ঢাকা ০৬:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় প্রাণহানি ১০ হাজার ছাড়াল

গাজায় প্রাণহানি ১০ হাজার ছাড়াল

প্রায় এক মাস ধরে চলমান যুদ্ধে গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধ অবসানের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, যথেষ্ট হয়েছে। অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন তারা। যুদ্ধবিরতির জন্য ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বলেছে, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে তাণ্ডবের সময় হামাসের হাতে জিম্মিদের প্রথমে মুক্তি দেওয়া উচিত।

জাতিসংঘের প্রধানরা যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘একটি পুরো জনগোষ্ঠী অবরুদ্ধ এবং হামলার মুখে রয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের বাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল এবং উপাসনালয়ে বোমা হামলা করা হয়েছে। এটা একেবারে গ্রহণযোগ্য নয়।’’আমাদের অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি দরকার। ৩০ দিন হয়ে গেছে। যথেষ্ট হয়েছে। এই যুদ্ধ এখনই বন্ধ করা উচিত।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থার প্রধানদের মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস এবং জাতিসংঘের দাতব্যবিষয়ক সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস রয়েছেন।

সোমবার হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ১০ হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জন শিশু রয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রতিনিধি গাজা থেকে বলেছেন, ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে রোববার রাতে আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রপথে সবচেয়ে তীব্র বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর হামাসের হাতে জিম্মি রয়েছেন ২৪২ জনের বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি। ইসরায়েল বলেছে, তাদের সৈন্যরা গাজা শহর ঘিরে রেখেছে। তবে এই অভিযানে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। ওই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যুদ্ধ শুরুর পর দ্বিতীয়বারের মতো সফরে রয়েছেন। হামাস-ইসরায়েল সংঘাত ওই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ঠেকাতে তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সোমবার ইসরায়েলি হামলায় গাজা নগরী ও উপত্যকার দক্ষিণের জাওয়াইদা দেইর আল-বালাহর আশপাশে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস-সংশ্লিষ্ট আল-আকসা টিভি চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১০৬ জন আহত হয়েছেন।ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, সৈন্যরা হামাসের সুড়ঙ্গ, সামরিক স্থাপনা, পর্যবেক্ষণ চৌকি এবং ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ চৌকিতে হামলা করেছে। ইসরায়েলের স্থল সেনারা হামলার প্রস্তুতির সময় হামাসের পর্যবেক্ষণ চৌকি, প্রশিক্ষণ এলাকা এবং ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করলো পাকিস্তান

গাজায় প্রাণহানি ১০ হাজার ছাড়াল

আপডেট সময় ১০:১৩:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩

প্রায় এক মাস ধরে চলমান যুদ্ধে গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধ অবসানের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, যথেষ্ট হয়েছে। অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন তারা। যুদ্ধবিরতির জন্য ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বলেছে, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে তাণ্ডবের সময় হামাসের হাতে জিম্মিদের প্রথমে মুক্তি দেওয়া উচিত।

জাতিসংঘের প্রধানরা যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘একটি পুরো জনগোষ্ঠী অবরুদ্ধ এবং হামলার মুখে রয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের বাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল এবং উপাসনালয়ে বোমা হামলা করা হয়েছে। এটা একেবারে গ্রহণযোগ্য নয়।’’আমাদের অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি দরকার। ৩০ দিন হয়ে গেছে। যথেষ্ট হয়েছে। এই যুদ্ধ এখনই বন্ধ করা উচিত।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থার প্রধানদের মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস এবং জাতিসংঘের দাতব্যবিষয়ক সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস রয়েছেন।

সোমবার হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ১০ হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জন শিশু রয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রতিনিধি গাজা থেকে বলেছেন, ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে রোববার রাতে আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রপথে সবচেয়ে তীব্র বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর হামাসের হাতে জিম্মি রয়েছেন ২৪২ জনের বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি। ইসরায়েল বলেছে, তাদের সৈন্যরা গাজা শহর ঘিরে রেখেছে। তবে এই অভিযানে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। ওই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যুদ্ধ শুরুর পর দ্বিতীয়বারের মতো সফরে রয়েছেন। হামাস-ইসরায়েল সংঘাত ওই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ঠেকাতে তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সোমবার ইসরায়েলি হামলায় গাজা নগরী ও উপত্যকার দক্ষিণের জাওয়াইদা দেইর আল-বালাহর আশপাশে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস-সংশ্লিষ্ট আল-আকসা টিভি চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১০৬ জন আহত হয়েছেন।ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, সৈন্যরা হামাসের সুড়ঙ্গ, সামরিক স্থাপনা, পর্যবেক্ষণ চৌকি এবং ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ চৌকিতে হামলা করেছে। ইসরায়েলের স্থল সেনারা হামলার প্রস্তুতির সময় হামাসের পর্যবেক্ষণ চৌকি, প্রশিক্ষণ এলাকা এবং ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।