ঢাকা ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাফ নদীতে আরাকান আর্মির গুলিতে আহত ২ জেলে Logo ঈদে ২০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বাস মালিকদের Logo আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত: ইসি সচিব Logo অবশেষে চলতি মাসেই ব্রাজিলের দায়িত্ব নিচ্ছেন আনচেলত্তি Logo এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবদ্ধ ধর্ষণ, দ্রুত বিচার দাবি Logo লক্ষ্মীপুরে ১২ দেশের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আটক ২ Logo “মুন্সীগঞ্জ ছাত্র আন্দোলন হত্যাকাণ্ড সহ ১৪ মামলার আসামী চাক্কু মিলন গ্রেফতার” Logo পাবনায় নার্সিং শিক্ষার্থীদের ১ দফা দাবি এবং আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস বয়কটের ডাক Logo রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর Logo র‍্যাব পুনর্গঠনে কমিটি গঠন করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অসম চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অসম চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সচিবালয়ে সীমান্ত সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শে‌ষে সাংবা‌দিক‌দের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সীমান্ত-সংক্রান্ত সব ধরনের অসম চুক্তি নিয়ে আসন্ন সীমান্ত সম্মেলনে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের এ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শে‌ষে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবা‌দিক‌দের প্রশ্নের জবা‌বে তি‌নি এ কথা জানিয়েছেন। ভারতের নয়াদিল্লিতে আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৫তম সম্মেলন হবে।

উপদেষ্টা বলেছেন, “২০১১ সালে ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিন বিঘা ও দহগ্রাম করিডোর নিয়ে একটি অসম চুক্তি হয়েছে। মহিষাশন (ভারত)-কুলাউড়া (বাংলাদেশ) আন্তঃদেশীয় রেলপথের কুলাউড়া রেল স্টেশন সীমান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত। আমরা তাদেরকে আমাদের বর্ডারের তিন কিলোমিটার ভিতরে আসতে দেব না। সেখানে সীমান্তের সন্নিকটে কাস্টমসসহ একটা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হবে।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো কাজ করতে হলে দুই পক্ষের অনুমতি নিতে হয়৷ এগুলো একপক্ষে করার নিয়ম নেই৷ একটা মসজিদ বা মন্দির করতে হলে দুই দেশের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন৷ আগামীতে কিছু করতে হলে যেন তারা সম্মতি নেয়, এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে৷

তিনি বলেন, “সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়রা অনেক সময় ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদক তৈরি করে আমাদের দেশে ঢুকিয়ে দেয় ৷ যদিও তারা বলে, ফেন্সিডিলগুলো ওষুধ হিসেবে তৈরি করছে। আসলে এটা মাদক হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।”

বৈঠকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার বন্ধের বিষয়েও আলোচনা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের গণমাধ্যম ও দেশের জনগণ খুবই সোচ্চার।

ভারতে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে সীমান্ত সংক্রান্ত ‌১২টি ইস্যু নি‌য়ে আলোচনা হবে। সেগুলো হলো-

১। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সীমান্ত হত্যা/সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করা।

২। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া/আটক বন্ধ করা।

৩। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লংঘন/অবৈধ পারাপার/অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।

৪। ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ।

৫। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক অবকাঠামো নির্মাণকাজ এবং বিএসএফের বাধায় বন্ধ থাকা বাংলাদেশ পার্শ্বের উন্নয়নমূলক কাজ নিষ্পত্তি করা।

৬। আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে বর্জ্য পানি প্রবাহিত হয়, এরকম চারটি খালে পানি শোধনাগার স্থাপন।

৭। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন, নদী থেকে পানি উত্তোলন, পানি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং রহিমপুর খালের মুখ পুনঃউন্মুক্তকরণ।

৮। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী/অপরাধী কর্তৃক আন্তর্জাতিক সীমানা লংঘন করে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ করা।

৯। বিতর্কিত মুহুরীর চর এলাকায় বর্ডার পিলার স্থাপনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করা।

১০। বাংলাদেশের বর্তমান বিরজমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধ করা।

১১। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা।

১২। পারস্পারিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ।

জনপ্রিয় সংবাদ

নাফ নদীতে আরাকান আর্মির গুলিতে আহত ২ জেলে

অসম চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৮:৪৭:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

বুধবার সচিবালয়ে সীমান্ত সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শে‌ষে সাংবা‌দিক‌দের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সীমান্ত-সংক্রান্ত সব ধরনের অসম চুক্তি নিয়ে আসন্ন সীমান্ত সম্মেলনে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের এ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শে‌ষে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবা‌দিক‌দের প্রশ্নের জবা‌বে তি‌নি এ কথা জানিয়েছেন। ভারতের নয়াদিল্লিতে আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৫তম সম্মেলন হবে।

উপদেষ্টা বলেছেন, “২০১১ সালে ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিন বিঘা ও দহগ্রাম করিডোর নিয়ে একটি অসম চুক্তি হয়েছে। মহিষাশন (ভারত)-কুলাউড়া (বাংলাদেশ) আন্তঃদেশীয় রেলপথের কুলাউড়া রেল স্টেশন সীমান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত। আমরা তাদেরকে আমাদের বর্ডারের তিন কিলোমিটার ভিতরে আসতে দেব না। সেখানে সীমান্তের সন্নিকটে কাস্টমসসহ একটা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হবে।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো কাজ করতে হলে দুই পক্ষের অনুমতি নিতে হয়৷ এগুলো একপক্ষে করার নিয়ম নেই৷ একটা মসজিদ বা মন্দির করতে হলে দুই দেশের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন৷ আগামীতে কিছু করতে হলে যেন তারা সম্মতি নেয়, এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে৷

তিনি বলেন, “সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়রা অনেক সময় ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদক তৈরি করে আমাদের দেশে ঢুকিয়ে দেয় ৷ যদিও তারা বলে, ফেন্সিডিলগুলো ওষুধ হিসেবে তৈরি করছে। আসলে এটা মাদক হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।”

বৈঠকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার বন্ধের বিষয়েও আলোচনা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের গণমাধ্যম ও দেশের জনগণ খুবই সোচ্চার।

ভারতে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে সীমান্ত সংক্রান্ত ‌১২টি ইস্যু নি‌য়ে আলোচনা হবে। সেগুলো হলো-

১। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সীমান্ত হত্যা/সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করা।

২। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া/আটক বন্ধ করা।

৩। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লংঘন/অবৈধ পারাপার/অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।

৪। ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ।

৫। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক অবকাঠামো নির্মাণকাজ এবং বিএসএফের বাধায় বন্ধ থাকা বাংলাদেশ পার্শ্বের উন্নয়নমূলক কাজ নিষ্পত্তি করা।

৬। আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে বর্জ্য পানি প্রবাহিত হয়, এরকম চারটি খালে পানি শোধনাগার স্থাপন।

৭। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন, নদী থেকে পানি উত্তোলন, পানি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং রহিমপুর খালের মুখ পুনঃউন্মুক্তকরণ।

৮। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী/অপরাধী কর্তৃক আন্তর্জাতিক সীমানা লংঘন করে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ করা।

৯। বিতর্কিত মুহুরীর চর এলাকায় বর্ডার পিলার স্থাপনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করা।

১০। বাংলাদেশের বর্তমান বিরজমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধ করা।

১১। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা।

১২। পারস্পারিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ।