ঢাকা ০১:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের দুটি বিষয় ভারতের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশের দুটি বিষয় ভারতের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশে ক্ষমতা পালাবদলে দুটি বিষয় ভারতের জন্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তার দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে, যা দেশটির দৃষ্টিভঙ্গিতে বেশ প্রভাব ফেলছে; অন্যটি দু’দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, প্রথমত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনা; আমি মনে করি, এটা আমাদের চিন্তাভাবনার ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে। এটা এমন একটা বিষয়, যা নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত এবং আমরা তা বলছি।

দ্বিতীয়ত, তাদের নিজেদের রাজনীতি আছে, আপনি একমত হতে পারেন বা না হতে পারেন, দিন শেষে আমরা প্রতিবেশী। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা আমাদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়।

এ সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ‘ভারতবিরোধী’ বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ আখ্যায়িত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সদস্য যদি প্রতিদিন উঠে দাঁড়িয়ে সবকিছুর দোষ ভারতের ওপর চাপাতে থাকেন… আর কিছু কিছু বিষয়, আপনারা যদি খবরগুলো পড়েন, সম্পূর্ণ হাস্যকর।”

জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি— আপনারা আমাদের প্রতিবেশী, আমরা চাই পরিস্থিতি শান্ত হোক, আমরা চাই বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং অন্যান্য বিষয় এগিয়ে যাক; কিন্তু যদি ক্রমাগত এমন বার্তা বা সংকেত দেওয়া হয়, যেটা ভারতের প্রতি শত্রুতামূলক, সেটা নিশ্চয় আমাদের ভালো লাগবে না।”

‘‘আমরা অবশ্যই আমাদের সব প্রতিবেশীর মঙ্গল চাই। বাংলাদেশের সাথে আমাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে; এটা বিশেষ এক সম্পর্ক, যা ১৯৭১ সাল থেকে চলে আসছে। কিন্তু গত বছর কিছু ঘটনা ঘটেছে, আপনারা সবাই জানেন। আমার মনে হয়, আমাদের জন্য বিষয়টা খুবই উদ্বেগজনক।”

অপরদিকে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত সরকার। পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও অপতথ্য’ এবং ‘অতিরঞ্জিত প্রচারণার’ অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার করেছে।

বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত ইস্যু এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক তলবের ঘটনাও ঘটেছে।

শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক জানতে চান, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা বিভিন্ন ভারতবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন, কোনো কোনো সময় সেগুলো বেশ হিংসাত্মক। এগুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বা দ্বিপক্ষীয় দরকষাকষিতে প্রভাব ফেলছে কি না।”

উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল বলেন, হ্যাঁ, আমরা এ ধরনের বক্তব্যগুলো নজরে নিয়েছি, সেগুলো অবশ্যই ভালো কিছু নয়। কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে এর প্রভাব কী পড়বে, তা সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যক্তিরা তুলে ধরবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফেব্রুয়ারির ২২ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৯২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার

বাংলাদেশের দুটি বিষয় ভারতের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক: জয়শঙ্কর

আপডেট সময় ০৯:৪১:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশে ক্ষমতা পালাবদলে দুটি বিষয় ভারতের জন্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তার দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে, যা দেশটির দৃষ্টিভঙ্গিতে বেশ প্রভাব ফেলছে; অন্যটি দু’দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, প্রথমত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনা; আমি মনে করি, এটা আমাদের চিন্তাভাবনার ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে। এটা এমন একটা বিষয়, যা নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত এবং আমরা তা বলছি।

দ্বিতীয়ত, তাদের নিজেদের রাজনীতি আছে, আপনি একমত হতে পারেন বা না হতে পারেন, দিন শেষে আমরা প্রতিবেশী। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা আমাদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়।

এ সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ‘ভারতবিরোধী’ বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ আখ্যায়িত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সদস্য যদি প্রতিদিন উঠে দাঁড়িয়ে সবকিছুর দোষ ভারতের ওপর চাপাতে থাকেন… আর কিছু কিছু বিষয়, আপনারা যদি খবরগুলো পড়েন, সম্পূর্ণ হাস্যকর।”

জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি— আপনারা আমাদের প্রতিবেশী, আমরা চাই পরিস্থিতি শান্ত হোক, আমরা চাই বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং অন্যান্য বিষয় এগিয়ে যাক; কিন্তু যদি ক্রমাগত এমন বার্তা বা সংকেত দেওয়া হয়, যেটা ভারতের প্রতি শত্রুতামূলক, সেটা নিশ্চয় আমাদের ভালো লাগবে না।”

‘‘আমরা অবশ্যই আমাদের সব প্রতিবেশীর মঙ্গল চাই। বাংলাদেশের সাথে আমাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে; এটা বিশেষ এক সম্পর্ক, যা ১৯৭১ সাল থেকে চলে আসছে। কিন্তু গত বছর কিছু ঘটনা ঘটেছে, আপনারা সবাই জানেন। আমার মনে হয়, আমাদের জন্য বিষয়টা খুবই উদ্বেগজনক।”

অপরদিকে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত সরকার। পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও অপতথ্য’ এবং ‘অতিরঞ্জিত প্রচারণার’ অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার করেছে।

বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত ইস্যু এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক তলবের ঘটনাও ঘটেছে।

শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক জানতে চান, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা বিভিন্ন ভারতবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন, কোনো কোনো সময় সেগুলো বেশ হিংসাত্মক। এগুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বা দ্বিপক্ষীয় দরকষাকষিতে প্রভাব ফেলছে কি না।”

উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল বলেন, হ্যাঁ, আমরা এ ধরনের বক্তব্যগুলো নজরে নিয়েছি, সেগুলো অবশ্যই ভালো কিছু নয়। কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে এর প্রভাব কী পড়বে, তা সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যক্তিরা তুলে ধরবেন।