ঢাকা ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাল শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা

কাল শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা

মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার বিকাল ৩ টায় শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫। এবারের বই মেলার মূল প্রতিপাদ্য-‘ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান:নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ।’

‘অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি’র সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন বৃহষ্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উদ্বোধন করবেন ।

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। স্বাগত বক্তৃতা করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক আবুল কাশেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।

চলতি বছরে আয়োজিত এ মেলার রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লাল, কালো ও সাদা। বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে লাল, শোকের প্রতীক হিসেবে কালো এবং আশার প্রদীপ হিসেবে চিরকালীন সাদা।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। সুতরাং অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের অমর একুশে বইমেলার প্রেক্ষাপটটাও ভিন্ন। এবারের অমর একুশে মেলায় গণ অভ্যুত্থানের নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলায় থাকছে ‘জুলাই চত্বর’। মেলায় বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হবে গণঅভ্যুত্থানকে।

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এবার বইমেলা প্রাঙ্গণে পরিবেশ সুরক্ষা সচেতন এবং জিরো ওয়েস্ট পরিবেশ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে আয়োজনস্থল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্থাপিত সব স্টল, দোকান, মঞ্চ, ব্যানার, লিফলেট, প্রচারপত্র, ফাস্টফুড, কফিশপ, খাবারের দোকান ইত্যাদি প্রস্তুতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার শতভাগ পরিহার করে পুন:ব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ যেমন পাট, কাপড়, কাগজ ইত্যাদি ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহবান জানানো হয়েছে।

প্রতিবছরের মতো এবারেও ২০২৪ সালে প্রকাশিত বইয়ের গুণগতমান ও শৈল্পিক উৎকর্ষের উপর ভিত্তি করে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের পুরস্কার দেয়া হবে।

সেরা বইয়ের জন্য দেওয়া হবে —চিত্তরঞ্জন পুরষ্কার, শৈল্পিকভাবে সেরা বই প্রকাশের জন্য দেওয়া হবে-মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, সেরা শিশুতোষ গ্রন্থ প্রকাশের জন্য দেওয়া হবে -রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার, স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে- কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার।

পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া)। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

অমর একুশে বইমেলায় এবার বেড়েছে আয়তন ও প্রকাশক সংখ্যাও। মোট ৭৮০ টি প্রকাশনা থাকবে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টিসহ মোট ইউনিট থাকবে ১০৮৪টি (গতবছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২টি এবং ইউনিট ছিল ৯৪৬টি)। এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি (গত বছর প্যাভিলয়নের সংখ্যা ছিল ৩৭টি। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। সেখানে প্রায় ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশু চত্বরে মোট প্রতিষ্ঠান ৭৬টি এবং ইউনিট ১২০টি (গত বছর ছিল ৬৮টি এবং ইউনিট ১০৯টি)।

এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে তবে আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানের কারণে গতবারের মেলার থেকে বের হওয়ার পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির গেটের কাছাকাছি জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যাান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট ৪টি প্রবেশ ও বাহির পথ থাকবে।

খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে বিন্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, খাবারের স্টলগুলোকে এবার বিশেষভাবে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে। নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। শিশুচত্বর মন্দির গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে, যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্খিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাল শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা

আপডেট সময় ০৯:৪২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার বিকাল ৩ টায় শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫। এবারের বই মেলার মূল প্রতিপাদ্য-‘ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান:নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ।’

‘অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি’র সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন বৃহষ্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উদ্বোধন করবেন ।

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। স্বাগত বক্তৃতা করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক আবুল কাশেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।

চলতি বছরে আয়োজিত এ মেলার রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লাল, কালো ও সাদা। বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে লাল, শোকের প্রতীক হিসেবে কালো এবং আশার প্রদীপ হিসেবে চিরকালীন সাদা।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। সুতরাং অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের অমর একুশে বইমেলার প্রেক্ষাপটটাও ভিন্ন। এবারের অমর একুশে মেলায় গণ অভ্যুত্থানের নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলায় থাকছে ‘জুলাই চত্বর’। মেলায় বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হবে গণঅভ্যুত্থানকে।

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এবার বইমেলা প্রাঙ্গণে পরিবেশ সুরক্ষা সচেতন এবং জিরো ওয়েস্ট পরিবেশ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে আয়োজনস্থল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্থাপিত সব স্টল, দোকান, মঞ্চ, ব্যানার, লিফলেট, প্রচারপত্র, ফাস্টফুড, কফিশপ, খাবারের দোকান ইত্যাদি প্রস্তুতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার শতভাগ পরিহার করে পুন:ব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ যেমন পাট, কাপড়, কাগজ ইত্যাদি ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহবান জানানো হয়েছে।

প্রতিবছরের মতো এবারেও ২০২৪ সালে প্রকাশিত বইয়ের গুণগতমান ও শৈল্পিক উৎকর্ষের উপর ভিত্তি করে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের পুরস্কার দেয়া হবে।

সেরা বইয়ের জন্য দেওয়া হবে —চিত্তরঞ্জন পুরষ্কার, শৈল্পিকভাবে সেরা বই প্রকাশের জন্য দেওয়া হবে-মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, সেরা শিশুতোষ গ্রন্থ প্রকাশের জন্য দেওয়া হবে -রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার, স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে- কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার।

পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া)। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

অমর একুশে বইমেলায় এবার বেড়েছে আয়তন ও প্রকাশক সংখ্যাও। মোট ৭৮০ টি প্রকাশনা থাকবে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টিসহ মোট ইউনিট থাকবে ১০৮৪টি (গতবছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২টি এবং ইউনিট ছিল ৯৪৬টি)। এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি (গত বছর প্যাভিলয়নের সংখ্যা ছিল ৩৭টি। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। সেখানে প্রায় ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশু চত্বরে মোট প্রতিষ্ঠান ৭৬টি এবং ইউনিট ১২০টি (গত বছর ছিল ৬৮টি এবং ইউনিট ১০৯টি)।

এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে তবে আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানের কারণে গতবারের মেলার থেকে বের হওয়ার পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির গেটের কাছাকাছি জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যাান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট ৪টি প্রবেশ ও বাহির পথ থাকবে।

খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে বিন্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, খাবারের স্টলগুলোকে এবার বিশেষভাবে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে। নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। শিশুচত্বর মন্দির গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে, যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্খিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে।