ঢাকা ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওসির ৫ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওসির ৫ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস

গাজীপুরের শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডলের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থানের পর অজ্ঞাত আসামি নিয়ে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। এছাড়া বিভিন্ন কারখানার ঝুট ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে টোপ ফেলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, অজ্ঞাত আসামি গ্রেপ্তারে আড়াই লাখ টাকা ঘুষ নেন ওসি। ঝুট ব্যবসা থেকে মাসোহারা নেন দেড় লাখ টাকা।

সম্প্রতি এক ঝুট ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওসির পাঁচ মিনিটের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। কথোপকথনের অডিওটি ফাঁস হওয়ার পর থেকে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। সেই অডিওর বিষয়ে সন্ধান করতে গিয়ে বের হয়ে এসেছে হত্যা মামলায় অজ্ঞাত আসামি গ্রেপ্তারে আড়াই লাখ টাকা নেওয়ার খবর।

গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রীপুর মডেল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন জয়নাল আবেদীন মন্ডল। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ লেগেই আছে। দুই দিন আগে ওসির সঙ্গে যে ঝুট ব্যবসায়ীর কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে তার নাম সেলিম সিকদার। তিনি গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। তার দাবি, অডিওটি আরও দুই মাস আগের। তবে কীভাবে এটি ফাঁস হলো তার জানা নেই। তিনি দাবি করেন, তার মোবাইল ফোন হারানোর পর এটি ফাঁস হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বিগত সময় বেশ কয়েকটি কারখানার ঝুট ব্যবসা তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ নিয়ে দ্বন্দ্বও রয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও সেলিম তার সবাইকে ম্যানেজ করে তার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন।

ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার জানান, গণঅভ্যুত্থানের সময়ে একটি হত্যা মামলায় তাকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করেছিল শ্রীপুর থানা পুলিশ। পরে একমাস জেল খেটে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি আগের ঝুট ব্যবসা নানাভাবে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দাবি করেন, অডিও ফাঁসের পর তিনি নানাভাবে হুঁমকি পাচ্ছেন। ফাঁস হওয়া অডিওটি তার নয়- এটি নিশ্চিত করতেও তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, গ্রেপ্তার করার দিন তার কাছ থেকে ওসি আড়াই লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন।

এদিকে ফাঁস হওয়া ৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই অডিও কথোপকথনে ওসিকে বলতে শোনা যায়, তিনি স্থানীয় একজনের মধ্যস্থতায় সেলিমকে কারখানা থেকে ঝুট বের করতে সহযোগিতা করছেন। স্থানীয় ওই ব্যক্তিকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে বিনা বাধায় ঝুট বের করে নিয়ে যেতে পারবেন বলে ওসি সেলিমকে নিশ্চয়তা দেন।

অডিওর এক পর্যায়ে ওসিকে বলতে শোনা যায়, ‘তোর নানা আমাকে দেখে না কেন? আমি এত কিছু করতেছি। চাপ নিতেছি। তোর নানাকে বলে আমাকে লাখ পাঁচেক টাকা দিস।’ অডিওর অন্য অংশে সেলিমের কাছে ওসিকে ফুল হাতা টিশার্ট চাইতে শোনা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্রীপুর থানায় রমরমা ঘুষ বাণিজ্য চলছে। কোনো অভিযোগ-মামলা করতে গেলে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দিতে হয়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অভু্যত্থানের পরেও অধিকাংশ পুলিশ আগের রূপ পাল্টাতে পারেনি। এখনো মানুষকে জিম্মি করে ঘুষ বাণিজ্য করে যাচ্ছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে ধারদেনা করে ঘুষের টাকা জোগাড় করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

টিভিতে যে খেলা দেখবেন আজ

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওসির ৫ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস

আপডেট সময় ০৯:০০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

গাজীপুরের শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডলের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থানের পর অজ্ঞাত আসামি নিয়ে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। এছাড়া বিভিন্ন কারখানার ঝুট ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে টোপ ফেলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, অজ্ঞাত আসামি গ্রেপ্তারে আড়াই লাখ টাকা ঘুষ নেন ওসি। ঝুট ব্যবসা থেকে মাসোহারা নেন দেড় লাখ টাকা।

সম্প্রতি এক ঝুট ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওসির পাঁচ মিনিটের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। কথোপকথনের অডিওটি ফাঁস হওয়ার পর থেকে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। সেই অডিওর বিষয়ে সন্ধান করতে গিয়ে বের হয়ে এসেছে হত্যা মামলায় অজ্ঞাত আসামি গ্রেপ্তারে আড়াই লাখ টাকা নেওয়ার খবর।

গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রীপুর মডেল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন জয়নাল আবেদীন মন্ডল। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ লেগেই আছে। দুই দিন আগে ওসির সঙ্গে যে ঝুট ব্যবসায়ীর কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে তার নাম সেলিম সিকদার। তিনি গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। তার দাবি, অডিওটি আরও দুই মাস আগের। তবে কীভাবে এটি ফাঁস হলো তার জানা নেই। তিনি দাবি করেন, তার মোবাইল ফোন হারানোর পর এটি ফাঁস হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বিগত সময় বেশ কয়েকটি কারখানার ঝুট ব্যবসা তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ নিয়ে দ্বন্দ্বও রয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও সেলিম তার সবাইকে ম্যানেজ করে তার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন।

ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার জানান, গণঅভ্যুত্থানের সময়ে একটি হত্যা মামলায় তাকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করেছিল শ্রীপুর থানা পুলিশ। পরে একমাস জেল খেটে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি আগের ঝুট ব্যবসা নানাভাবে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দাবি করেন, অডিও ফাঁসের পর তিনি নানাভাবে হুঁমকি পাচ্ছেন। ফাঁস হওয়া অডিওটি তার নয়- এটি নিশ্চিত করতেও তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, গ্রেপ্তার করার দিন তার কাছ থেকে ওসি আড়াই লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন।

এদিকে ফাঁস হওয়া ৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই অডিও কথোপকথনে ওসিকে বলতে শোনা যায়, তিনি স্থানীয় একজনের মধ্যস্থতায় সেলিমকে কারখানা থেকে ঝুট বের করতে সহযোগিতা করছেন। স্থানীয় ওই ব্যক্তিকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে বিনা বাধায় ঝুট বের করে নিয়ে যেতে পারবেন বলে ওসি সেলিমকে নিশ্চয়তা দেন।

অডিওর এক পর্যায়ে ওসিকে বলতে শোনা যায়, ‘তোর নানা আমাকে দেখে না কেন? আমি এত কিছু করতেছি। চাপ নিতেছি। তোর নানাকে বলে আমাকে লাখ পাঁচেক টাকা দিস।’ অডিওর অন্য অংশে সেলিমের কাছে ওসিকে ফুল হাতা টিশার্ট চাইতে শোনা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্রীপুর থানায় রমরমা ঘুষ বাণিজ্য চলছে। কোনো অভিযোগ-মামলা করতে গেলে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দিতে হয়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অভু্যত্থানের পরেও অধিকাংশ পুলিশ আগের রূপ পাল্টাতে পারেনি। এখনো মানুষকে জিম্মি করে ঘুষ বাণিজ্য করে যাচ্ছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে ধারদেনা করে ঘুষের টাকা জোগাড় করছে।