ঢাকা ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাফ নদীতে আরাকান আর্মির গুলিতে আহত ২ জেলে Logo ঈদে ২০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বাস মালিকদের Logo আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত: ইসি সচিব Logo অবশেষে চলতি মাসেই ব্রাজিলের দায়িত্ব নিচ্ছেন আনচেলত্তি Logo এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবদ্ধ ধর্ষণ, দ্রুত বিচার দাবি Logo লক্ষ্মীপুরে ১২ দেশের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আটক ২ Logo “মুন্সীগঞ্জ ছাত্র আন্দোলন হত্যাকাণ্ড সহ ১৪ মামলার আসামী চাক্কু মিলন গ্রেফতার” Logo পাবনায় নার্সিং শিক্ষার্থীদের ১ দফা দাবি এবং আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস বয়কটের ডাক Logo রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর Logo র‍্যাব পুনর্গঠনে কমিটি গঠন করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‘লাল সন্ত্রাস’চায় ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু লাইভে এসে ‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি মনে করেন, জনগণের সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক সহিংসতা সংঘটিত করতে হবে।

গত কাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

মেঘমল্লা বসুর এমন মন্তব্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। বিক্ষোভ মিছিলটি হলপাড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেঘমাল্লার বসু বলেন, একমাত্র পথ হলো লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক জনগণের সুরক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক সহিংসতা। যতদিন আমরা শুধু প্রার্থনা সভা এবং মিছিল করে যাব, যা কখনো সহিংস হওয়ার ক্ষমতা রাখে না, ততদিন তুমি তোমার সাথীদের সুরক্ষিত করতে পারবে না। মানুষ তোমাকে পছন্দ করবে, কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। আর কেউ আরেকটি ‘উদারপন্থী’ দলের প্রয়োজন অনুভব করে না। কেউ ইচ্ছাকৃত শহীদদের পরোয়া করে না। একমাত্র ভালো ফ্যাসিস্ট হলো মৃত ফ্যাসিস্ট।

তিনি বলেন, এই ডানপন্থী উন্মাদনার মধ্যে তোমাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং তারপর তোমার চরিত্র হনন করা হবে। মাতাল উদারপন্থী ও ‘কেন্দ্রপন্থীরা’, যারা ইতোমধ্যেই তাদের মন-প্রাণ ডানপন্থার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, তারা দাবি করবে এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয় পক্ষই খারাপ। তোমার সাথী খুবই কম। তুমি একটিকেও হারানোর মতো অবস্থায় নেই। আর মানুষ ভেড়ার মতো। তুমি কি সারা জীবন একজন রাখাল হওয়ার জন্য প্রস্তুত?

মেঘমল্লার আরও বলেন, পাবলিক ডেমোনস্ট্রেশন করা বন্ধ করো। কমিটির কার্যক্রম প্রকাশ্যে প্রচার করা বন্ধ করো। আমরা যদি সতর্ক না হই, তাহলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত আর নখ বেরিয়ে আসছে। ট্রল আর মিম করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। এবার এটি গোপনে নিয়ে যাও, কমরেড। অপেক্ষা করো। এর বেশি প্রকাশ্যে বলার প্রয়োজন নেই।

এ প্রসঙ্গে এবি জুবাইর নামের এক ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি দেখলাম সরাসরি লাল সন্ত্রাসের হুমকি দিয়েছেন। এরকম উস্কানির কারণে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কি না আমাদের ভাবা দরকার। নতুন করে কোনো ধরনের সন্ত্রাস, সংঘাত দেখতে চাই না।

প্রসঙ্গত, লাল সন্ত্রাস বা রেড টেরর হলো সোভিয়েত রাশিয়ায় বলশেভিকদের মাধ্যমে পরিচালিত রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং মৃত্যুদণ্ডের একটি প্রচারণা। যা প্রধানত চেকা নামক বলশেভিক গোপন পুলিশের মাধ্যমে করা হতো। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুতে শুরু হয়েছিল এবং ১৯২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ভ্লাদিমির লেনিনের হত্যা চেষ্টা এবং পেট্রোগ্রাদ চেকা নেতা মোইসেই ইউরিতস্কি ও পার্টি সম্পাদক ভি. ভলোদারস্কির সফল হত্যাকাণ্ডের পর, যা বলশেভিক গণপ্রতিহিংসার জন্য প্রতিশোধমূলক বলে অভিযোগ করা হয়। লাল সন্ত্রাস ফরাসি বিপ্লবের ত্রাসের শাসনের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে এবং এর লক্ষ্য ছিল বলশেভিক শক্তির বিপক্ষে রাজনৈতিক বিরোধিতা, প্রতিপক্ষ এবং অন্য যেকোনো ধরনের হুমকি নির্মূল করা।

জনপ্রিয় সংবাদ

নাফ নদীতে আরাকান আর্মির গুলিতে আহত ২ জেলে

‘লাল সন্ত্রাস’চায় ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় ১০:১৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু লাইভে এসে ‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি মনে করেন, জনগণের সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক সহিংসতা সংঘটিত করতে হবে।

গত কাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

মেঘমল্লা বসুর এমন মন্তব্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। বিক্ষোভ মিছিলটি হলপাড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেঘমাল্লার বসু বলেন, একমাত্র পথ হলো লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক জনগণের সুরক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক সহিংসতা। যতদিন আমরা শুধু প্রার্থনা সভা এবং মিছিল করে যাব, যা কখনো সহিংস হওয়ার ক্ষমতা রাখে না, ততদিন তুমি তোমার সাথীদের সুরক্ষিত করতে পারবে না। মানুষ তোমাকে পছন্দ করবে, কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। আর কেউ আরেকটি ‘উদারপন্থী’ দলের প্রয়োজন অনুভব করে না। কেউ ইচ্ছাকৃত শহীদদের পরোয়া করে না। একমাত্র ভালো ফ্যাসিস্ট হলো মৃত ফ্যাসিস্ট।

তিনি বলেন, এই ডানপন্থী উন্মাদনার মধ্যে তোমাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং তারপর তোমার চরিত্র হনন করা হবে। মাতাল উদারপন্থী ও ‘কেন্দ্রপন্থীরা’, যারা ইতোমধ্যেই তাদের মন-প্রাণ ডানপন্থার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, তারা দাবি করবে এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয় পক্ষই খারাপ। তোমার সাথী খুবই কম। তুমি একটিকেও হারানোর মতো অবস্থায় নেই। আর মানুষ ভেড়ার মতো। তুমি কি সারা জীবন একজন রাখাল হওয়ার জন্য প্রস্তুত?

মেঘমল্লার আরও বলেন, পাবলিক ডেমোনস্ট্রেশন করা বন্ধ করো। কমিটির কার্যক্রম প্রকাশ্যে প্রচার করা বন্ধ করো। আমরা যদি সতর্ক না হই, তাহলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত আর নখ বেরিয়ে আসছে। ট্রল আর মিম করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। এবার এটি গোপনে নিয়ে যাও, কমরেড। অপেক্ষা করো। এর বেশি প্রকাশ্যে বলার প্রয়োজন নেই।

এ প্রসঙ্গে এবি জুবাইর নামের এক ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি দেখলাম সরাসরি লাল সন্ত্রাসের হুমকি দিয়েছেন। এরকম উস্কানির কারণে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কি না আমাদের ভাবা দরকার। নতুন করে কোনো ধরনের সন্ত্রাস, সংঘাত দেখতে চাই না।

প্রসঙ্গত, লাল সন্ত্রাস বা রেড টেরর হলো সোভিয়েত রাশিয়ায় বলশেভিকদের মাধ্যমে পরিচালিত রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং মৃত্যুদণ্ডের একটি প্রচারণা। যা প্রধানত চেকা নামক বলশেভিক গোপন পুলিশের মাধ্যমে করা হতো। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুতে শুরু হয়েছিল এবং ১৯২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ভ্লাদিমির লেনিনের হত্যা চেষ্টা এবং পেট্রোগ্রাদ চেকা নেতা মোইসেই ইউরিতস্কি ও পার্টি সম্পাদক ভি. ভলোদারস্কির সফল হত্যাকাণ্ডের পর, যা বলশেভিক গণপ্রতিহিংসার জন্য প্রতিশোধমূলক বলে অভিযোগ করা হয়। লাল সন্ত্রাস ফরাসি বিপ্লবের ত্রাসের শাসনের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে এবং এর লক্ষ্য ছিল বলশেভিক শক্তির বিপক্ষে রাজনৈতিক বিরোধিতা, প্রতিপক্ষ এবং অন্য যেকোনো ধরনের হুমকি নির্মূল করা।