কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষ্ণানন্দ বকশী সীমান্তে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে পাঁচ কৃষককে মারধর করার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে গোরুকমন্ডল সীমান্তে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার বারোমাসিয়া নদীর তীরে নামাটারী আব্দুল্লার বাড়ির উঠানে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিএসএফ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।
পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম ও ভারতের পক্ষে ০৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল অমিত শাহ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ভারতের ১৩৮ নারায়নগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গোড়কমন্ডল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে অনুপ্রবেশ করে। এ সময় ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করা বাংলাদেশিরা কৃষকরা তাদের বাধা দিলে মারধর করে। মারধরে পাঁচ বাংলাদেশি আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত বাংলাদেশিরা হলেন, কৃষ্ণানন্দ বকসী গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে মো. শামসুল, খোকা মিয়ার ছেলে জাবেদ আলী, আবুল কাশেমের ছেলে তাজুল ইসলাম, মুকুল মিয়ার ছেলে মো. রিপন ও মো. মান্নানের ছেলে কাশেম আলী।
মারধরের শিকার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভারতের পাঁচ জওয়ান শূন্যরেখা পার হয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। আমি জমিতে কাজ করছি। তারা বলেন— এখানে থাকা যাবে না, তোমরা চলে যাও। আমি বলি, আমার জমিতে আমি কাজ করবো না কেন, আপনারা আপনাদের দেশে চলে যান। এরপর বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা আমার শার্টের কলার ধরে মারধর করে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা কাশেম আলী বলেন, ‘‘দুপুরে ভারতের জওয়ানরা বাংলাদেশের ভিতরে আসলে আমরা বাধা দেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের মারধর করে।’’ আরেক বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিএসএফেরা সদস্যরা স্থানীয়দের মারধর করলে আমরা গ্রামবাসী একজোট হয়ে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।’’
গোরকমন্ডল বিওপি ক্যাম্পের হাবিলদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফের মারধরের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। আমরা গতকাল থেকে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।’’
এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম বলেন, ‘‘আমরা আজ শনিবার দুপুরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে। ভবিষতে এমনটা ঘটবে না বলেও জানিয়েছেন তারা।’’