ঢাকা ১২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেডিকেলে ভর্তির কোঠা রাখায় ফল বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় ‘অযৌক্তিক কোটাব্যবস্থার নিরসন, এবারের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে আবার ফল প্রকাশের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

মেডিকেলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল রোববার বিকেলে প্রকাশিত হয়েছে। কোটা থাকায় কম নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী জাহিদ আহমেদ বলেছেন, কেউ ৭১ নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাননি অথচ ৪১ নম্বর পেয়ে কীভাবে আরেকজন সেই সুযোগ পান? অবিলম্বে এই ফলাফল বাতিল করতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান জানায়, ‘আজ মেডিকেলের ফলাফলের পর কাতরাচ্ছে শত মেধাবী। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই প্রহসনের তীব্র নিন্দা জানাই। এই ফলাফল দ্রুত বাতিল করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মো. হাসিবুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার থাকার পরও কেন বারবার আন্দোলন করতে হবে? তিনি বলেন, ‘মেডিকেলের এই কোটাপ্রথা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক। অবিলম্বে এই ফলাফল বাতিল করতে হবে। আমরা বৈষম্যমূলক কোটার সম্পূর্ণ নিরসন চাই।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য রিফাত রশিদ বলেন, ‘এখনো কোটাপ্রথা সব জায়গায় রয়েছে। অথচ যে কোটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এত এত লাশ, সেই কোটা যখন আবার ফিরে আসে, তখন গোটা দেশের শিক্ষার্থীরা “ট্রমাটাইজড” হয়ে যান। এই ফলাফল বাতিল করে নতুন করে ফল ঘোষণা করতে হবে। আমরা এ ধরনের ন্যক্কারজনক কোনো ঘটনা আর দেখতে চাই না।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পোষ্য কোটা এখনো রয়ে গেছে উল্লেখ করে রিফাত রশিদ বলেন, ‘অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে। আমরা কোটাধারী ডাক্তার আর দেখতে চাই না।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী নিবেদিতা পাল এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তাঁর এক বন্ধুর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমার এক বন্ধু ফোন করে বলল, একটুর জন্য আমি আর পারলাম না রে। তার মতো আরও অনেকে যখন দেখে যে কেউ ৪১ পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে তখন তাদের অনুভূতিটা কেমন হয় একটাবার ভেবে দেখুন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী এম এ সাঈদ বলেন, ‘জুলাইয়ে কোটাপ্রথাকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। এরপরও কোটায় ভর্তির সুযোগের এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।’

রাত সোয়া ১২টার দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার সকাল ১১টার মধ্যে এই ফলাফল বাতিল না করলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সেখানে একটি সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে বৈষম্য নিরসনের এই যৌক্তিক দাবিতে সবাইকে এক হওয়ারও আহ্বান জানান তাঁরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্চে ড. ইউনুসকে বেইজিং নিতে চায় চীন, পাঠাতে চায় বিশেষ বিমান

মেডিকেলে ভর্তির কোঠা রাখায় ফল বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৭:৩৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় ‘অযৌক্তিক কোটাব্যবস্থার নিরসন, এবারের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে আবার ফল প্রকাশের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

মেডিকেলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল রোববার বিকেলে প্রকাশিত হয়েছে। কোটা থাকায় কম নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী জাহিদ আহমেদ বলেছেন, কেউ ৭১ নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাননি অথচ ৪১ নম্বর পেয়ে কীভাবে আরেকজন সেই সুযোগ পান? অবিলম্বে এই ফলাফল বাতিল করতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান জানায়, ‘আজ মেডিকেলের ফলাফলের পর কাতরাচ্ছে শত মেধাবী। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই প্রহসনের তীব্র নিন্দা জানাই। এই ফলাফল দ্রুত বাতিল করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মো. হাসিবুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার থাকার পরও কেন বারবার আন্দোলন করতে হবে? তিনি বলেন, ‘মেডিকেলের এই কোটাপ্রথা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক। অবিলম্বে এই ফলাফল বাতিল করতে হবে। আমরা বৈষম্যমূলক কোটার সম্পূর্ণ নিরসন চাই।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য রিফাত রশিদ বলেন, ‘এখনো কোটাপ্রথা সব জায়গায় রয়েছে। অথচ যে কোটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এত এত লাশ, সেই কোটা যখন আবার ফিরে আসে, তখন গোটা দেশের শিক্ষার্থীরা “ট্রমাটাইজড” হয়ে যান। এই ফলাফল বাতিল করে নতুন করে ফল ঘোষণা করতে হবে। আমরা এ ধরনের ন্যক্কারজনক কোনো ঘটনা আর দেখতে চাই না।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পোষ্য কোটা এখনো রয়ে গেছে উল্লেখ করে রিফাত রশিদ বলেন, ‘অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে। আমরা কোটাধারী ডাক্তার আর দেখতে চাই না।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী নিবেদিতা পাল এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তাঁর এক বন্ধুর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমার এক বন্ধু ফোন করে বলল, একটুর জন্য আমি আর পারলাম না রে। তার মতো আরও অনেকে যখন দেখে যে কেউ ৪১ পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে তখন তাদের অনুভূতিটা কেমন হয় একটাবার ভেবে দেখুন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী এম এ সাঈদ বলেন, ‘জুলাইয়ে কোটাপ্রথাকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। এরপরও কোটায় ভর্তির সুযোগের এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।’

রাত সোয়া ১২টার দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার সকাল ১১টার মধ্যে এই ফলাফল বাতিল না করলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সেখানে একটি সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে বৈষম্য নিরসনের এই যৌক্তিক দাবিতে সবাইকে এক হওয়ারও আহ্বান জানান তাঁরা।