চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথে প্রথম ট্রেন যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে। মূলত এই রেলপথের নির্মাণকাজ পরিদর্শন ও কোনো ত্রুটি আছে কি না যাচাই করতে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার আসছে একটি ট্রেন। আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন।
এই রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মানুষের ট্রেনে চড়ে রাজধানীতে আসা-যাওয়ার বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন খুব সহজেই পূরণ হচ্ছে।রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টায় আটটি বগি ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে। এতে থাকবেন রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ সময় নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ও বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করা হবে। এতে কোনো ত্রুটি আছে কি না তা যাচাই করবেন তারা।
জানা গেছে, নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হলেও নতুন নির্মিতব্য ৯টি স্টেশনের মধ্যে কয়েকটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। বাকি আছে কিছু লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ।এদিকে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়ায় ঝিনুক আকৃতির আইকনিক স্টেশনের বাকি কাজও এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত এবং যাত্রীদের জন্য ওয়েটিং রুম ও এস্কেলেটরসহ আনুষাঙ্গিক কাজ প্রায় শেষের পথে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ইন্সপেকশন টিম দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ পরিদর্শন করবেন। রোববার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের পথে ট্রেন চলবে। এই ট্রেনে করে তারা এই রেলপথের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়াবে এবং আস্তে আস্তে আসবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন এই নব-নির্মিত রেলপথের ব্রিজগুলোতেও দাঁড়াবে। মূলত উদ্বোধনের আগে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ খুঁটিনাটি সব বিষয় পর্যবেক্ষণ করবেন বাংলাদেশ রেলওয়ের ইন্সপেকশন টিম। সকালে ট্রেনটি ছাড়লেও কক্সবাজার পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে যাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ নভেম্বর কক্সবাজার থেকে প্রধানমন্ত্রী দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন।
সম্ভব্য ট্রেনের সময় নির্ধারণ
ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাত ৯টা ১০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে সকাল সাড়ে ৬টায় কক্সবাজারে পৌঁছাবে। কক্সবাজার থেকে দুপুর ১টায় যাত্রা করে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫১৫ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ভাড়া পড়বে ২,০৩৬ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে সর্বনিম্ন ৫৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭৭৮ টাকা।
চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে
এই কাজটি করছে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের আওতায় ৩৯টি বড় সেতু, ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেল ক্রসিং। হাতি চলাচলের জন্য রয়েছে আন্ডারপাস। দুইটি আন্ডারপাস আছে। এছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে ৯টি স্টেশন। স্টেশনগুলো হলো- দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার।