬)। তবে দ্রুততম ১৪ হাজার রানে দুজনকেই পেছনে ফেলেছেন কোহলি। ২৮৭ ইনিংসে করেছেন তিনি। এতদিন ৩৫০ ইনিংসে শীর্ষে ছিলেন কিংবদন্তি শচীন।

ফিল্ডার হিসেবেও একটা রেকর্ড গড়েছেন কোহলি। ১৫৮ ক্যাচ নিয়ে এখন ভারতের সর্বোচ্চ ক্যাচশিকারি তিনি। এই কীর্তিতে পেছনে ফেলেছেন ১৫৬ ক্যাচ নেওয়া ভারতের সাবেক অধিনায়ক আজহারউদ্দিনকে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফেব্রুয়ারির ২২ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৯২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার

কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়

আপডেট সময় ১১:৩৪:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে একটা কথা প্রচলিত আছে যে সব দলের কাছে হারলেও দুই দলের লড়াইয়ে কখনোই পরাজিত দলে থাকা যাবে না। যেভাবে হোক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে। কেননা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ শুধুই একটি ক্রিকেট ম্যাচ নয়! এমন ম্যাচকেই ছন্দে ফেরার মঞ্চ বানালেন বিরাট কোহলি। সীমিত সংস্করণের ক্রিকেটে ছন্দে যে ছিলেন না তেমনটা অবশ্য নয়।

তবে তার মতো কিংবদন্তি ব্যাটারের কাছে যা দেখতে অভ্যস্ত দর্শক-সমর্থকরা তা এতদিন কোহলির ব্যাটিংয়ে ছিল না। আজ দুবাইয়ে দর্শক-সমর্থকদের নয়ন জুড়ানো সেই ইনিংসই উপহার দিয়েছেন। যা দেখে যারপরনাই খুশি হয়েছেন দুবাইয়ের গ্যালারিতে উপস্থিত ভারতীয় সমর্থকরা।
কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতেই আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত।

৪৫ বল হাতে রেখে পাওয়া সহজ জয়ে অবশ্য ফিফটি করে অবদান রেখেছেন শ্রেয়াস আইয়ারও। সঙ্গে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শুবমান গিলের অবদানও কম নয় কিন্তু। কোহলির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন তো তিনি। ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়ার ম্যাচে আউট হওয়ার আগে খেলেছেন ৭ চারে ৪৬ রানের ইনিংস।
গিলের ইনিংসটা আজও বড় হতে পারত। তবে আবরার আহমেদের ম্যাজিক্যাল এক লেগস্পিনে ‘জীবন’ দিতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় ওপেনার। গিলকে আউট করে পাকিস্তানের লেগস্পিনার উদযাপনটাও করলেন দেখার মতোই। চোখের ঈশারায় ভারতীয় ব্যাটারকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান তিনি। তবে ম্যাচ শেষে কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে এখন নিজেরাই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পথে।

আগামীকাল বাংলাদেশকে যদি নিউজিল্যান্ড হারিয়ে দেয় তাহলে ঘরের টুর্নামেন্ট দর্শক হয়েই দেখতে হবে স্বাগতিক পাকিস্তানকে। অন্যদিকে সেমিফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে ভারতের।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ আত্মবিশ্বাসী এক কোহলিকেই দেখা গেছে ২২ গজে। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছাড়াও যে সিঙ্গেল আর ডাবলসেও দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকানো যায় তা দেখিয়েছেন কোহলি। দলের জয়ের যখন ২ রান প্রয়োজন কোহলির সেঞ্চুরি করতে ৪ রান দরকার। খুশদিল শাহকে চার মেরে এক ঠিলে দুই কাজ সারেন তিনি। কাঁটায় কাঁটায় ১০০ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ চারে। ৫১তম সেঞ্চুরিতে হাঁকাননি কোনো ছক্কা। সর্বশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন তিনি।

প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তানকে পেলেই অবশ্য জ্বলে ওঠে কোহলি ব্যাটার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ইনিংসটি তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষেই, ২০১১ বিশ্বকাপে মিরপুরে। পরে পাকিস্তানের বিপক্ষে আরো দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলেছেন তিনি। তার মধ্যে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংসকে তো ক্যারিয়ারেরই সেরা ইনিংস বলা হয়।

দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পথে একটা রেকর্ডও গড়েছেন কোহলি। ওয়ানডেতে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে ১৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটার। তার ওপরে আছেন শুধু কুমার সাঙ্গাকারা (১৪২৩৪) ও শচীন টেন্ডুলকার (১৮৪২৬)। তবে দ্রুততম ১৪ হাজার রানে দুজনকেই পেছনে ফেলেছেন কোহলি। ২৮৭ ইনিংসে করেছেন তিনি। এতদিন ৩৫০ ইনিংসে শীর্ষে ছিলেন কিংবদন্তি শচীন।

ফিল্ডার হিসেবেও একটা রেকর্ড গড়েছেন কোহলি। ১৫৮ ক্যাচ নিয়ে এখন ভারতের সর্বোচ্চ ক্যাচশিকারি তিনি। এই কীর্তিতে পেছনে ফেলেছেন ১৫৬ ক্যাচ নেওয়া ভারতের সাবেক অধিনায়ক আজহারউদ্দিনকে।