ঢাকা ১০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় না চরমোনাই পীর

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ৫০৫টি আসনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মধ্যে ১০৫ আসন আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষ, ৩০০ আসন নিম্নকক্ষ এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আমরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিলাম কোনো সংরক্ষিত আসন থাকবে না। তাই নারীদের জন্য সংসদে কোনো সংরক্ষিত আসন চাই না। তাদের জন্য আমরা সাধারণ নির্বাচন চাই।

আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের হোটেল পুস্পদম এ ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের নব নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব কে এম বিল্লাল হোসেনের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কবির, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান ও সহ-সভাপতি মুফতী মোস্তফা কামাল।
মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, নারীদের সমান অধিকারের কথা বলে তাদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা মানে তাদেরকে অপমান করা। নারীদের অযোগ্য মনে করে এটা করা হয়। তাদের অযোগ্য মনে করবেন না। তাদেরকেও লড়তে দিন, সংরক্ষিত আসন আমরা চাই না।

তিনি আরও বলেন, নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন করার অর্থ তাদেরকে দুর্বল করা। কোনো নারী লড়াই করতে পারবে না এমন প্রস্তাব আমরা করলে প্রশ্ন করা যেত। আমি সংরক্ষিত আসন চাই না। আমি চাই সবার সরাসরি ভোটে লড়াই করবে।

তড়িঘড়ি করে নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন, সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন দেওয়া হলে সে নির্বাচন ব্যর্থ হবে। ছাত্র-জনতা ও আমরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাস্তায় ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। আমাদের রক্ত ও ত্যাগের ওপরে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ থেকে হটতে বাধ্য হলেও এখন আবার নব্য ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশকে দখল করেছে। এক চাঁদাবাজ তাড়িয়ে আরেক চাঁদাবাজকে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

চরমোনাই বলেছেন, লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন দিলে সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষ আবারো ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আমরা সব ক্ষেত্রে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাই। ৩০০ বা ৪০০ আসন যাই হোক সব জায়গায় পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। পিআর‌ পদ্ধতির নির্বাচন না হলে কোনো অবস্থাতেই পেশিশক্তি ও কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। পিআর পদ্ধতি হলে কোনো ব্যক্তিকে নয় প্রতীকে ভোট হবে। যে প্রতীক যত ভোট পাবে সে অনুযায়ী তাদের প্রতীক সংসদে আসন পাবে। এমন পদ্ধতি নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে।

ইসলামী আন্দোলন অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যে নির্বাচনে সব ভোটাররা তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। যেখানে পেশিশক্তি থাকবে না। কালো টাকার ছড়াছড়ি থাকবে না। ভোটাররা যাতে তাদের আদর্শ, নীতিবান মনের মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে এমন পরিবেশ চাই।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে বিচার বিভাগে কেউ কেউ খালাস তো দূরের কথা জামিন ও পায়নি। এখন এমন কী হলো? ফ্যাসিস্ট যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় বড় মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল। তার অর্থ হচ্ছে বিচার বিভাগে স্বাধীনতা নাই। এজন্য আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই।

বিচারকরা রায় লিখতে গিয়ে মনের মধ্যে চাকরি থাকা বা না থাকা নিয়ে যাতে ব্রিটিশ সৃষ্টি না করে পদোন্নতি নিয়ে টেনশন না থাকে। বিচারকদের মনে চাকরি থাকা না থাকা ও পদোন্নতি হওয়া না হওয়া টেনশন থাকলে তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার হওয়া সম্ভব হবে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় না চরমোনাই পীর

আপডেট সময় ০৭:৩২:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ৫০৫টি আসনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মধ্যে ১০৫ আসন আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষ, ৩০০ আসন নিম্নকক্ষ এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আমরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিলাম কোনো সংরক্ষিত আসন থাকবে না। তাই নারীদের জন্য সংসদে কোনো সংরক্ষিত আসন চাই না। তাদের জন্য আমরা সাধারণ নির্বাচন চাই।

আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের হোটেল পুস্পদম এ ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের নব নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব কে এম বিল্লাল হোসেনের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কবির, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান ও সহ-সভাপতি মুফতী মোস্তফা কামাল।
মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, নারীদের সমান অধিকারের কথা বলে তাদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা মানে তাদেরকে অপমান করা। নারীদের অযোগ্য মনে করে এটা করা হয়। তাদের অযোগ্য মনে করবেন না। তাদেরকেও লড়তে দিন, সংরক্ষিত আসন আমরা চাই না।

তিনি আরও বলেন, নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন করার অর্থ তাদেরকে দুর্বল করা। কোনো নারী লড়াই করতে পারবে না এমন প্রস্তাব আমরা করলে প্রশ্ন করা যেত। আমি সংরক্ষিত আসন চাই না। আমি চাই সবার সরাসরি ভোটে লড়াই করবে।

তড়িঘড়ি করে নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন, সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন দেওয়া হলে সে নির্বাচন ব্যর্থ হবে। ছাত্র-জনতা ও আমরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাস্তায় ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। আমাদের রক্ত ও ত্যাগের ওপরে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ থেকে হটতে বাধ্য হলেও এখন আবার নব্য ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশকে দখল করেছে। এক চাঁদাবাজ তাড়িয়ে আরেক চাঁদাবাজকে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

চরমোনাই বলেছেন, লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন দিলে সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষ আবারো ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আমরা সব ক্ষেত্রে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাই। ৩০০ বা ৪০০ আসন যাই হোক সব জায়গায় পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। পিআর‌ পদ্ধতির নির্বাচন না হলে কোনো অবস্থাতেই পেশিশক্তি ও কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। পিআর পদ্ধতি হলে কোনো ব্যক্তিকে নয় প্রতীকে ভোট হবে। যে প্রতীক যত ভোট পাবে সে অনুযায়ী তাদের প্রতীক সংসদে আসন পাবে। এমন পদ্ধতি নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে।

ইসলামী আন্দোলন অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যে নির্বাচনে সব ভোটাররা তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। যেখানে পেশিশক্তি থাকবে না। কালো টাকার ছড়াছড়ি থাকবে না। ভোটাররা যাতে তাদের আদর্শ, নীতিবান মনের মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে এমন পরিবেশ চাই।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে বিচার বিভাগে কেউ কেউ খালাস তো দূরের কথা জামিন ও পায়নি। এখন এমন কী হলো? ফ্যাসিস্ট যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় বড় মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল। তার অর্থ হচ্ছে বিচার বিভাগে স্বাধীনতা নাই। এজন্য আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই।

বিচারকরা রায় লিখতে গিয়ে মনের মধ্যে চাকরি থাকা বা না থাকা নিয়ে যাতে ব্রিটিশ সৃষ্টি না করে পদোন্নতি নিয়ে টেনশন না থাকে। বিচারকদের মনে চাকরি থাকা না থাকা ও পদোন্নতি হওয়া না হওয়া টেনশন থাকলে তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার হওয়া সম্ভব হবে না।