বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মিডিয়ায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হলে, সত্য খবর তুলে ধরলে তখন তাদেরকে হত্যার ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সেসব অডিও ভিডিওগুলো সামাজিক মাধ্যমে আসছে। আমরা সবাইকে বলি আরেকবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন। খারাপ মূলের গাছ কাটা পড়েছে, কিন্তু আগাছা রয়ে গেছে। এগুলো পরিষ্কার করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সন্তানেরা ন্যয়বিচার চায়, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চায়, তারা দুর্নীতি চায় না। সেই বাংলাদেশ এখনো কায়েম হয়নি বলেই সেই বীর যোদ্ধারা আবারও স্লোগান তুলেছে- আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। আমরাও তাদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে একই কথা বলতে চাই। একটি মানবিক বাংলাদেশ, দুর্নীতিমুক্ত ও দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না। শুক্রবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান।
এ সময় বিদেশে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা দেশে ফিরে আসলে তাদের থাকার জন্য কাশিমপুর কারাগারে ভালো ব্যবস্থা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে শফিকুর রহমান বলেন, যদি দেশ ও মাটির প্রতি টান থাকে এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসেন, তাহলে একা পালিয়ে থাকবেন না। একা থাকার দুঃখ অনেক। দেশে আসেন, কাশিমপুর কারাগারে আপনাদের জন্য ভালো ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা দেশের জ্ঞানী, শিক্ষিত, মার্জিত ও অভিজ্ঞ মানুষকে হত্যা করেছে। হাজারো মানুষকে নির্যাতন করেছে। তারা শত শত মানুষকে গুম করেছে, খুন করেছে।মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে। তারা দেশের সম্পদও লুট করেছে। তারা উন্নয়নের বুলি শুনিয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, সাড়ে ১৫ বছর জামায়াতের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, হাজারো নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। ক্রসফায়ারের নামেও হত্যা করা হয়েছে। তাই বৈষম্যহীন, মানবিক, দুর্নীতি দু:শাসনমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না। অর্থাৎ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থামবে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে আমিরে জামায়াত বলেন, আপনারা যখন তখন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করবেন না। পদপদবী না পেয়ে দু’পক্ষের মধ্যে লেগে যাচ্ছে। হত্যার শিকার হচ্ছে দল ও নিরীহ মানুষ। এগুলো বাদ দেন। অনেক হয়েছে, দেশের মানুষ এসব দেখতে দেখতে ক্লান্ত বিরক্ত হয়ে ঘৃণা করে। আমরা সত্যিই যদি এসব ছেড়ে দেই, তাহলে বিবেকবান জনগণ যাকে খুশি ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠাবে। কিন্তু বদ খাসলত যদি ছাড়তে না পারেন তাহলে এই জনগণকে অন্তত বোকা কিংবা দুর্বল ভাববেন না।
সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন, অঞ্চল টিম সদস্য খন্দকার আলী মহসিন, যশোর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসূল, ঝিনাইদহ জেলা আমির আবু বকর মুহাম্মদ আলী আজম, কুষ্টিয়া জেলা আমির মাওলানা অধ্যাপক আবুল হাশেম, মেহেরপুর জেলা আমির মাওলানা তাজউদ্দীন খাঁন, চুয়াডাঙ্গা জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট পারভেজ রাসেল, আব্দুল কাদের প্রমুখ। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।