বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ যেসব জেলার ব্যাংকের শাখাগুলোতে বেশি এসেছে, তাদের চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে প্রবাসী আয়ের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলা। পরের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট জেলা।
অবশ্য দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামের ছয় জেলাই রয়েছে প্রবাসী আয়ের শীর্ষ দশের তালিকায়। এই বিভাগের মোট ১১টি জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম রয়েছে শীর্ষ তালিকার দ্বিতীয়তে। এ ছাড়া শীর্ষে আছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী ও চাঁদপুর। তবে, সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছে একই বিভাগের বান্দরবান জেলায়।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জুলাই থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সাত মাস বাংলাদেশ ব্যাংকের জেলাভিত্তিক হালনাগাদ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের তথ্য বলছে এসব কথা। সেখানে দেখা গেছে, গত সাত মাসে প্রবাসীরা দেশে এক হাজার ৫৯৬ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে আলোচিত সাত মাসে প্রবাসী আয় ঢাকা বিভাগে এসেছে ৭৭৮ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। যা শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে। এই বিভাগের মোট ১৩টি জেলার মধ্যে ঢাকা রয়েছে শীর্ষ তালিকার প্রথমে। আলোচিত সাত মাসে ঢাকা জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৫২৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। একই বিভাগের টাঙ্গাইল জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৩২ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে শীর্ষ নবম অবস্থানে আছে।
এছাড়া অন্যান্য বিভাগের মধ্যে গত সাত মাসে চট্টগ্রাম বিভাগের এসেছে ৪৩৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, সিলেটের ১৪৩ কোটি ৫২ লাখ ডলার, খুলনায় ৭৪ কোটি ১৯ লাখ ডলার, রাজশাহীতে ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, বরিশালে ৪৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, ময়মনসিংহে ৩৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার এবং রংপুরে ২৫ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।
অপরদিক প্রবাসী আয়ের শীর্ষ দশের তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জেলা। আলোচিত সাত মাসে এই বিভাগে প্রবাসী আয় এসেছে ৪৩৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ১২৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। এছাড়া কুমিল্লা জেলায় ৮৬ কোটি ২৫ লাখ ডলার, নোয়াখালীতে ৪৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪৬ কোটি পাঁচ লাখ ডলার, ফেনীতে ৪৫ কোটি ১৫ লাখ ডলার এবং চাঁদপুরে ৪৩ কোটি ১৩ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। সে হিসেবে, চট্টগ্রাম বিভাগে কুমিল্লা দ্বিতীয় এবং দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে। এরপর নোয়াখালী পঞ্চম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬ষ্ঠ, ফেনী সপ্তম ও অষ্টম অবস্থানে আছে চাঁদপুর। একই বিভাগের বান্দরবান জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে এক কোটি ২৭ লাখ ডলার। যা দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন এটি। সবনিম্নে দ্বিতীয়তে রয়েছে রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট। এই জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে এক কোটি ৪৩ লাখ ডলার।
এছাড়া সিলেট বিভাগে রয়েছে দুটি জেলা। এর মধ্যে সিলেট জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৭৩ কোটি পাঁচ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে শীর্ষ চতুর্থ অবস্থানে আছে। একই বিভাগের মৌলভীবাজার জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে দশম অবস্থানে আছে।
এ ছাড়া অন্যান্য জেলার মধ্যে মুন্সীগঞ্জের মধ্যেমে প্রবাসী আয় এসেছে ২৮ কোটি ১০ লাখ ডলার, নরসিংদীতে ২৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, লক্ষ্মীপুরে ২৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, নারায়ণগঞ্জে ২৫ কোটি চার লাখ ডলার, মাদারীপুরে ২৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, গাজীপুরে ২৩ কোটি ১৪ লাখ ডলার, কিশোরগঞ্জে ২২ কোটি ২০ লাখ ডলার, সুনামগঞ্জে ১৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, হবিগঞ্জে ১৯ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, শরীয়তপুরে ১৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার, বরিশালে ১৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ফরিদপুরে ১৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, ময়মনসিংহে ১৭ কোটি পাঁচ লাখ ডলার, মানিকগঞ্জে ১৫ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, যশোরে ১২ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, বগুড়ায় ১১ কোটি ৭২ লাখ ডলার, কুষ্টিয়াতে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, খুলনায় ৯ কোটি ৯১ লাখ ডলার, গোপালগঞ্জে ৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার, জামালপুরে ৯ কোটি ২০ লাখ ডলার, কক্সবাজারে ৯ কোটি পাঁচ লাখ ডলার, চুয়াডাঙ্গায় আট কোটি ৪৯ লাখ ডলার, পাবনায় ৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আট কোটি ছয় লাখ ডলার, রাজশাহীতে সাত কোটি ৩০ লাখ ডলার, ভোলায় সাত কোটি ২৬ লাখ ডলার, সিরাজগঞ্জে সাত কোটি ছয় লাখ ডলার, ঝিনাইদহে ছয় কোটি ৯৩ লাখ ডলার, রাজবাড়ীতে ছয় কোটি ৭২ লাখ ডলার, নওগাঁতে ছয় কোটি ৫৬ লাখ ডলার, রংপুরে ছয় কোটি ১৬ লাখ ডলার, পিরোজপুরে ছয় কোটি ১৫ লাখ ডলার, মেহেরপুরে ছয় কোটি ছয় লাখ ডলার, সাতক্ষীরাতে পাঁচ কোটি ৯১ লাখ ডলার, পটুয়াখালীতে চার কোটি ৯৩ লাখ ডলার, বাগেরহাটের চার কোটি ৯১ লাখ ডলার, মাগুরায় চার কোটি ৮৬ লাখ ডলার, দিনাজপুরে চার কোটি ৭০ হাজার ডলার, নাটোরে চার কোটি ৬২ লাখ ডলার, বরগুনায় চার কোটি ৫২ লাখ ডলার, গাইবান্ধায় চার কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ঝালকাঠিতে চার কোটি ২০ লাখ ডলার, নেত্রকোণায় চার কোটি ছয় লাখ ডলার, নড়াইলে তিন কোটি ৫০ লাখ ডলার, কুড়িগ্রামে তিন কোটি দুই লাখ ডলার, শেরপুরে দুই কোটি ৮৪ লাখ ডলার, নীলফামারীতে দুই কোটি ৬৩ লাখ ডলার, খাগড়াছড়িতে দুই কোটি ৪৪ লাখ ডলার, জয়পুরে দুই কোটি ৩৯ লাখ ডলার, ঠাকুরগাঁওতে দুই কোটি ২১ লাখ ডলার, পঞ্চগড়ে এক কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং রাঙ্গামাটিতে এক কোটি ৪৫ লাখ ডলার।