ঢাকা ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোবিপ্রবির সম্পদ কারচুপির অভিযোগ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে

নির্মাণ কাজ শেষে কাঠ (সাটারি) নিয়ে যাওয়ার গেইট পাস নিয়ে স্টিল শীট নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) টেন্ডার পাওয়া KMC Bricks নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে প্রতিষ্ঠানটির দাবি শীটগুলো তাদের সম্পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারের ভাষ্যমতে বর্তমান নির্মাণ কাজে স্টিল শীট এর কোন ব্যবহার নেই।

৭ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সকাল ১০ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইটে এই ঘটনা ঘটে। কাঠ (সাটারি) বোঝায় ট্রাকের মধ্যে গোপনে স্টিল শীট গুলো বের করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

জানা যায়, নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য কাঠ (সাটারি) নিয়ে এসেছিলো KMC Bricks। যা কাজ শেষে বের করে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর থেকে গেইট পাস নেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ট্রাকের মধ্যে কাঠ (সাটারি) এর নিচে লুকিয়ে স্টিল শীট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে খবরে গাড়িটি আটক করে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।

দায়িত্বরত আনসার সদস্য তারেক রহমান ও মাহমুদ জানান, সকালে একটি পাওয়ার টিলার এর ট্রাকে করে কাঠ (সাটারি) নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমরা গেইট পাস অনুযায়ী চেক করতে গিয়ে দেখি সেখানে এর বাইরে কিছু স্টিল শীট ছিলো। যা পাস কার্ডে লেখা ছিলো না। পরবর্তীতে আমরা সেগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে রাখি।

গেইট পাস এর বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন আলম বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। আমরা কাঠ (সাটারি) বের করার গেইট পাস দিয়েছি। এর বাইরে কিছু নেওয়ার জন্য দেওয়া হয়নি।”

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি স্টিল শীট ক্যাম্পাসে নিয়ে আসছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই বা তারা আমাদের অবগত করে নি।

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান KMC Bricks এর ম্যানেজার রুমেল জানান, “অভিযোগটি সত্য নয়। নোবিপ্রবিতে আমার তত্ত্বাবধানে দুইটি কাজ চলমান আছে। কাজের জন্য সেগুলো আনা হয়েছিলো গতবছর। বন্য- আন্দোলন সহ নানা কারণে তা থেকে যায়। আজকে সেগুলো বের করে আনতে গেলে গেইট পাস না থাকায় আনসার সদস্যরা আটকে দেয়।”

তিনি আরো জানান, রাস্তার কাজে এবং পরিবহন শেড এর বিম তৈরির ব্যবহারের জন্য শীটগুলো আনা হয়েছে। এই কাজে নিযুক্ত রাজমিস্ত্রী আবদুর রহমান সেগুলো নিয়ে এসেছে। যা পরিবহন শেড এর গুদামগুলোতে রাখা ছিলো। সেখানে সিসিটিভি পরীক্ষা করলে বা তদন্ত করলে আমার মনে এটা বের হয়ে আসবে।

তবে গেইট পাস ছাড়া কেনো স্টিল শীট বের করা হচ্ছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আসলে লেখায় ভুল হয়েছে। রাস্তায় শীটের ব্যবহার করা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জামাল হোসাইন বলেন, “আমি প্ল্যানিং কমিশনের কাজে ঢাকায় এসেছি। এধরণের একটা ঘটনা আমি শুনেছি। রাস্তা ও পরিবহন শেড এর নির্মাণ কাজ যে ইঞ্জিনিয়াররা তদারকি করছেন তাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন এই কাজে স্টিল শীট এর কোন কাজ নেই।ক্যাম্পাসের ভেতর কোন জায়গা থেকে এবং কারা এগুলো বাইরে নিয়ে যাচ্ছে আমরা রবিবার অফিস খুললে এটা নিয়ে বসবো। ইতিমধ্যে যে লোকটি এই কাজ করেছে তাকে আগামীকাল থেকে নির্মাণ কাজে না রাখতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলেছি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে লোকটি দোষী হলে বা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যদি দোষী হয় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে নাগরিক কমিটি

নোবিপ্রবির সম্পদ কারচুপির অভিযোগ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় ০৮:০৯:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নির্মাণ কাজ শেষে কাঠ (সাটারি) নিয়ে যাওয়ার গেইট পাস নিয়ে স্টিল শীট নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) টেন্ডার পাওয়া KMC Bricks নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে প্রতিষ্ঠানটির দাবি শীটগুলো তাদের সম্পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারের ভাষ্যমতে বর্তমান নির্মাণ কাজে স্টিল শীট এর কোন ব্যবহার নেই।

৭ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সকাল ১০ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইটে এই ঘটনা ঘটে। কাঠ (সাটারি) বোঝায় ট্রাকের মধ্যে গোপনে স্টিল শীট গুলো বের করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

জানা যায়, নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য কাঠ (সাটারি) নিয়ে এসেছিলো KMC Bricks। যা কাজ শেষে বের করে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর থেকে গেইট পাস নেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ট্রাকের মধ্যে কাঠ (সাটারি) এর নিচে লুকিয়ে স্টিল শীট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে খবরে গাড়িটি আটক করে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।

দায়িত্বরত আনসার সদস্য তারেক রহমান ও মাহমুদ জানান, সকালে একটি পাওয়ার টিলার এর ট্রাকে করে কাঠ (সাটারি) নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমরা গেইট পাস অনুযায়ী চেক করতে গিয়ে দেখি সেখানে এর বাইরে কিছু স্টিল শীট ছিলো। যা পাস কার্ডে লেখা ছিলো না। পরবর্তীতে আমরা সেগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে রাখি।

গেইট পাস এর বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন আলম বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। আমরা কাঠ (সাটারি) বের করার গেইট পাস দিয়েছি। এর বাইরে কিছু নেওয়ার জন্য দেওয়া হয়নি।”

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি স্টিল শীট ক্যাম্পাসে নিয়ে আসছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই বা তারা আমাদের অবগত করে নি।

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান KMC Bricks এর ম্যানেজার রুমেল জানান, “অভিযোগটি সত্য নয়। নোবিপ্রবিতে আমার তত্ত্বাবধানে দুইটি কাজ চলমান আছে। কাজের জন্য সেগুলো আনা হয়েছিলো গতবছর। বন্য- আন্দোলন সহ নানা কারণে তা থেকে যায়। আজকে সেগুলো বের করে আনতে গেলে গেইট পাস না থাকায় আনসার সদস্যরা আটকে দেয়।”

তিনি আরো জানান, রাস্তার কাজে এবং পরিবহন শেড এর বিম তৈরির ব্যবহারের জন্য শীটগুলো আনা হয়েছে। এই কাজে নিযুক্ত রাজমিস্ত্রী আবদুর রহমান সেগুলো নিয়ে এসেছে। যা পরিবহন শেড এর গুদামগুলোতে রাখা ছিলো। সেখানে সিসিটিভি পরীক্ষা করলে বা তদন্ত করলে আমার মনে এটা বের হয়ে আসবে।

তবে গেইট পাস ছাড়া কেনো স্টিল শীট বের করা হচ্ছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আসলে লেখায় ভুল হয়েছে। রাস্তায় শীটের ব্যবহার করা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জামাল হোসাইন বলেন, “আমি প্ল্যানিং কমিশনের কাজে ঢাকায় এসেছি। এধরণের একটা ঘটনা আমি শুনেছি। রাস্তা ও পরিবহন শেড এর নির্মাণ কাজ যে ইঞ্জিনিয়াররা তদারকি করছেন তাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন এই কাজে স্টিল শীট এর কোন কাজ নেই।ক্যাম্পাসের ভেতর কোন জায়গা থেকে এবং কারা এগুলো বাইরে নিয়ে যাচ্ছে আমরা রবিবার অফিস খুললে এটা নিয়ে বসবো। ইতিমধ্যে যে লোকটি এই কাজ করেছে তাকে আগামীকাল থেকে নির্মাণ কাজে না রাখতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলেছি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে লোকটি দোষী হলে বা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যদি দোষী হয় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”