আজ রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ছয়টায় শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ । আগামী মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় কর্মসূচি শেষ হবে। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, অবরোধ শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ সপ্তাহে বুধ ও বৃহস্পতিবারও কঠোর কর্মসূচির ধারাবাহিকতা থাকবে। তবে শুক্র ও শনিবার কর্মসূচি থাকার সম্ভাবনা কম।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, যতই নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হোক, দলের নীতিনির্ধারকেরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, এখন কর্মসূচিতে ঢিল বা লম্বা বিরতি দিলে সরকার আরও চেপে ধরবে। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তালাই খোলা যায়নি।
যদিও নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশের সংশয়, এভাবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি কত দিন টেনে নেওয়া সম্ভব হবে। সে ধরনের সাংগঠনিক সামর্থ্যই–বা কতটুকু। এ রকম দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যেই আজ দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘটিত ঘটনায় ৬৭টি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মহাসচিবসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে নীতিনির্ধারণী অনেক নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। দলীয় সূত্র জানায়, এ অবস্থায় নেতারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিকল্প দেখছেন না। তবে মাঠের কর্মীদের অবস্থা বোঝার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গত দুই দিনে জেলা ও উপজেলার অনেক নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মাঠপর্যায়ের নেতারা কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখার মত দিয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, এখন পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই যেতে পারছেন না। মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ফেরার হয়ে ঘুরছেন। এই পরিস্থিতিতে সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচিতে যাওয়ারও সুযোগ নেই। আর কর্মসূচিতে ঢিল দিলে আরও চেপে ধরবে সরকার। যদিও নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশের সংশয়, এভাবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি কত দিন টেনে নেওয়া সম্ভব হবে। সে ধরনের সাংগঠনিক সামর্থ্যই–বা কতটুকু। এ রকম দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যেই আজ দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।
গতকাল এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, বিএনপি শূন্য করতে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৬ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন মামলায় ৫৭৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরের দিন ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দেয় বিএনপি। হরতালের পর সারা দেশে তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে দলটি। মাঝে শুক্র ও শনিবার বিরতি দিয়ে রোববার থেকে আবার দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দল ও জোটগুলো।