ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন ১২ বছর কারাভোগের পর অবশেষে কারামুক্ত হয়েছেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
আদালতের মুক্তির আদেশের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিকেল থেকেই ডেসটিনির সদস্যরা কারাগারের ফটকে ভিড় জমাতে থাকেন। মুক্তি পাওয়ার পর রফিকুল আমীন ছাদখোলা প্রাইভেট কারে করে কারাগার ত্যাগ করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সদস্য ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।
এর আগে, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলায় এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনকে ১২ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ৪ হাজার ৫১৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫৪ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
তবে, রফিকুল আমীন গত ১২ বছর ধরে কারাগারে আছেন। রায়ে আদালত বলেছেন, কারাগারে থাকার বয়স সাজা থেকে বাদ যাবে। সেক্ষেত্রে এমডি রফিকুল আমীনের সাজা হয়ে গেছে। এখন তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কি না, তা যাচাই করা হবে।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- ডেসটিনির পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুনুর রশিদ, প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মো. সাইদ-উর রহমান, মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ তৈয়েবুর রহমান ও গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, পরিচালক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ সানী, ফারহা দিবা ও জামসেদ আরা চৌধুরী, প্রফিট শেয়ারিং ডিস্ট্রিবিউটর মো. জসিম উদ্দীন ভূঁইয়া, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ও সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ, ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ এস এম আহসানুল কবির বিপ্লব, জোবায়ের সোহেল ও আব্দুল মান্নান এবং ক্রাউন এক্সিকিউটিভ মোসাদ্দেক আলী খান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসানুল মাহবুব সমাজী বলেন, ১৯ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা রফিকুল আমীন, তার স্ত্রী ফারহা দিবা ও মোহাম্মদ হোসেনকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা হারুনুর রশিদও আদালতে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পলাতক বাকি ১৫ আসামির বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক।
আইনজীবী এহসানুল মাহবুব সমাজী বলেন, তিন জন ১২ বছর ধরে কারাগারে আছেন। রায়ে আদালত বলেছেন, কারাগারে থাকার বয়স সাজা থেকে বাদ যাবে। সেক্ষেত্রে তাদের সাজা হয়ে গেছে।
২০২২ সালের ১২ মে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং বেআইনিভাবে অর্থ পাচারের রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া হারুন অর রশীদসহ ৪৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এদিকে, আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা গাছ বিক্রির নামে ২ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) হিসাবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা এবং পাচারের আরো ২ লাখ ৬ হাজার ডলার রয়েছে।