ঢাকা ০৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী মেডিকেল আইসিইউ বুক কর্নারে বই পড়ে সময় কাটছে রোগীর স্বজনদের

রোগীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের মুহূর্ত কাটে হাসপাতালের আইসিইউ বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। অপেক্ষমান স্বজনদের আইসিইউতে প্রবেশাধিকার না থাকলেও বাইরে প্রিয়জনের দুশ্চিন্তায় ঠাঁই বসে থাকেন অনেকে। রোগীর স্বজনদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) কর্তৃপক্ষ। স্বজনদের জন্য বিশ্রাম কক্ষে ‘আইসিইউ বুক কর্নার’ এর ব্যবস্থা করেছে সংশ্লিষ্টরা। এই বুক কর্নারে বিভিন্ন লেখকের ৫০টির বেশি বই রয়েছে।

রোগীর স্বজনরা রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) বিশ্রাম কক্ষে বসে বই পড়ে সময় কাটাতে পারবেন খুব সহজেই। সেখানে বিভিন্ন ম্যাগাজিনসহ গল্প, গদ্যের বই রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি- ‘বইগুলো আইসিইউয়ের চিকিৎসক, নার্সিং কর্মকর্তা, টেকনোলজিস্টগণ তাদের বই দিয়ে আইসিইউ বুক কর্নারটি সমৃদ্ধ করেছেন। অহেতুক গল্প, মোবাইল ব্যবহার না করে সবাই বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালের আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায়, সাব্বির ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বই পড়ছেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন থেকে অসুস্থ অবস্থায় আমার স্বজন আইসিইউতে রয়েছে। আগের তুলনায় শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অলস সময় না কাটিয়ে বই পড়ছি। ভালোই লাগছে।

অপর রোগীর স্বজন বলেন, এমন উদ্যাগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। আসলে জ্ঞান আহরণে জন্য পড়াশোনার বিকল্প নেই। এখানে কয়েক ধরনের বই রয়েছে। এই প্রজন্ম তো বই পড়তে চাই না। তাদের মধ্যে আমিও। তবে অনেক দিন পড়ে বেশ কয়েক পাতা বই পড়লাম। অনেকগুলো বই কয়েক পাতা করে পড়তে ভালোই লাগল, সময়ও কাটল ভালো।

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ প্রধান ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল তার ফেসবুক পোস্টে লেখেছেন, ‘২০১১ সালে যখন রামেক হাসপাতালে আইসিইউ শুরু করি, তখন থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল আইসিইউর বাইরে অপেক্ষমান স্বজনদের জন্য একটা মানসম্মত বসার ব্যবস্থা করা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কৃপায়, এ মাসেই নতুন আইসিইউ কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন অংশে সেটা করা সম্ভব হয়েছে।

এখানে অনেককেই দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে হয় সেজন্যে, ওখানে একটি বই কর্নার করা হয়েছে। আইসিইউ এর সব চিকিৎসক, নার্সিং কর্মকর্তা, টেকনোলজিস্টগণ কমপক্ষে একটি করে বই দান করে এটি সমৃদ্ধ করেছেন। সেখানে বসে আইসিইউতে ভর্তি রোগীর স্বজনদের বই-ম্যাগাজিন পড়ার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের জন্য বিশ্রাম কক্ষে বই পড়ার সুযোগ অন্য কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, আইসিইউ এমন একটা জায়গায় সেখানে রোগী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকে। সেই সময় রোগীর স্বজনরা সৃষ্টিকর্তার সাহায্য প্রার্থনা করেন। এছাড়া এই সময়ে অনেকে মোবাইল বা শুধু বসে থেকে অলস সময় কাটান।

ট্যাগস :

কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে মহাসড়কে আলু ফেলে কৃষকদের বিক্ষোভ

রাজশাহী মেডিকেল আইসিইউ বুক কর্নারে বই পড়ে সময় কাটছে রোগীর স্বজনদের

আপডেট সময় ০৪:০৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রোগীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের মুহূর্ত কাটে হাসপাতালের আইসিইউ বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। অপেক্ষমান স্বজনদের আইসিইউতে প্রবেশাধিকার না থাকলেও বাইরে প্রিয়জনের দুশ্চিন্তায় ঠাঁই বসে থাকেন অনেকে। রোগীর স্বজনদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) কর্তৃপক্ষ। স্বজনদের জন্য বিশ্রাম কক্ষে ‘আইসিইউ বুক কর্নার’ এর ব্যবস্থা করেছে সংশ্লিষ্টরা। এই বুক কর্নারে বিভিন্ন লেখকের ৫০টির বেশি বই রয়েছে।

রোগীর স্বজনরা রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) বিশ্রাম কক্ষে বসে বই পড়ে সময় কাটাতে পারবেন খুব সহজেই। সেখানে বিভিন্ন ম্যাগাজিনসহ গল্প, গদ্যের বই রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি- ‘বইগুলো আইসিইউয়ের চিকিৎসক, নার্সিং কর্মকর্তা, টেকনোলজিস্টগণ তাদের বই দিয়ে আইসিইউ বুক কর্নারটি সমৃদ্ধ করেছেন। অহেতুক গল্প, মোবাইল ব্যবহার না করে সবাই বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালের আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায়, সাব্বির ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বই পড়ছেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন থেকে অসুস্থ অবস্থায় আমার স্বজন আইসিইউতে রয়েছে। আগের তুলনায় শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অলস সময় না কাটিয়ে বই পড়ছি। ভালোই লাগছে।

অপর রোগীর স্বজন বলেন, এমন উদ্যাগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। আসলে জ্ঞান আহরণে জন্য পড়াশোনার বিকল্প নেই। এখানে কয়েক ধরনের বই রয়েছে। এই প্রজন্ম তো বই পড়তে চাই না। তাদের মধ্যে আমিও। তবে অনেক দিন পড়ে বেশ কয়েক পাতা বই পড়লাম। অনেকগুলো বই কয়েক পাতা করে পড়তে ভালোই লাগল, সময়ও কাটল ভালো।

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ প্রধান ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল তার ফেসবুক পোস্টে লেখেছেন, ‘২০১১ সালে যখন রামেক হাসপাতালে আইসিইউ শুরু করি, তখন থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল আইসিইউর বাইরে অপেক্ষমান স্বজনদের জন্য একটা মানসম্মত বসার ব্যবস্থা করা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কৃপায়, এ মাসেই নতুন আইসিইউ কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন অংশে সেটা করা সম্ভব হয়েছে।

এখানে অনেককেই দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে হয় সেজন্যে, ওখানে একটি বই কর্নার করা হয়েছে। আইসিইউ এর সব চিকিৎসক, নার্সিং কর্মকর্তা, টেকনোলজিস্টগণ কমপক্ষে একটি করে বই দান করে এটি সমৃদ্ধ করেছেন। সেখানে বসে আইসিইউতে ভর্তি রোগীর স্বজনদের বই-ম্যাগাজিন পড়ার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের জন্য বিশ্রাম কক্ষে বই পড়ার সুযোগ অন্য কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, আইসিইউ এমন একটা জায়গায় সেখানে রোগী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকে। সেই সময় রোগীর স্বজনরা সৃষ্টিকর্তার সাহায্য প্রার্থনা করেন। এছাড়া এই সময়ে অনেকে মোবাইল বা শুধু বসে থেকে অলস সময় কাটান।